আশাপূর্ণা দেবী জীবনী | Ashapurna Devi Biography in Bengali

Rate this post

আশাপূর্ণা দেবী জীবনী: gksolve.in আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে Ashapurna Devi Biography in Bengali. আপনারা যারা আশাপূর্ণা দেবী সম্পর্কে জানতে আগ্রহী আশাপূর্ণা দেবীর জীবনী টি পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।

আশাপূর্ণা দেবী কে ছিলেন? Who is Ashapurna Devi?

আশাপূর্ণা দেবী (৮ জানুয়ারি ১৯০৯ – ১৩ জুলাই ১৯৯৫) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার এবং শিশু সাহিত্যিক। আশাপূর্ণা দেবী বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠিত ও খ্যাত কীর্তি লেখকদের মধ্যে সম্ভবতঃ আশাপূর্ণা দেবীই একমাত্র ব্যক্তিত্ব যিনি বাংলা ছাড়া অন্য কোন ভাষা জানতেন না। রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম হওয়ার জন্য স্কুল কলেজের বিধিবদ্ধ লেখাপড়ার সুযােগও তিনি পান নি। তিনি ছিলেন স্বসৃষ্টি এবং আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখিকা।

আশাপূর্ণা দেবী জীবনী – Ashapurna Devi Biography in Bengali

নামআশাপূর্ণা দেবী
জন্ম8th জানুয়ারি 1909
পিতাহরেন্দ্রনাথ গুপ্ত
মাতাসরলাসুন্দরী দেবী
জন্মস্থানউত্তর কলকাতায় মাতুলালয়
জাতীয়তাভারতীয়
পেশালেখক, ঔপন্যাসিক
মৃত্যু13th জুলাই 1995

আশাপূর্ণা দেবীর জন্ম: Ashapurna Devi’s Birthday

আশাপূর্ণা দেবী ১৯০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।

আশাপূর্ণা দেবীর পিতামাতা ও জন্মস্থান: Ashapurna Devi’s Parents And Birth Place

১৯০৯ খ্রিঃ ৮ ই জানুয়ারী কলকাতায় জন্ম। তাদের আদি নিবাস ছিল হুগলির বেগমপুরে। পিতার নাম হরেন্দ্রনাথ গুপ্ত। কমার্শিয়াল আর্টিস্ট হিসেবে তার সুখ্যাতি ছিল। সম্ভবতঃ পিতার শিল্প প্রতিভাই আশাপূর্ণাকে সাহিত্যচর্চার প্রেরণা জুগিয়েছিল।

আশাপূর্ণা দেবীর শিক্ষাজীবন: Ashapurna Devi’s Educational Life

নিজের বাড়িতে পড়াশােনার যেটুকু সুযােগ পেয়েছিলেন তাতেই সহজাত সাহিত্য প্রতিভা মুকুলিত হয়েছিল। ছােটদের লেখা দিয়েই হয়েছিল হাতেখড়ি এবং শিশু সাহিত্যের চর্চার মাধ্যমেই তিনি সাহিত্য ক্ষেত্রে পদার্পণ করেছিলেন। তেরাে বছর বয়সে তার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়েছিল শিশুসাথী পত্রিকায়। তখনকার দিনের রীতি অনুযায়ী পনের বছর বয়সেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। শশুর ঘরের পরিবেশে স্বামীর ঐকান্তিক আগ্রহে ও উৎসাহে গৃহকর্মের অবসরে সাহিত্য চর্চার সুযােগ করে নেন।

আশাপূর্ণা দেবীর কর্ম জীবন: Ashapurna Devi’s Work Life

গৃহবধূ এবং মা হিসেবে সংসারে তার যে কর্মক্ষেত্র সাহিত্য রচনা কোনদিন সেখানে তার কাজের বাঁধা হয়ে ওঠেনি। আশ্চর্য ছিল তার প্রতিভা। সাহিত্য সৃষ্টির জন্য বিশেষ কোন পরিবেশ বা সময়ের প্রয়ােজন হতাে না। সংসারের কাজের অবসরেই তিনি সৃষ্টি করেছেন অনবদ্য সাহিত্য।

আশাপূর্ণা দেবীর রচনা: Written by Ashapurna Devi

১৯৩৮ খ্রিঃ তাঁর বই প্রথম প্রকাশিত হয়। ছােট ঠাকুরদার কাশী যাত্রা বইটি সরস লেখনীর গুণে এবং ঘরােয়া পরিবেশের বাস্তব চিত্ররূপ অঙ্কনের জন্য ছােটদের মন জয় করেছিল।

এরপর থেকেই বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় অনিয়মিত রচনা প্রকাশ নিয়মিত হয়ে ওঠে। তার লেখাও চলতে থাকে বিরামহীন গতিতে। ১৯৪৪ খ্রিঃ আশাপূর্ণার প্রথম উপন্যাস প্রেম ও প্রয়ােজন প্রকাশিত হয়। মধ্যবিত্ত পরিবারের নারীপুরুষের চাওয়া পাওয়া, মানসিক দ্বন্দ্ব – সংঘাত প্রেম – বিরহ সেই সঙ্গে সমসাময়িক সামাজিক পটভূমি, প্রয়ােজন – অপ্রয়ােজন — এই ছিল আশাপূর্ণার সাহিত্যের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।

অন্তঃপুরে থেকেই মেয়েদের বহির্মুখী জীবন তিনি আশ্চর্য দক্ষতায় চিত্রায়িত করেছেন। আধুনিক সমাজের যথাযথ ভূমিকা নিয়েই তার সাহিত্যে উপস্থিত হয়েছে। আধুনিক মেয়েদের কথা তিনি বলেছেন, তাঁদের চাহিদা ও ত্যাগের সব খবরই তিনি রাখতেন। তবু আধুনিকতার বিলাসিতা তার সাহিত্যে কখনাে প্রশ্রয় পায়নি। যা কিছু রুচিহীন, বিকৃত তার প্রতি তার অবজ্ঞা ও ব্যঙ্গ প্রকাশ পেয়েছে। তবে সহানুভূতি ও সহমর্মিতা কখনাে বিসর্জন দেননি।

গােটা নারী সমাজের আশা আকাঙক্ষা দুঃখবেদনার কথা তিনি অকপটে সহজ সরল ভাষায় ও ভঙ্গিতে প্রকাশ করেছেন। পুরুষদের মনের দ্বন্দ্ব – সংঘাতও তিনি যথাযথ রূপে প্রকাশ করতে পেরেছেন। আশাপূর্ণার সাহিত্য সৃষ্টির সার্থকতা এখানেই। অসংখ্য গল্প ও উপন্যাস সারা জীবনে তিনি লিখেছেন। কোন লেখা তার অনাদৃত হয়নি। তার লেখা বাঙালী মেয়েদের উজ্জীবিত করেছে। আশাপূর্ণার সার্থক ট্রিলজি প্রথম প্রতিশ্রুতি, সুবর্ণলতা, বকুলকথা

আশাপূর্ণা দেবীর পুরস্কার ও সম্মান: Ashapurna Devi’s Awards And Honors

প্রথম প্রতিশ্রুতির জন্য ১৯৭১ খ্রিঃ তিনি দেশের সর্বোচ্চ জ্ঞানপীঠ সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। দীর্ঘ সত্তর বছরের জীবনে তিনি অকাতরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখা দিয়েছেন। লেখার প্রার্থীদের তিনি কখনােবিমুখ করতেন না। সারাজীবনে রচনা করেছেন প্রায় দুশাে উপন্যাস। ছােটগল্প সংকলন ও ছােটদের বই নিয়ে গ্রন্থ সংখ্যা সত্তরের ও বেশি। বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় তার ষাটটিরও বেশি গ্রন্থ অনূদিত হয়েছে। সাহিত্যকৃতির জন্য রবীন্দ্রপুরস্কার, সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি – লিট উপাধি পেয়েছেন।

আশাপূর্ণা দেবীর মৃত্যু: Ashapurna Devi’s Death

১৯৯৫ খ্রিঃ ১৩ ই জুলাই এই অসামান্য লেখকের জীবনাবসান হয়।

Leave a Comment