অলিন্দ যুদ্ধ কি? বিনয় বাদল দীনেশ স্মরণীয় কেন?
ভূমিকা-1920 ও 1930 এর দশকে বাংলার বিপ্লবী আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিল বিনয় বাদল ও দীনেশের নেতৃত্বে রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান। এই তিনজন বিপ্লবী ছিলেন হেমচন্দ্র ঘোষ প্রতিষ্ঠা বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স দলের মেদিনীপুর শাখার সদস্য।
রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান: বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স দলের সক্রিয় সদস্য বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত 1930 খ্রিস্টাব্দের 8ই ডিসেম্বর ইউরোপীয় পোশাকে সজ্জিত হয়ে বাংলায় ব্রিটিশ শাসনের মূল কেন্দ্র রাইটার্স বিল্ডিং এ প্রবেশ করেন এবং সেখানে কারা বিভাগের অত্যাচারী অধিকর্তা ইন্সপেক্টর জেনারেল সিম্পসন ও আরো এক উচ্চপদস্থ ব্রিটিশ কর্মচারী ক্রেগকে গুলি করে হত্যা করেন। এই ঘটনা রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান নামে পরিচিত।
অলিন্দ যুদ্ধ: ইন্সপেক্টর জেনারেল সিম্পসন ও ক্রেগকে হত্যা করার পর ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনী রাইটার্স বিল্ডিং ঘিরে ফেললে রাইডার্স বিল্ডিং এর অলিন্দে পুলিশের সঙ্গে এই তিন বিপ্লবীর এক অসম লড়াই শুরু হয়। এই ঘটনা অলিন্দ যুদ্ধ নামে পরিচিত।
অলিন্দ যুদ্ধের ফলাফল: ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ অসম লড়াইয়ের পর পালানো অসম্ভব বুঝে তিন বিপ্লবীই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বাদলের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বিনয় ও দীনেশকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন পর হাসপাতালে বিনয়ের মৃত্যু হয় এবং দীনেশ সুস্থ হলে 1931 খ্রীঃ 7ই জুলাই তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
মূল্যায়ন: বিনয় বাদল ও দীনেশের এই দুঃসাহসিক রাইডার্স বিল্ডিং অভিযান ব্রিটিশ শাসকদের সন্ত্রস্ত ও উদ্বিগ্ন করে তোলে। তাঁদের এই মহান আত্মত্যাগ ও আত্ম বলিদান বাংলার তরুণদের মনে বিপ্লবী আন্দোলনে যোগদানের অনুপ্রেরণা যোগায় এবং বাংলার যুবসমাজকে এক নতুন পথের দিশা দেখায়। এই তিন মহান ও দুঃসাহসিক বিপ্লবীকে স্মরণ রাখার উদ্দেশ্যে তাদের নামানুসারে কলকাতার ডালহৌসি স্কোয়ারের নামকরণ করা হয়েছে বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ বা বি-বা-দী বাগ।