ভিকাজী রুস্তম কামা জীবনী | মাদাম কামা | Bhikaiji Rustom Cama Biography in Bengali: Gksolve.in আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে Bhikaiji Rustom Cama Biography in Bengali. আপনারা যারা ভিকাজী রুস্তম কামা (মাদাম কামা) সম্পর্কে জানতে আগ্রহী ভিকাজী রুস্তম কামা র জীবনী টি পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন.
ভিকাজী রুস্তম কামা (মাদাম কামা) কে ছিলেন? Who is Bhikaiji Rustom Cama?
মাদাম কামা (২৪ সেপ্টেম্বর, ১৮৬১ – ১৩ আগস্ট, ১৯৩৬) বা ভিকাজী রুস্তম কামা ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তাকে ভারতীয় বিপ্লববাদের জননী বলা হয়।
ভিকাজী রুস্তম কামা জীবনী | মাদাম কামা | Bhikaiji Rustom Cama Biography in Bengali
নাম | ভিকাজী রুস্তম কামা (মাদাম কামা) |
জন্ম | 24 সেপ্টেম্বর 1861 |
পিতা | সোরাবজি ফ্রামজি প্যাটেল |
মাতা | জাজিবাই সোরাবজি প্যাটেল |
জন্মস্থান | মুম্বই, ব্রিটিশ ভারত |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবী |
মৃত্যু | 13 আগস্ট 1936 (বয়স 74) |
ভিকাজী রুস্তম কামা র জন্ম: Bhikaiji Rustom Cama’s Birthday
ভিকাজী রুস্তম কামা 24 সেপ্টেম্বর 1861 জন্মগ্রহণ করেন।
ভিকাজী রুস্তম কামা র কর্ম জীবন: Bhikaiji Rustom Cama’s Work Life
তখন এদেশের শাসন ক্ষমতা বিদেশী ইংরাজের করায়ত্ত। পরাধীন ভারতবাসী তাদের পদানত দাস মাত্র। পরাধীনতার লাঞ্ছনা আর অপমান মানুষের মনে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তোলে। ভারতবাসীর মনেও ততদিনে জেগে উঠেছে নিজের দেশে নিজের অধিকার ফিরে পাবার চিন্তা। কিন্তু সব ক্ষমতা তো বিদেশীর হাতে। অধিকার কেউ কি সহজে ছাড়তে চায়? অনেক কলাকৌশলে ওরা এই দেশ শাসনের অধিকার লাভ করেছে।
একদিন এসেছিল বণিকের বেশে ব্যবসা করতে, তারপর রাতারাতি একেবারে শাসনক্ষমতা দখল করে বসল ৷ সেই অধিকার তারা কেন সহজে ছাড়তে চাইবে ? কিন্তু ততদিনে ভারবাসীও ভাবতে শিখেছে, বুঝতে শিখেছে – নিজের দেশে নিজেদের অধিকার হারিয়ে পরাধীন থাকা পাপ। ওটা হল মাতৃভূমির বন্দিদশা। ওই বন্দিদশা থেকে দেশকে মুক্ত করতে না পারলে নেই দেশবাসীর মুক্তি। হবে না দেশের উন্নতি। দেখতে দেখতে একদল স্বাধীনতাকামী মানুষ ইংরাজ বিতাড়নের কলাকৌশল ও পরিকল্পনা নিয়ে মেতে উঠল গোপনে।
এই সময়ে আর একদল লোকও ছিল যারা রাজভাষা ইংরাজি শিখে ইংরাজদের অনুকরণ করার চেষ্টা করে নিজেদের ইংরাজ সাহেব ভেবে আনন্দ পেত। ইংরাজদের খুশি করাই ছিল তাদের জীবনের একমাত্র ধ্যানজ্ঞান। আসলে তারাই ছিল দেশের প্রধান শত্রু। এমনি একটি ইংরাজভক্ত দেশীয় পরিবারেই বিয়ে হয়েছিল মহারাষ্ট্রের মেয়ে রুস্তম ভিকাজীর। বিয়ে হল বটে কিন্তু স্বামীর ঘর তিনি করতে পারলেন না। রাজভক্ত স্বামী মিঃ কে আর কামার চিন্তাভাবনার সঙ্গে তিনি নিজের চিন্তা মেলাতে পারলেন না।
ছেলেবেলা থেকেই তার বুকে ছিল পরাধীনতার জ্বালা, মনে ছিল গ্লানি। তার চিন্ত ! জুড়ে ছিল মাতৃভূমির বন্ধন মুক্তির ভাবনা। স্বামীর ঘর তাই করতে পারলেন না রুস্তমজী ভিকাজী বিয়ের পর যার নাম হয়েছিল মাদাম কামা। সংসার ছেড়ে পথে নেমে এসে মাদা – কামা ভারতকে শৃঙ্খলমুক্ত করার ব্রতকেই জীবনের আদর্শ করে নিলেন। পরাধীন দেশবাসীর দুঃসহ অবস্থা দেখে তিনি নিরন্তর মর্মযাতনা ভোগ করতেন। নিরুপায় আক্রোশে অস্থির হয়ে উঠতেন, কিন্তু কাজে অগ্রসর হবার পথ ছিল বন্ধ।
এতদিনে পথ তাঁকে নিজেই যেন কাছে ডেকে নিল। মাদাম কামা সশস্ত্র বিপ্লবের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে উঠলেন। তিনি বুঝতে পারলেন ইংরাজ সাধারণ আঘাতে বিচলিত হবার জাতি নয়। তার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে গেলে চাই শক্তি সঞ্চয়, শক্ত আঘাত, আর সুপরিকল্পিত প্রস্তুতির মাধ্যমেই তেমন আঘাত সম্ভব। ততদিনে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে সশস্ত্র বিপ্লবী দলের তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে। এদিকে সেদিকে ঘটছে বিক্ষিপ্ত ঘটনা। মারা পড়ছে দু – চারজন করে ক্ষমতাশালী ইংরাজ।
সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে বিপ্লবীদের সবচেয়ে বড় অসুবিধা ছিল অস্ত্রশস্ত্রের। তার অভাবে তাদের কাজ পরিকল্পনা মত অগ্রসর হচ্ছিল না। মাদাম কামা দলের বাইরে থেকেই বিপ্লবীদের এই অসুবিধার কথা বুঝতে পারলেন। মাদাম কামা স্থির করলেন অস্ত্র আনাতে হবে বাইরে থেকে। এই সুযোগ নিতে হবে ইংরাজের শত্রুদেশ গুলোর কাছ থেকে। মাদাম কামার চিন্তাভাবন ৷ যখন একটা বৃহৎ সংগঠনের পরিকল্পনা হয়ে তার সঙ্কল্পকে সুদৃঢ় করে তুলছে সেই সময়েই হঠাৎ তাঁর শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ল।
সুযোগ বুঝে দেশমাতৃকার এই একান্ত সেবিকা চিকিৎসার উদ্দেশ্য নিয়ে লন্ডনে এসে পৌঁছলেন। বিদেশে এসেই বিরাট কর্মক্ষেত্র পেয়ে গেলেন মাদাম কামা। প্রথমেই তিনি সাম্রাজ্যবাদী ইংরাজের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের কাজে ব্রতী হলেন। সেই সঙ্গে চলল ভারত – প্রেমিক সগঠনের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগের কাজ। বিদেশ থেকে দেশের মুক্তিকামী বিপ্লবীদের যাতে সব রকম সাহায্য ও সহযোগিতা সম্ভব হয় প্রধানতঃ সেই বিষয়েই চলল মাদাম কামার আন্তরিক প্রয়াস। এই সময় ভারত থেকে পলাতক অনেক বিপ্লবী ও দেশকর্মীর সঙ্গেই তার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ঘটে।
এঁদের সকলের কাছেই মাদাম কামা হয়ে উঠেছিলেন প্রেরণার উৎস। বাংলার বিপ্লবী দলের অন্যতম সংগঠক ছিলেন বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ তাঁর ভাই বারীন ঘোষ প্রমুখ। তাদের চেষ্টা চলছিল বোমা তৈরির। কিন্তু কে শেখাবে তাদের বোমা তৈরির কলা কৌশল ? হেমচন্দ্র কানুনগোকে ইংলন্ডে পাঠানো হয়েছিল বোমা তৈরির কৌশল শেখার জন্য। মাদাম কামা তাঁর জন্য বিলেতে একটি লেবরেটরি তৈরি করে দিলেন, বিস্ফোরক পদার্থ তৈরিতে দক্ষ একজন বিদেশীকেও নিযুক্ত করে দিলেন প্রশিক্ষণের জন্য।
ইতিমধ্যে মাদাম কামার উদ্যোগে কয়েকটি পত্রপত্রিকার প্রকাশ সম্ভব হয়েছে। তাদের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতার সপক্ষে চলেছে জোর প্রচার। বন্দেমাতরম নামে একটি সমিতিও এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। কিছুকাল পরেই জার্মানীর স্টুটগার্ট শহরে আন্তর্জাতিক সমাজতন্ত্রী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সময়টা ১৯০৭ খ্রিঃ ১৮ ই আগস্ট। এই সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিরূপে যোগ দিলেন মাদাম কামা। পুণ্যভূমি ভারত বিদেশী ইংরাজের শাসনমুক্ত হবে।
স্বাধীন ভারতের মুক্ত আকাশে উড্ডীন হবে জাতির স্বাধীনতার প্রতীক — একটি জাতীয় পতাকা, মাদাম কামা মনের নিভৃতে এই স্বপ্ন লালন করে আসছেন আবাল্য। এবারে সেই স্বপ্নেরই সার্থক রূপায়ন দেখা গেল সভাপ্রাঙ্গণে তার হাতে। সেই সময়ে ভারতের কোন রাজনৈতিক দলের পতাকা ছিল না। বীর সাভারকর এ বিষয়ে গভীর চিন্তার পর ত্রিবর্ণরঞ্জিত তারকা চিহ্নিত পতাকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। কঠোর পরিশ্রমে তার পরিকল্পনার রূপদান করেন বিপ্লবী হেমচন্দ্র দাস (কানুনগো)।
বীর সভারকরের নির্দেশ মত মাদাম কামা ও সর্দার সিং রানা ভারতীয় প্রতিনিধি রূপে সম্মেলনে যোগদান করেন। মাদাম কামা ভাষণ দানকালে উক্ত পতাকা শ্রোতাদের সম্মুখে তুলে ধরে বলিষ্ঠ কণ্ঠে বলেন, “This flag of Indian Independence . Behold it is born. It is already sanctified by the blood of martyred Indian youths. I call upon you gentlemen to rise and salute this flag of independence . In the name of this flag I appeal to you all lovers of freedom all over the Continent to co operate with this flag in freeing one fifth of the human rance.’
অন্যান্য দেশের পতাকার পাশাপাশি উত্তোলিত হল ভারতের একটি ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা। অভিবাদন জানানো হল এই জাতীয় পতাকাকে। সেই প্রথম উদ্ভাবিত হল ভারতের জাতীয় পতাকার রূপ। বর্তমানের আশোকচক্র লাঞ্ছিত ত্রিবর্ণ পতাকা মাদাম কামা উত্তোলিত পতাকার পরিকল্পনার ভিত্তিতেই রূপায়িত। মাদাম কামার বিপ্লববাদ প্রচার এ সময়ে কেবল ইংলন্ডেই সীমাবদ্ধ ছিল না। আমেরিকা গিয়েও তিনি সেখানকার ভারতীয়দের মধ্যে প্রচারের কাজ করেন। মাদাম কামার কার্যকলাপ ব্রিটিশ সরকার এতকাল ধৈর্যের সঙ্গে লক্ষ করছিল।
১৯০৯ খ্রিঃ সরকার তাঁকে ইংরাজের রাজত্ব থেকে বহিষ্কারের আদেশ ঘোষণা করে। মাদাম কামাকে বাধ্য হয়ে লন্ডনের বাস উঠিয়ে ফরাসী রাজ্যের প্যারিসে চলে আসতে হল। ভারতে এবং ভারতের বাইরে ততদিনে বিপ্লবীদের কাজ জোরদার হয়ে উঠেছে। ভারতের বিপ্লবীরা মাদাম কামার কাছ থেকে গোপনে পেতে লাগলেন অস্ত্রশস্ত্রের জোগান, বিভিন্ন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা। মহারাষ্ট্রের বীপ্লবী বীর সাভারকর এই সময়ে লন্ডনে বাস করছিলেন। একটি হত্যাকান্ডের ব্যাপারে পুলিশ তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল।
মাদাম কামা তাকে প্যারিসে নিজের কাছে এনে রাখেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ একদিন লন্ডন পুলিশের হাতে তাকে বন্দি হতে হয়। এর পরের ঘটনা বড়ই চমকপ্রদ। বিচারের উদ্দেশ্যে ধৃত সাভারকরকে ভারতে চালান করা হল জাহাজে। সাভারকর গোপনে খবর পাঠালেন মাদাম কামাকে যেন পথের কোথাও তিনি এমন ব্যবস্থা করে রাখেন যাতে জাহাজ থেকে পালিয়ে তিনি ইংরাজের নাগালের বাইরে পৌঁছতে পারেন। বন্দি সাভারকরকে নিয়ে ব্রিটিশ জাহাজ লন্ডন ত্যাগ কবে ফ্রান্সের মার্সাই বন্দরের কাছে এলে রক্ষীবাহিনীর চোখে ধুলো দিয়ে বীর সাভারকর জাহাজের পোর্টহোল থেকে সমুদ্রে ঝাপিয়ে পড়েন।
কিন্তু সাঁতরে ফরাসী উপকূলে ওঠার পর তিনি ফরসী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে গেলেন। তারা তাকে ইংরাজ বাহিনীর হাতে তুলে দিল। মাদাম কামা পূর্বের সংবাদ অনুযায়ী সাভারকরকে রক্ষার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু বন্দরে পৌঁছতে তার একটু বিলম্ব হয়ে গিয়েছিল। তিনি যখন সশস্ত্র সঙ্গীদের নিয়ে পৌঁছান, তখন দেখতে পান বন্দি সাভারকরকে নিয়ে পুলিশের লোক জাহাজে উঠছে। মাদাম কামা দমবার পাত্রী ছিলেন না।
বিদেশের মাটিতে রক্ষা করতে না পারলেও স্বদেশে ইংরাজের জেল থেকে সাভারকরকে ছাড়িয়ে আনার সব রকম চেষ্টাই তিনি করেছিলেন। সাভারকরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ভারতের নাসিকের ইংরাজ ম্যাজিস্ট্রেটকে যে পিস্তলটি দিয়ে হত্যা করা হয়, সেই ব্রাউনিং পিস্তলটি সাভারকর ইংলন্ড থেকে পাঠিয়েছিলেন। সেই অভিযোগ খন্ডনের জন্যও মাদাম কামা চেষ্টার ত্রুটি করেন নি। প্যারিসের ব্রিটিশ কনসাল জেনারেলকে তিনি জানিয়েছিলেন, ম্যাজিস্ট্রেটকে হত্যার পর নাসিকে বিপ্লবীরা যে পিস্তলটি ফেলে যায় সেটি সাভারকর পাঠাননি, পাঠিয়েছিলেন তিনি নিজে।
কিন্তু আদালত এ সত্ত্বেও সাভারকরের বিচার করেছিল এবং তাঁর দীপান্তরবাসের দন্ড হয়েছিল। এরপর থেকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এই বীরাঙ্গনা যেন দ্বিগুণ উৎসাহে কাজে ঝাপিয়ে পড়লেন। তাঁর দুঃসাহস যেন আরও বেড়ে গেল। ১৯১৪ খ্রিঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কাল। যুদ্ধের সময় ফরাসীবন্দরে ইংরাজ পক্ষের বহু ভারতীয় সৈন্য ছাউনি ফেলে অস্থায়ীভাবে বাস করছিল। মাদাম কামা গোপনে সৈন্যদের ছাউনিতে গিয়ে ভারতীয় সেনাদের ভারতের শত্রু ইংরাজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহের পরামর্শ দিতে থাকেন। এ
ই প্রচারের ফল ফলতেও বিলম্ব হল না। সৈন্যদের মধ্যে উত্তেজনা ও আলোড়ন দেখা দিল। মাদাম কামার এই গোপন কাজের খবর ইংরাজ সরকারের কানে পৌঁছতে সময় লাগল না। ফরাসী সরকারকে তারা অনুরোধ করল মাদাম কামাকে বন্দি করে ইংরাজের হাতে সমর্পণ করতে। ফরাসী সরকার মাদাম কামাকে বন্দি করলেন বটে, কিন্তু তাঁকে ভারতে পাঠালেন না। নিজেদের ভিটি নামক দুর্গে তাঁকে আটক করে রাখলেন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের কর্মী ভারতীয় নারীর এই প্রথম কারাবাস। পরবর্তিকালে বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী নারী বন্দি হয়েছেন, দেশের কাজে জীবনোৎসর্গ করেছেন।
নিঃসন্দেহে তাদের প্রেরণার উৎস ছিল মাদাম কামার ত্যাগ ও দেশভক্তির আদর্শ। কারাগারে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়লে ফরাসী সরকার মাদাম কামাকে মুক্তি দেন। মুক্ত হয়ে বাইরে এসেই দুর্জয় এই বীরাঙ্গনা আবার পূর্ণ উদ্যমে কর্মযজ্ঞে ঝাপিয়ে পড়েন। তিনি ইংরাজের প্রতিপক্ষ সমাজতান্ত্রিক দেশ রাশিয়াব সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করলেন। রাশিয়ার সরকারকে তিনি জানালেন, ভাবতের জনসাধারণ বিপ্লবের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। উপযুক্ত পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র পেলেই তারা ইংরাজকে ভারত ছাড়তে বাধ্য করতে পারেন। এই বিপ্লবী নেত্রীর আবেদনে রাশিয়ার বিপ্লবী নেতা লেনিন মাদাম কামাকে রাশিয়া যাবার আমন্ত্রণ জানালেন।
ভিকাজী রুস্তম কামা র মৃত্যু: Bhikaiji Rustom Cama’s Death
কিন্তু ততদিনে বিলম্ব হয়ে গেছে। মাদাম কামার শরীর তখন ভীষণভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। রাশিয়া আর তার যাওয়া হল না। অনেক কষ্টে সরকারী অনুমতি সংগ্রহ করে প্রায় ত্রিশ বছর পর পঁচাত্তর বছর বয়সে ১৯৩৬ খ্রিঃ আগস্ট মাসে ভারতমাতার অগ্নিকন্যা মাদাম কামা স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। এরপর বেশিদিন তিনি বাঁচেন নি। 13 আগস্ট 1936 (বয়স 74) ভিকাজী রুস্তম কামা এর জীবনাবসান হয়।জীবনের সর্বস্ব দিয়ে বিদেশের মাটিতে থেকে যে অক্লান্ত সংগ্রাম তিনি সুদীর্ঘকাল করে গেছেন তার সার্থক পরিণতি তিনি দেখে যেতে পারেন নি। কিন্তু তার জ্বলন্ত দেশপ্রেম, অতুল আত্মত্যাগ আজও পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করাহয়। করা হবে আগামী দিনেও।