জনঘনত্ব অনুসারে ভারতের শ্রেণীবিভাগ কর – জনঘনত্ব অনুযায়ী ভারতের আঞ্চলিক বিভাগ: ভারতের জনঘনত্ব সর্বত্র সমান নয়। বর্তমানে এদেশের গড় জনঘনত্ব 382 জন/বর্গকিমি হলেও কোন কোন অঞ্চলের জনঘনত্ব 1000 জনেরও বেশি। আবার কোথাও কোথাও জনঘনত্ব 100 জনেরও কম। জনঘনত্বের এই তারতম্য অনুসারে ভারতকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা হয়।
1)অত্যধিক জনঘনত্ব পূর্ণ অঞ্চল: এই অঞ্চলে প্রতি বর্গ কিমিতে 1000 জনেরও বেশি মানুষ বসবাস করে। প্রধানত দিল্লি, চন্ডিগড়, পুদুচেরি, দমন ও দিউ, লাক্ষাদ্বীপ- এই পাঁচটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য এই অঞ্চলের অন্তর্গত। এখানকার কৃষি,শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি অত্যধিক জনঘনত্বের কারণ।
2)অধিক জনঘনত্ব যুক্ত অঞ্চল: উত্তরপ্রদেশ,কেরালা, তামিলনাড়ু ইত্যাদি রাজ্যগুলি এই অঞ্চলের অন্তর্গত। এই অঞ্চলে প্রতি বর্গ কিমিতে 501 থেকে 1000 জন মানুষ বসবাস করেন। প্রধানত উর্বর পলিমাটি, উন্নত জলসেচ ব্যবস্থা, কৃষিভিত্তিক শিল্পের প্রাচুর্য্য, খনিজ সম্পদের প্রাচুর্য্য এবং কৃষি ক্ষেত্র ও শিল্প কেন্দ্রগুলিতে কর্মসংস্থানের সুযোগের কারনে এই অঞ্চল অধিক জনঘনত্ব পূর্ণ।
3)মধ্যম জনঘনত্ব যুক্ত অঞ্চল: পাঞ্জাব, হরিয়ানা,মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খন্ড,ত্রিপুরা, গোয়া, অসম প্রভৃতি রাজ্য এই অঞ্চলের অন্তর্গত। এই অঞ্চলে প্রতি বর্গ কিমিতে 251 থেকে 500 জন মানুষ বসবাস করেন। প্রধানত খনিজ সম্পদের প্রাপ্তি, কৃষি ও শিল্পের মধ্যম উন্নতি, বিস্তীর্ণ জলাভূমি ও বন্ধুর ভূ-প্রকৃতি উক্ত রাজ্যগুলির মধ্যম জনঘনত্বের কারণ।
4)বিরল জনঘনত্ব যুক্ত অঞ্চল: মেঘালয়, মনিপুর, নাগাল্যান্ড, মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড়, উড়িষ্যা, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান ইত্যাদি রাজ্যগুলি বিরল জনঘনত্ব পূর্ণ অঞ্চলের অন্তর্গত। এই রাজ্যগুলিতে প্রতি বর্গ কিমিতে 101 থেকে 250 জন মানুষ বসবাস করেন। প্রধানত বন্ধুর ভূ-প্রকৃতি, প্রতিকূল জলবায়ু, অনুর্বর মৃত্তিকা, কৃষি ও শিল্পের অনুন্নতি, উন্নত পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাব ইত্যাদি কারণে জনঘনত্বের দিক থেকে বিরল প্রকৃতির।
5)অতি বিরল জনঘনত্ব যুক্ত অঞ্চল: অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম, জম্মু,কাশ্মীর, লাদাখ, মিজোরাম, হিমাচল প্রদেশ এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এই অঞ্চলের অন্তর্গত। এই অঞ্চলের জনঘনত্ব প্রতি বর্গ কিমিতে 100 জনের কম। প্রধানত পার্বত্য ভূপ্রকৃতি, প্রতিকূল জলবায়ু, বনভূমির অবস্থান, অনুর্বর মৃত্তিকা, অনুন্নত কৃষি পদ্ধতি, শিল্পের অভাব ইত্যাদি কারণে এই অঞ্চলের জনঘনত্ব কম হয়।