দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার এর জীবন পরিচয় | Dakshinaranjan Mitra Majumder Biography In Bengali

Rate this post

Dakshinaranjan Mitra Majumder Biography In Bengali:দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার এর জীবন পরিচয়

দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার এর জন্ম স্থান ও পিতামাতা: Birth Place And Parents Of Dakshinaranjan Mitra Majumder

দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার বাংলা শিশুসাহিত্যে রূপকথার যাদুকর আখ্যায় ভূষিত দক্ষিণারঞ্জনের জন্ম ঢাকার উলাইল গ্রামে এক সভ্রান্ত পরিবারে। তার পিতার নাম রমদারঞ্জন মিত্র মজুমদার।

দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার এর প্রথম জীবন: Dakshinaranjan Mitra Majumder’s Early Life

গ্রামের স্কুলে পড়া শেষ করে তিনি পিতার কর্মস্থল মুর্শিদাবাদে চলে আসেন। এখানে বাসকালেই। তিনি প্রদীপ ও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পত্রিকায় প্রবন্ধ লেখা আরম্ভ করেন। পরে বন্ধুদের সঙ্গে মিলে সুধা নামে একটি পত্রিকাও প্রকাশ করেন। মুর্শিদাবাদে পাঁচ বছর থাকার পর দক্ষিণারঞ্জণ ময়মনসিংহে চলে আসেন। এখানে ছিল তার পিসীমার বাড়ি। তার বিশাল জমিদারি তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পড়ে দক্ষিণারঞ্জনের ওপরে।

দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার এর কর্ম জীবন: Dakshinaranjan Mitra Majumder’s Work Life

জমিদারি কাজের সুযােগেই পল্লীপ্রকৃতি ও গ্রামের সাধারণ মানুষের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যলাভের সুযােগ ঘটে। বাংলার পল্লীগ্রামে প্রচলিত লােক – কাহিনী, ছড়া গান ইত্যাদির সহজ সরল কথা ও সুরের প্রতি তার আগ্রহ জন্মে।

তিনি লক্ষ করেন মানুষের মুখে মুখে ফেরে যে সব গল্প – কথা তার আকর্ষণ এমনই যে প্রতি সন্ধ্যায় ঘরে ঘরে বয়ােবৃদ্ধদের ঘিরে বসে আসর, সেখানে মন্ত্রমুগ্ধের মত সকলে উপভােগ করে রূপকাহিনীগুলি। এসব লােক – সাহিত্যেরকোন লিখিত রূপ নেই। মানুষের সঙ্গে সঙ্গে কালের স্রোতে সেসব কাহিনীও হারিয়ে যায়।

দক্ষিণারঞ্জন বাংলার লুপ্তপ্রায় লােক – সাহিত্য সংগ্রহের কাজে উদ্বুদ্ধ হন। দীর্ঘ দশ বছর ধরে ঘুরে ঘুরে তিনি লােকসাহিত্য সংগ্রহ ও গবেষণার কাজ করেন। তার এই সংগ্রহ চারভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। সেগুলাে হল, রূপকথা, গীতিকাব্য, রসকথা ও ব্রতকথা। এর সবই পূর্ববঙ্গের পল্লী অঞ্চলের লুপ্তপ্রায় কথা – সাহিত্য।

দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার এর রচনা: Written by Dakshinaranjan Mitra Majumder

দীনেশচন্দ্র সেনের উপদেশে দক্ষিণারঞ্জণ এই কাহিনীগুলিকে স্থায়ী রূপদান করেন বিভিন্ন নামে। রূপকাহিনীগুলি স্থান পায় ঠাকুরমার ঝুলি গ্রন্থে। গীতিকাহিনী গুলি নিয়ে রচিত হয় ঠাকুরদার ঝুলি, রসকথা স্থান পায় দাদামশায়ের থলে গ্রন্থে এবং প্রচলিত ব্রতকথা নিয়ে লিখিত হয় ঠানদিদির থলে। সেই প্রথম বাংলার লােক কাহিনীগুলি পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয় এবং সর্বস্তরের মানুষের কাছে বিপুলভাবে সমাদর লাভ করে।

দক্ষিণারঞ্জণ ছােটদের জন্য আরও যেসব বই লিখে বাংলার শিশুসাহিত্য ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন তার মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল চারু ও হারু, ফার্স্টবয়, লাস্টবয়, বাংলার সােনার ছেলে, সবুজ লেখা, আমার দেশ প্রভৃতি। দক্ষিণারঞ্জন কর্মসূত্রে বঙ্গীয় বিজ্ঞান – পরিষদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। তিনি এই সংস্থার সহকারী সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করেন এবং মুখপত্র পথ – এর সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী কালে পরিষদের বৈজ্ঞানিক পরিভাষা সমিতির সভাপতি রূপে বাংলায় বিজ্ঞানের বহু পরিভাষা রচনা করেন। দক্ষিণারঞ্জন স্মরণীয় হয়ে আছেনার শিশু সাহিত্যের অবদানের জন্য। বিশেষ করে ঠাকুরমার ঝুলি, ঠাকুরদার থলে প্রভৃতি গ্রন্থগুলির জন্য। রূপ – কাহিনী গুলিকে তিনি এমন মনোেরম সুরেলা ভাষায় ব্যক্ত করেছেন যে তার আকর্ষণ অপ্রতিরােধ্য। পল্লীগ্রামে প্রচলিত এমন অনেক শব্দও কথা তিনি হুবহু প্রয়ােগ করে তার লেখনীকে আরও সমৃদ্ধ ও মনােগ্রাহী করে তুলেছেন।

Leave a Comment