জলজ উদ্ভিদ ও জাঙ্গল উদ্ভিদের পার্থক্য: পৃথিবীতে প্রাপ্ত স্বাভাবিক উদ্ভিদ গুলিকে জলের চাহিদা ও প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশের উপর ভিত্তি করে বেশ কয়েকটি প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। যার মধ্যে অন্যতম দুটি হল জলজ উদ্ভিদ ও জাঙ্গল উদ্ভিদ। এই দুই শ্রেণীর উদ্ভিদের মধ্যে বিভিন্ন দিক থেকে নানারূপ পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। নিচে জলজ উদ্ভিদ ও জাঙ্গল উদ্ভিদের পার্থক্য গুলি সহজ ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হল –
সংজ্ঞা
যে সমস্ত উদ্ভিদ পর্যাপ্ত পরিমাণ জলে জন্মায় কিংবা জলজ পূর্ণ পরিবেশে জীবন যাপন করে তাদের জলজ উদ্ভিদ বলে। উদাহরণ – কচুরিপানা, পদ্ম, ঝাঁঝি প্রভৃতি জলজ উদ্ভিদ।
যে সমস্ত উদ্ভিদ শুষ্ক মরু ও মরু প্রায় অর্থাৎ জলের পরিমাণ কম এমন পরিবেশের মাটিতে জন্মায় তাদের জাঙ্গল উদ্ভিদ বলে। উদাহরণ – খেজুর, ফনিমনসা, বাবলা প্রভৃতি।
জলবায়ু
- জলজ উদ্ভিদ আর্দ্র জলবায়ু অঞ্চলে বেশি দেখা যায়।
- জঙ্গলে উদ্ভিদ মরু বা মরু প্রায় এবং শুষ্ক জলবায়ুর উদ্ভিদ।
পরিবেশ
- জলজ উদ্ভিদ সম্পন্ন জলজ পরিবেশে জন্মায়।
- জাঙ্গল উদ্ভিদ জলীয় বাষ্প হীন, অধিক বাষ্পীভবন যুক্ত ও মাটিতে জলের অভাব প্রকট এমন শুষ্ক বা শুষ্ক প্রায় পরিবেশে জন্মায়।
জীবন চক্র
- জলজ উদ্ভিদ সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী জীবন চক্র বিশিষ্ট হয়।
- জাঙ্গল উদ্ভিদ ক্ষণস্থায়ী থেকে দীর্ঘমেয়াদি জীবনচক্র বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
পাতার প্রকৃতি
- জলজ উদ্ভিদের পাতা তৈলাক্ত প্রকৃতির ও পত্ররন্ধ্র নিম্ন ত্বকে অবস্থিত।
- জাঙ্গল উদ্ভিদ এর পাতা মোম জাতীয় পদার্থ দ্বারা আবৃত থাকে। পাতার রন্ধ্র গহ্বরের এর মধ্যে অবস্থিত।
শারীরবৃত্তীয় কাজ
- জলজ উদ্ভিদ প্রস্বেদন ক্রিয়া অনেক বেশি মাত্রায় করে। তাই স্টোমাটা বা পত্র রন্ধ্র দিনে খোলা ও রাতে বন্ধ রাখে।
- জাঙ্গল উদ্ভিদ প্রস্বেদন ক্রিয়া কমানোর জন্য স্টোমাটা দিনে বন্ধ এবং রাতে খোলা রাখে।
ভাসমানতা
- জলজ উদ্ভিদের কোশ গুলি স্পঞ্জের মতো হওয়াই এগুলি বায়ু পূর্ণ থাকে, ফলে উদ্ভিদ সহজেই জলে ভেসে থাকতে পারে।
- জাঙ্গল উদ্ভিদ স্ব- স্থানিক প্রকৃতির, ভাসমান নয়। এদের কোশগুলি জলপূর্ণ থাকে, যাতে খরার হাত থেকে রক্ষা পায়।