ভূমিকম্পের দেহ তরঙ্গ ও পৃষ্ঠ তরঙ্গের পার্থক্য: ভূমিকম্পের তরঙ্গ গুলিকে প্রবাহ মাধ্যম অনুসারে দুই ভাগে ভাগ করা হয় – দেহ তরঙ্গ ও পৃষ্ঠ তরঙ্গ। এখানে ভূমিকম্পের দেহ তরঙ্গ ও পৃষ্ঠ তরঙ্গের পার্থক্য গুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
1) সংজ্ঞা
ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে উৎপন্ন হয়ে যে ভূমিকম্প তরঙ্গ গুলি পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উপকেন্দ্রে এসে পৌঁছায়। তাদের দেহ তরঙ্গ বলে।
যে ধীর গতি সম্পন্ন ভূ-কম্পীয় তরঙ্গ উপকেন্দ্র থেকে ভূ পৃষ্ঠের চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে সেই তরঙ্গ কে পৃষ্ঠ তরঙ্গ বলে।
2) তরঙ্গ
ভূমিকম্পের P ও S তরঙ্গ কে দেহ তরঙ্গ বা body wave বলে।
ভূমিকম্পের L তরঙ্গ কে পৃষ্ঠ তরঙ্গ বা Surface wave বলে।
3) তরঙ্গের প্রকৃতি
দেহ তরঙ্গ অনুদৈর্ঘ্য ও অনুপ্রস্থ প্রকৃতির হয়।
পৃষ্ঠ তরঙ্গ তির্যক প্রকৃতির হয়।
4) দৈর্ঘ্য
দেহ তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য তুলনামূলক ভাবে কম হয়।
পৃষ্ঠ তরঙ্গের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি।
5) গতিবেগ
দেহ তরঙ্গ সর্বাপেক্ষা দ্রুত গতির তরঙ্গ।
পৃষ্ঠ তরঙ্গের বেগ অনেক কম।
6) বিস্তৃতি
দেহ তরঙ্গ গুরু মন্ডল ও কেন্দ্র মণ্ডলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উপকেন্দ্র এসে পৌঁছায়।
পৃষ্ঠ তরঙ্গ কেবল মাত্র ভূ পৃষ্ঠ বরাবর প্রবাহিত হয়।
7) তীব্রতা
সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী তরঙ্গ হল দেহ তরঙ্গ।
পৃষ্ঠ তরঙ্গ অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী তরঙ্গ।
8) ধ্বংসাত্মক তরঙ্গ
ভূ অভ্যন্তর দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে দেহ তরঙ্গের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা অনেক কম।
সর্বাপেক্ষা বিধ্বংসী তরঙ্গ। পৃষ্ঠ তরঙ্গের ফলে ভূপৃষ্ঠে প্রচুর ক্ষয় ক্ষতি হয়।
9) স্থায়িত্ব
দেহ তরঙ্গ স্থায়িত্ব অপেক্ষাকৃত কম।
পৃষ্ঠ তরঙ্গের স্থায়িত্ব অপেক্ষাকৃত বেশি।