মহীভাবক আলোড়ন ও গিরিজনি আলোড়নের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
মহীভাবক আলোড়ন ও গিরিজনি আলোড়নের মধ্যে পার্থক্য:
১)সংজ্ঞা-যে ভূ আলোড়ন উল্লম্ব ভাবে ক্রিয়া করে মহাদেশ গঠনে সাহায্য করে তাকে মহীভাবক আলোড়ন বলে। অন্যদিকে, যে আলোড়ন ভূপৃষ্ঠে অনুভূমিক ভাবে ক্রিয়া করে ভঙ্গিল পর্বত গঠনে সাহায্য করে, তাকে গিরিজনি আলোড়ন বলে।
২)ব্যুৎপত্তিগত অর্থ-মহীভাবক আলোড়ন ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Epeirogenic Movement, যা গ্রীক শব্দ ‘Epeiros’ অর্থাৎ মহাদেশ এবং ‘Genesis’ অর্থাৎ উৎপত্তি-এর সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। অন্যদিকে, গিরিজনি আলোড়নের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Orogenic Movement, যাক গ্রীক শব্দ ‘Oros’ অর্থাৎ পর্বত এবং Genesis’ অর্থাৎ উৎপত্তি-এর সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে।
৩)পরিলক্ষিত অঞ্চল-মহীভাবক ভূ-আলোড়ন মহাদেশ জুড়ে সংঘটিত হয়। অন্যদিকে, গিরিজনি ভূ আলোড়ন সমুদ্রগর্ভে সৃষ্টি হয়।
৪)প্রকৃতি-মহীভাবক ভূ-আলোড়ন ভূপৃষ্ঠে উল্লম্বভাবে ক্রিয়া করে। অন্যদিকে, গিরিজনি ভূ আলোড়ন ভূ-পৃষ্ঠে অনুভূমিক ভাবে ক্রিয়া করে।
৫)ব্যাপ্তি-মহীভাবক আলোড়ন অল্প স্থানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। অন্যদিকে, গিরিজনি আলোড়ন বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে সংঘটিত হয়।
৬)ভূ-ত্বকের ওপর প্রভাব-মহীভাবক আলোড়নের প্রভাবে ভূত্বকের উত্থান ও অবনমন লক্ষ্য করা যায়। অন্যদিকে, গিরিজনি আলোড়নের প্রভাবে ভূ-ত্বকের কোথাও সংনমনের ফলে সংকোচন এবং কোথাও আবার টানের ফলে সম্প্রসারণ ঘটে।
৭)শিলাস্তরের ওপর প্রভাব-মহীভাবক আলোড়নের প্রভাবে শিলাস্তরে ফাটল, দারন, চ্যুতি ইত্যাদি সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে গিরিজনি আলোড়নের প্রভাবে সমুদ্রগর্ভে সঞ্চিত পাললিক শিলাস্তরে পেষনের দ্বারা ভাঁজ সৃষ্টি হয়।
৮)ভূমিরূপের উপর প্রভাব-মহীভাবক আলোড়নের প্রভাবে বিশালাকার মহাদেশ, সমুদ্রতল, মালভূমি, স্তূপ পর্বত, গ্রস্ত উপত্যকা ইত্যাদি ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, গিরিজনি আলোড়নের প্রভাবে বিভিন্ন ধরনের ভাঁজ ও ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টি হয়।