পর্বত ও মালভূমির পার্থক্য: পৃথিবী পৃষ্ঠের উপর সৃষ্ট ভূমিরূপ গুলি কে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা, বন্ধুরতা, ঢাল, শিলার গঠন প্রভৃতির উপর ভিত্তি করে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে, যথা – পর্বত, মালভূমি ও সমভূমি। এখানে পর্বত ও মালভূমির মধ্যে বিভিন্ন পার্থক্য গুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। পর্বত ও মালভূমির পার্থক্য গুলি হল –
সংজ্ঞা
- সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে সর্বাধিক উচ্চতা সম্পন্ন, বহুদূর বিস্তৃত শিলাময় ভূমিরূপ কে পর্বত বলে।
- সমুদ্র তল থেকে মাঝারি উচ্চতা বিশিষ্ট, ঢেউখেলানো উঁচু ভূমিরূপ কে মালভূমি বলে।
উচ্চতা
- সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে 1000 মিটারের অধিক উচ্চতা বিশিষ্ট ভূমিরূপ গুলি পর্বত নামে পরিচিত।
- মালভূমি অঞ্চল গুলি সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে 300 মিটার উচ্চতা সম্পন্ন হয়ে থাকে।
উদাহরণ
- হিমালয়, আন্দিজ, রকি, আল্পস প্রভৃতি পর্বতের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
- ডেকান ট্র্যাপ, ছোটনাগপুর, তিব্বত মালভূমি প্রভৃতি মালভূমির উদাহরণ।
প্রকৃতি
- পর্বত গুলি সাধারণত একটানা অবস্থান করে।
- মালভূমি হল বিস্তীর্ণ উচ্চভূমি।
উপত্যকার প্রকৃতি
- পার্বত্য অঞ্চলের উপত্যকা গুলি গভীর ও সরু হয়।
- মালভূমি অঞ্চলে উপত্যকা গুলি মূলত অগভীর ও প্রশস্ত হয়।
খনিজ সম্পদ
- পার্বত্য অঞ্চলে প্রাপ্ত খনিজ সম্পদের পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে অনেক কম।
- মালভূমি অঞ্চলে বিপুল পরিমাণে খনিজ সম্পদ পাওয়া যায়।
নদ-নদী
- পার্বত্য অঞ্চলে নদী গুলিতে সারাবছর জল প্রবাহ বজায় থাকে বলে, এগুলি নিত্যবহ প্রকৃতির হয়।
- মালভূমি অঞ্চলে নদী গুলি বৃষ্টির জলে পুস্থ বলে সারাবছর জল থাকে না, তাই নদী গুলি অনিত্যবহ হয়।
জলবায়ু
- পার্বত্য অঞ্চলের উচ্চতা অধিক হওয়ায় জলবায়ু শীতল প্রকৃতির হয়।
- মালভূমি অঞ্চল গুলির জলবায়ু রুক্ষ্ম ও শুষ্ক প্রকৃতির হয়।
চূড়ার প্রকৃতি
- পর্বতের চূড়া গুলি তীক্ষ্ম ও উঁচু হয়।
- মালভূমির শৃঙ্গ বা চূড়া থাকে না।
সৃষ্টির কারণ
- ভাঁজ, চ্যুতি ও অগ্ন্যুৎপাতের ফলে পর্বতের সৃষ্টি হয়ে থাকে।
- অগ্ন্যুৎপাত, টেকটনিক কার্যাবলী, এমনকি কিছু বহির্জাত শক্তির ক্ষয় কার্যের ফলে মালভূমির সৃষ্টি হয়।