সমুদ্রস্রোত ও সমুদ্র তরঙ্গের মধ্যে পার্থক্য

Rate this post

সমুদ্রস্রোত ও সমুদ্র তরঙ্গের মধ্যে পার্থক্য: একস্থান থেকে অন্যস্থানে মহাসাগর ও সাগরের পানির নির্দিষ্ট ও নিয়মিত প্রবাহকে মহাসাগরীয় স্রোত বা সমুদ্রস্রোত (Ocean Current) বলে।

সমুদ্র বিদ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল সমুদ্রস্রোত ও সমুদ্র তরঙ্গের পার্থক্য। যা এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করা হল। 

সংজ্ঞা গত পার্থক্য

বিভিন্ন নিয়ন্ত্রকের প্রভাব জনিত কারণে সমুদ্রের ওপরের জলরাশির একই স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়মিত ভাবে প্রবাহিত হওয়া কে সমুদ্রস্রোত বলে।

সমুদ্র উপকূলে র জলরাশি যখন একই স্থানে অবস্থান করে দুই এক মিটার ওঠা নামা করে, তখন তাকে সমুদ্র তরঙ্গ বা ঢেউ বলে।

সৃষ্টির কারণ

পৃথিবীর আবর্তন গতি, বায়ু প্রবাহ, সমুদ্র জলের লবনতা, ঘনত্ব ও উষ্ণতার তারতম্যের জন্য সমুদ্রস্রোত সৃষ্টি হয়।

সমুদ্র তরঙ্গ সৃষ্টির মূল কারণ হচ্ছে বায়ুপ্রবাহ।

শ্রেণীবিভাগ

উষ্ণতা তারতম্য অনুসারে সমুদ্রস্রোত কে (i) উষ্ণ সমুদ্র স্রোত ও (ii) শীতল সমুদ্র স্রোত এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়।

সমুদ্র তরঙ্গের প্রকৃতি অনুসারে সমুদ্র তরঙ্গ কে দুই ভাগে ভাগ করা যায় – i) গঠনকারী সমুদ্র তরঙ্গ ও ii) বিনাশকারী সমুদ্র তরঙ্গ। 

প্রকৃতিগত পার্থক্য

সমুদ্রস্রোত অনুভূমিকভাবে চলাচল করে।

সমুদ্র তরঙ্গ সাধারণত ওপর নিচে ওঠানামা করে

স্থানিক পরিবর্তন

সমুদ্রস্রোতের ক্ষেত্রে জলরাশির স্থান পরিবর্তন ঘটে।

সমুদ্র তরঙ্গের ক্ষেত্রে জলরাশির স্থান পরিবর্তন ঘটে না।

উপকূল এর উপর প্রভাব

সমুদ্রস্রোত উপকূলের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

সমুদ্র তরঙ্গ উপকূলের ভূভাগ কে আঘাত করে।

জলবায়ুর ওপর প্রভাব

সমুদ্রস্রোত উপকূল অঞ্চলের জলবায়ু নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সমুদ্র তরঙ্গ উপকূল অঞ্চলের জলবায়ু কে প্রভাবিত করে না।

বিষয়সমুদ্রস্রোতসমুদ্রতরঙ্গ
চলনসমুদ্রস্রোত হল সমুদ্রজলের একমুখী চলন।সমুদ্রতরঙ্গ হল সমুদ্রপৃষ্ঠে জলরাশির ঘূর্ণায়মান প্রবাহের পর্যায়ক্রমিক লম্বভাবে ওঠানামা।
উৎপত্তিবায়ুপ্রবাহ, পৃখিবার আবর্তন গতি, সমুদ্রজলের লবণতা, উষ্ণতা ও ঘনত্বের পার্থক্য সমুদ্রস্রোতের উৎপত্তির কারণ।সমুদ্রতরঙ্গ সাময়িক এবং অনিয়মিত।
উপকূলের সঙ্গে প্রবাহের প্রকৃতিসমুদ্রস্রোত উপকূলরেখার সঙ্গে অনুভূমিকভাবে বয়ে যায়সমুদ্রতরঙ্গ উপকূলরেখার সঙ্গে সমকোণে প্রবাহিত হয়।
ধরনসমুদ্রস্রোত উপকূলের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়।সমুদ্রতরঙ্গ উপকূলে এসে আছড়ে পড়ে।
কাজের বৈশিষ্ট্যসমুদ্রস্রোত প্রধানত বহনকার্য করে।সমুদ্রতরঙ্গের মাধ্যমে সামুদ্রিক ক্ষয়, বহন ও সঞ্জয় কাজ হয়।
প্রকারভেদতাপমাত্রা অনুযায়ী সমুদ্রস্রোত দুরকমের হয়। যথা—উষ্ণস্রোত এবং শীতলস্রোত।তাপমাত্রার ভিত্তিতে সমুদ্রতরঙ্গের আলাদা কোনাে বিভাজন নেই।
নিয়ন্ত্রণসমুদ্রস্রোত যে অঞ্চলের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয় সেই অঞ্চলের জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে।সমুদ্রতরঙ্গ উপকূলের ভূমিরূপকে নিয়ন্ত্রণ করে। 

Leave a Comment