ভূমিকম্পের P ও S তরঙ্গের পার্থক্য: পৃথিবীর ভূ-অভ্যন্তর থেকে উৎপন্ন শক্তি পৃথিবী পৃষ্ঠে সামুদ্রিক ঢেউ এর মত যে তরঙ্গের সৃষ্টি করে, তাকে ভূমিকম্প বলে। এই ভূমিকম্প জনিত তরঙ্গ গুলিকে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে 3 ভাগে ভাগ করা হয়। যথা – P তরঙ্গ বা প্রাথমিক তরঙ্গ, S তরঙ্গ বা গৌণ তরঙ্গ ও L তরঙ্গ বা পৃষ্ঠ তরঙ্গ। এখানে ভূমিকম্পের P ও S তরঙ্গের পার্থক্য গুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
1. সংজ্ঞা
- ভূমিকম্প কেন্দ্র থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রথম যে তরঙ্গ সিসমোগ্রাফ এ ধরা পরে অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠে প্রথম এসে পৌঁছায় তাকে প্রাথমিক তরঙ্গ বা P তরঙ্গ বলে।
- প্রাথমিক তরঙ্গের যে ভূকম্পীয় তরঙ্গ ভূমিকম্প লেখ যন্ত্রে ধরা পড়ে তাকে গৌণ তরঙ্গ বা S তরঙ্গ বলে।
2. তরঙ্গের প্রকৃতি
- P – তরঙ্গ শব্দ তরঙ্গের অনুরূপ।
- S – তরঙ্গ আলোক তরঙ্গের অনুরূপ।
3. প্রবাহ মাধ্যম
- P – তরঙ্গ কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় সব রকমের মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে তরঙ্গ ভ্রমণ করতে পারে।
- S – তরঙ্গ কেবলমাত্র কঠিন মাধ্যমের মধ্য দিয়ে ভ্রমণে সক্ষম।
4. অপর নাম
- P তরঙ্গ অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ নামে পরিচিত।
- S তরঙ্গ অনুপ্রস্থ তরঙ্গ নামে পরিচিত।
5. গতিবেগ
- সবচেয়ে গতিবেগ সম্পন্ন তরঙ্গ হল P তরঙ্গ। গড় গতিবেগ 6 কিমি / সেকেন্ড।
- S তরঙ্গের গতিবেগ মাঝারি, গড়ে 4.5 কিমি/ সেকেন্ড।
6. বস্তু কনা
- P তরঙ্গের প্রবাহ পথের সাথে বস্তুকনা সমান্তরাল অভিমুখে গমন করে।
- S তরঙ্গের ক্ষেত্রে বস্তু রাজি সমকোণে বা আড়াআড়ি ভাবে সরে যায়।
7. তরঙ্গ দৈর্ঘ্য
- P তরঙ্গ সর্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট হয়।
- S তরঙ্গের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য মাঝারি প্রকৃতির হয়।