ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাত এর মধ্যে পার্থক্য: পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলীয় ঘটনা গুলির মধ্যে অন্যতম হল ঘূর্নবাত ও প্রতীপ ঘূর্নবাত । ঘূর্নবাত ও প্রতীপ ঘূর্নবাত একে অপরের বিপরীত অবস্থাকে সূচিত করে। দুটি অবস্থার কিছু ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা একটি কে অপরটি থেকে পৃথক করে। ঘূর্নবাত ও প্রতীপ ঘূর্নবাতের মধ্যে পার্থক্য গুলি বিস্তারিত ভাবে নিচে আলোচনা করা হল –
১. সংজ্ঞা
নিম্নচাপ বিশিষ্ট ঝরকে ঘূর্নবাত বা সাইক্লোন বলা হয়ে থাকে।
উচ্চচাপ বিশিষ্ট অঞ্চল থেকে বর্হিমুখী বায়ু প্রবাহকে প্রতীপ ঘূর্নবাত বলে।
২. বায়ুপ্রবাহ
চারদিক থেকে বায়ু ঘূর্নবাত কেন্দ্রের দিকে ধেয়ে আসে অর্থাৎ বায়ু প্রবাহ কেন্দ্রমুখী হয়।
প্রতীপ ঘূর্নবাতে বায়ু কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে যায় অর্থাৎ বায়ু প্রবাহ বর্হিমুখী।
৩. বায়ুর প্রকৃতি
ঘূর্নবাতের কেন্দ্রের বায়ু উষ্ণ ও ঊর্ধবগামী হয়।
প্রতীপ ঘূর্নবাতের কেন্দ্রে বায়ু ঠাণ্ডা ও নিম্নগামী হয়।
৪. চাপের উপস্থিতি
ঘূর্নবাতের কেন্দ্রে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়।
প্রতীপ ঘূর্নবাতের কেন্দ্রে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয়।
৫. মেঘ ও ঝড়বৃষ্টি
ঘূর্নবাতের সময় আকাশ মেঘলা থাকে ও প্রবল ঝড় বৃষ্টি হয়।
প্রতীপ ঘূর্নবাতের ক্ষেত্রে আকাশ নির্মল মেঘমুক্ত থাকে। ঝড়বৃষ্টি হয় না।
৬. স্থায়িত্ব
ঘূর্নবাত ক্ষণস্থায়ী হয়।
প্রতীপ ঘূর্নবাত দীর্ঘকাল স্থায়ী হয়।
৭. ধ্বংসাত্মক শক্তি
ঘূর্নবাত খুব শক্তিশালী হয়, এর ফলে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়।
প্রতীপ ঘূর্নবাতের শক্তি কম হয় বলে, ক্ষয়ক্ষতি হয় না।
৮. গতিবেগ
ঘূর্নবাত তীব্র গতিবেগ সম্পন্ন হয়, কখনো কখনো গতিবেগ ঘণ্টায় ৩০০-৩৫০ কিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
প্রতীপ ঘূর্নবাতে বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ তীব্র হয় না।
৯. উৎপত্তি স্থল
ঘূর্নবাত প্রধানত ক্রান্তীয় ও নাতিশীতোষ্ণ মন্ডলের উষ্ণ সমুদ্রে সৃষ্ট হয়।
প্রতীপ ঘূর্নবাত সাধারণত নাতিশীতোষ্ণ ও হিমমণ্ডলের শীতল স্থলভাগে সৃষ্টি হয়।