উষ্ণ ও শীতল সমুদ্র স্রোতের পার্থক্য: পৃথিবীর আবর্তন গতি, বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্র জলের লবনতা ঘনত্ব ও উষ্ণতার পার্থক্যের জন্য সমুদ্রের ওপরের জলরাশি নিয়মিতভাবে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহিত হয়। সমুদ্রজলের এই গতিকে সমুদ্রস্রোত বলে। উষ্ণতার তারতম্য অনুসারে সমুদ্রস্রোত কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। উষ্ণ স্রোত ও শীতল স্রোত।
সমুদ্রের জলরাশির একস্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহ কে সমুদ্র স্রোত বলে। নানা কারণে সমুদ্র স্রোতের উৎপত্তি ঘটে থাকে। সমুদ্র স্রোত গুলিকে সমুদ্র জলের উষ্ণতার উপর ভিত্তি করে দুটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয় – শীতল ও উষ্ণ সমুদ্র স্রোত। এখানে উষ্ণ ও শীতল সমুদ্র স্রোতের পার্থক্য গুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
1. উৎপত্তি স্থল
- উষ্ণ ক্রান্তীয় অঞ্চলে উষ্ণ স্রোতের উৎপত্তি ঘটে।
- শীতল মেরু অঞ্চল থেকে শীতল স্রোতের আবির্ভাব ঘটে।
2. প্রবাহ
- উষ্ণ সমূদ্র স্রোত গুলি বহি:স্রোত রূপে প্রবাহিত হয়।
- শীতল সমূদ্র স্রোত গুলি মূলত অন্ত:স্রোত রূপে প্রবাহিত হয়।
3. বৃষ্টিপাত
- উষ্ণ সমূদ্র স্রোতের প্রভাব উপকূল অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
- শীতল সমূদ্র স্রোতের প্রভাব উপকূল অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের অভাবে মরুভূমির সৃষ্টি হয়।
4. তাপমাত্রার ওপর প্রভাব
- উষ্ণ স্রোতের প্রভাবে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের উপকূলবর্তী অঞ্চলে শীতকালীন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় বলে শীতের প্রকোপ কমে।
- উপকূলের পাশ দিয়ে শীতল স্রোত প্রবাহিত হলে উপকূল অঞ্চলের তাপমাত্রা হ্রাস পায়, শীতের প্রভাব বৃদ্ধি পায়, তুষার পাত হয়।
5. জলের ঘনত্ব
- উষ্ণ সমূদ্র স্রোতের দ্বারা প্রভাবিত সমুদ্র জলের ঘনত্ব কম হয়।
- শীতল স্রোত প্রবাহিত অঞ্চলের সমুদ্র জলের ঘনত্ব তুলনামূলক ভাবে বেশি হয়।
6. জলের লবনতা
- উষ্ণ সমুদ্র স্রোতের প্রভাবে জলের লবণতা হ্রাস পায়।
- শীতল সমুদ্র স্রোতের প্রভাবে জলের লবণতা বৃদ্ধি পায়।
7. উদাহরণ
- উষ্ণ স্রোতের উদাহরণ গুলি হল – উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত, উষ্ণ কুরেশিও স্রোত প্রভৃতি।
- শীতল স্রোতের উদাহরণ হল – হ্যামব্রোড স্রোত, ল্যাব্রাডর স্রোত প্রভৃতি।