জনসংখ্যা বৃদ্ধির কুফল: পৃথিবীর অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি বলে এইসব দেশ গুলির সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কুফল বা সমস্যা সব থেকে বেশি প্রত্যক্ষ করা যায়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক প্রভৃতি ক্ষেত্রে নানা রকম সমস্যা দেখা যায়।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির কুফল গুলি হল
১. খাদ্য সরবরাহ জনিত সমস্যা – জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে খাদ্য উৎপাদন সম্ভব হয় না বলে খাদ্যের অভাব পরিলক্ষিত হয়। অপুষ্টি জনিত কারণে শিশু মৃত্যু বৃদ্ধি পায়। মানুষের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে।
২. স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব – অনুন্নত দেশ গুলিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি স্বাস্থ্য সমস্যাকে আরো জটিল করে দেয়। অতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি জনিত কারণে সৃষ্ট অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ মানুষের শারীরিক সমস্যাকে আরো বৃদ্ধি করে। ফলে মানুষের মধ্যে আরও দুরারোগ্য ব্যাধির প্রাদুর্ভাব ঘটে।
৩. শিক্ষার উপর প্রভাব – অতি জনসংখ্যায় শিক্ষার সুযোগ কমে যায়। অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ গুলির এক বিরাত অংশ হল শিশু ও কিশোর, এদের শিক্ষার জন্য যে আর্থিক পরিকাঠামোর প্রয়োজন তা এইসব দেশের পক্ষে গড়ে তোলা সম্ভব হয় না।
৪. জীবিকার উপর প্রভাব – জনসংখ্যা বৃদ্ধি মানুষের জীবিকার উপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলে। এই বিপুল পরিমান জনগণ কে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ গুলির পক্ষে সম্ভব হয় না। ফলে দারিদ্রতা ও নানা ধরণের অপরাধ প্রবণতা বাড়ে।
৫. বাসস্থানের অভাব পরিলক্ষিত হয় – বদ্ধিত জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজন হয় বাসস্থানের যা জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান সমস্যা । আবার অনেক সময় সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে একান্নবর্তী পরিবার গুলি ভেঙে যায়। ফলে বাসস্থানের চাহিদা পূরনের জন্য কৃষিজমি হ্রাস পায় ও বনভূমি ধ্বংস হয়।
৬. পরিবেশ দূষণের পরিমান বৃদ্ধি – অবৈজ্ঞানিক উপায়ে মাটি, জল, বাতাস ও অন্যান্য প্রাকৃতিক উপকরন ব্যবহার করে এমন এক পর্যায়ে পৌঁছায় যে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। কারখানা স্থাপন, রাসায়নিক সার ব্যবহার প্রভৃতি জল, মাটি, বাতাসকে দূষিত করছে ।
৭. অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যহত – অতিজনসংখ্যার চাপে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি মারাত্মক ভাবে ব্যহত হয়। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য যে সব উপাদান অনুকূল তা ব্যহত হয়। যেমন – মূলধনী দ্রব্যের জোগান হ্রাস পায়, সম্পদের মাত্রা অতিরিক্ত উৎপাদনের ফলে সম্পদ সঞ্চয় কমে যায়, বিদেশি ঋনের পরিমান বাড়ে।