পরিবেশ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর – Environmental Science MCQ Questions Answers in Bengali

Rate this post

পরিবেশ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর – Environmental Science MCQ Questions Answers in Bengali

১. ইউট্রোফিকেশন কাকে বলে? 

উত্তর – নদী, হ্রদ, জলাশয়ে বিভিন্ন ধরণের জৈব ও জৈব উপাদান উপস্থিত থাকে, যা জলজ প্রানী ও উদ্ভিদের বেঁচে থাকা ও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়। এই সব উপাদান গুলিকে পরিপোষক বলে। এই সব পরিপোষক যেমন  নাইট্রেট, ফসফেট ও সালফেট জাতীয় রাসায়নিক সার কৃষি কাজে ব্যবহারের ফলে, সেই সব কৃষিজমি থেকে সার গুলি বৃষ্টির জলের মাধ্যমে হ্রদ, জলাশয় ও পুকুরের জলে মিশলে শৈবাল, অ্যালগি জাতীয় জলজ উদ্ভিদ অস্বাভাবিক ভাবে জন্মায় ও বৃদ্ধি পায় এবং পরে এগুলি মরে পচতে থাকে এবং জলাশয়ে জমে জলাশয় ক্রমশ ভরাট হয়ে আসে, এই প্রক্রিয়াকে ইউট্রোফিকেশন বলে। ইউট্রোফিকেশনের ফলে জলে পুষ্টি পদার্থের পরিমান বৃদ্ধি পায় কিন্তু জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমান হ্রাস পায়। 


২. বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড বলতে কী বোঝ? 

উত্তর – জলের পরিপোষক দূষণের ফলে অ্যালগি, শৈবাল জাতীয় উদ্ভিদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে, এইসব উদ্ভিদের মৃত্যুর পর এগুলির বিয়োজন ঘটাতে ব্যাকটেরিয়া জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন গ্রহন করে। জৈব পদার্থ গুলির জারনের মাধ্যমে বিয়োজন ঘটানোর জন্য যে পরিমান অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়, তাকে  বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড (BOD) বা জৈব অক্সিজেন চাহিদা বলে। BOD জলে দূষণের মাত্রা নির্দেশ করে। জলে BOD এর পরিমান ৫ ppm বা তার কম হয় তাহলে সেই জল পানের ও মাছের বেঁচে থাকার পক্ষে ক্ষতিকারক। 


৩. অ্যারোসল কাকে বলে?

উত্তর – জলে ভাসমান অতি সূক্ষ্ম বস্তুকনা, ধূলিকনা, লবনকনা ও গ্যাসের মধ্যে থাকা তরল কলয়েড কনা ইত্যাদিকে একত্রে অ্যারোসল বলা হয়। অ্যারোসল সৃষ্টির কারণ গুলি হল – জীবাশ্ম জ্বালানীর দহন, কলকারখানার ধোঁয়া, যানবাহনের ধোঁয়া, নির্মান কাজের সময় উৎপন্ন ধোঁয়া প্রভৃতি। 


৪. পরিবেশ দূষণ কাকে বলে?

উত্তর – পরিবেশে কোন অবাঞ্ছিত বস্তু যুক্ত হওয়ার ফলে পরিবেশের উপাদান গুলির ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। এর ফলে জীব জগৎ ওঠা বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা তার উপক্রম হয়, তাকে পরিবেশ দূষণ বলে।

   
৫. রাসায়নিক অক্সিজেন চাহিদা কী?

উত্তর – পটাশিয়াম পারমাঙ্গানেট, পটাশিয়াম ডাইক্রোমেট প্রভৃতি জারক উপাদানের দ্বারা দূষিত জলে উপস্থিত জৈব ও অজৈব রাসায়নিক গুলির রাসায়নিক জারনের জন্য যে পরিমান অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়, তাকে রাসায়নিক অক্সিজেন চাহিদা (COD) বলে। 


৬. গ্লোবাল ওয়ার্মিং কাকে বলে?

উত্তর – গ্রিন হাউস গ্যাস গুলির মাত্রা অতিরিক্ত ঘনত্ব বৃদ্ধির ফলে পার্থিব বিকিরন রূপে দীর্ঘ তরঙ্গের সবটাই মহাশূন্যে ফিরে যেতে পারে না। বায়ুমণ্ডলের ওই গ্যাস গুলির স্তরে বাঁধা প্রাপ্ত হয়ে পুনরায় তা পৃথিবীপৃষ্ঠে ফিরে আসে এবং বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে। যার ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যাকে বিজ্ঞানীগন বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং বলে ভূষিত করেছেন। শিল্প বিপ্লবের পর থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। 


৭. জীব বিবর্ধন কাকে বলে? 

উত্তর – মানুষ পরিবেশে এমন সব দূষিত পদার্থ বর্জন করে যেগুলি সহজে ক্ষয় প্রাপ্ত হয় না। এই সব পদার্থ গুলি খাদ্য বস্তু বা অন্যান্য বস্তুর মাধ্যমে জীবদেহে প্রবেশ করছে এবং অভঙ্গুর হওয়ায় জীবদেহে ক্রমাগত সঞ্চিত হচ্ছে। আবার সেই সব জীব গুলি কে যে সব প্রানী খাদ্য হিসাবে গ্রহন করে তাদের দেহে এই দূষিত পদার্থের সঞ্চয় ঘটে। এভাবে যত উচ্চ ট্রপিক স্তরের দিকে এগোনো যায় ওই দূষণের মাত্রা ততই বৃদ্ধি পায়। এই ঘটনাকে জীব বিবর্ধন বলে। যেমন – জলে দ্রবীভূত DDT ফাইটোপ্লাংটন থেকে জুপ্লাংটনে গিয়ে সঞ্চিত হয়। একটি মাছ যদি ১০০ টি জুপ্লাংটন খায়, তাহলে তার দেহে সঞ্চিত DDT এর পরিমান ১০০ গুন হয়। কাজেই এই মাছ ভক্ষনকারী মানুষের দেহে কী পরিমান  DDT সঞ্চিত হবে তা সহজেই অনুমান করা যায়। 


৮. ওজোন স্তর কে প্রাকৃতিক সৌরপর্দা বলা হয় কেন?

উত্তর – বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে অবস্থিত ওজোন গ্যাসের স্তর সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মির হাত থেকে পৃথিবীর জীবজগৎ কে রক্ষা করে পৃথিবীকে জীবের বসবাসের অনুকূল করে তুলেছে বলে ওজোন স্তর কে প্রাকৃতিক সৌরপর্দা বলা হয়। ওজোন স্তর সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে নেয় বলে তা পৃথিবীর বুকে প্রবেশ করতে পারে না এবং সমগ্র জীবজগৎ অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা পায়। 

Leave a Comment