জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নির্ণয়ের সূত্র: জনসংখ্যা বৃদ্ধি শুরু হয়েছে বিগত কয়েক প্রজন্ম থেকে। কৃষি বিপ্লবের আগে পৃথিবীতে জনসংখ্যা ছিল ৫ মিলিয়নের কম এবং ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে পেতে এই জনসংখ্যা ১৮৫০ সালে এসে দাঁড়ার ১০০ কোটিতে । বর্তমানে মোট জনসংখ্যা ৭০০ কোটি পেরিয়ে গেছে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি পরিমাপ করা হয় দুটি সময়ের জনসংখ্যার মধ্যে তুলনার মাধ্যমে। পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় জনসংখ্যার পরিমান বাড়লে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হয় ধনাত্মক (+) এবং যখন জনসংখ্যার পরিমান কমে তখন জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হয় ঋনাত্মক (-)।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নির্ণয়ের সূত্র
বৃদ্ধির হার – মানুষের জন্মহার ও মৃত্যুহারের মধ্যে পার্থক্যকে বৃদ্ধি হার বলে।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় ২০০১ সালের জনগননা আনুসারে ভারতের জনসংখ্যা ছিল ১০২ কোটি এবং ২০১১ সালে সেই জনসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২১ কোটি ।
সুতরাং ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার
= [( বর্তমান বছরের জনসংখ্যা – পূর্ববর্তী বছরের জনসংখ্যা) / পূর্ববর্তী বছরের জনসংখ্যা ]
= [(১২১ কোটি – ১০২ কোটি) × ১০০
= ১৮ %
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নির্নয়ের দ্বিতীয় সূত্রটি হল
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার = (মোট জন্ম – মোট মৃত্যু) + (অভিবাসন – প্রবাসন)
তবে প্রথম সূত্রের তুলনায় দ্বিতীয় সূত্রটি বেশি ব্যবহার করা হয়।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির নিয়ন্ত্রক
কোনো দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রধানত জন্মহার ও মৃত্যুহার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আবার জন্মহার ও মৃত্যুহার বিভিন্ন বিষয়ের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন –
ক) জনসংখ্যার গঠন – কোনো দেশে প্রাপ্ত বয়স্ক জনসংখ্যা বেশি থাকলে সেই দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে প্রবল। আবার শিশু বা বৃদ্ধ জনসংখ্যা বেশি থাকলে জন্মহার কম হয় বলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হয় না ।
খ) শিক্ষা – শিক্ষিত মানুষরা পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে সচেতন হয়, জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করে।
গ) ধর্ম – কোনো ধর্ম উচ্চজন্মহারকে উৎসাহিত করে, যা জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারন ।
ঘ) সামাজিক রীতিনীতি – বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, পুত্র সন্তানের আকাঙ্খা প্রভৃতি সামাজিক রীতি নীতি জনসংখ্যার বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
ঙ) চিকিৎসা – চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে মৃত্যুহার অনেক কমে গিয়েছে, যার ফলে জনসংখ্যার বৃদ্ধি ঘটছে।