চোখের বিভিন্ন অংশের অবস্থান ও কাজ: চোখ প্রাণীর দর্শনেন্দ্রিয়-সংশ্লিষ্ট আলোক-সংবেদনশীল অঙ্গ। প্রাণিজগতের সবচেয়ে সরল চোখ কেবল আলোর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির পার্থক্য করতে পারে। উন্নত প্রাণীদের অপেক্ষাকৃত জটিল গঠনের চোখগুলো দিয়ে আকৃতি ও বর্ণ পৃথক করা যায়। অনেক প্রাণীর (এদের মধ্যে মানুষ অন্যতম) দুই চোখ একই তলে অবস্থিত এবং একটি মাত্র ত্রিমাত্রিক “দৃশ্য” গঠন করে। আবার অনেক প্রাণীর দুই চোখ দুইটি ভিন্ন তলে অবস্থিত ও দুইটি পৃথক দৃশ্য তৈরি করে (যেমন – খরগোশের চোখ)।
বাংলায় চোখ অর্থে চক্ষু, নেত্র ও অক্ষি পরিভাষাগুলিও প্রচলিত। চোখের রেটিনায় বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। রেটিনার কোন কোষ বিভিন্ন বর্ণ চিনতে সাহায্য করে এবং উজ্জ্বল আলোতে দেখতে সাহায্য করে। রেটিনার রড কোষ মৃদু আলোতে দেখতে সাহায্য করে।চোখ হল ভিজ্যুয়াল সিস্টেমের অঙ্গ। তারা জীবন্ত প্রাণীকে দৃষ্টি, ভিজ্যুয়ালি বিশদ গ্রহণ ও প্রক্রিয়া করার ক্ষমতা প্রদান করে, সেইসাথে দৃষ্টি থেকে স্বতন্ত্র কিছু ফটো প্রতিক্রিয়া ফাংশন সক্ষম করে। চোখ আলো শনাক্ত করে এবং এটিকে নিউরনে ইলেক্ট্রো-কেমিক্যাল ইমপালসে রূপান্তর করে। উচ্চতর জীবের মধ্যে, চোখ হল একটি জটিল অপটিক্যাল সিস্টেম যা আশেপাশের পরিবেশ থেকে আলো সংগ্রহ করে, একটি ডায়াফ্রামের মাধ্যমে এর তীব্রতা নিয়ন্ত্রন করে, একটি চিত্র তৈরি করতে লেন্সগুলির সমন্বয়যোগ্য সমাবেশের মাধ্যমে ফোকাস করে, এই ছবিটিকে বৈদ্যুতিক সংকেতগুলির একটি সেটে রূপান্তর করে এবং এই সংকেতগুলিকে জটিল স্নায়ুপথের মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রেরণ করে যা দৃষ্টিকে দৃষ্টিশক্তি কর্টেক্স এবং মস্তিষ্কের অন্যান্য অংশে অপটিক স্নায়ুর মাধ্যমে সংযুক্ত করে। সমাধান করার ক্ষমতা সহ চোখগুলি দশটি ভিন্ন আকারে এসেছে, এবং 96% প্রাণী প্রজাতির একটি জটিল অপটিক্যাল সিস্টেম রয়েছে।চিত্র-সমাধানকারী চোখ মোলাস্কস, কর্ডেট এবং আর্থ্রোপডগুলিতে উপস্থিত থাকে।
চোখের বিভিন্ন অংশের অবস্থান ও কাজ
চোখের অংশ | অবস্থান | কাজ |
---|---|---|
অশ্রু গ্রন্থি | অক্ষিকোটরের উপরিতল | চোখকে আর্দ্র রাখা এর প্রধান কাজ। |
অ্যাকুয়াস হিউমার | কর্নিয়া এবং লেন্সের মধ্যভাগ | প্রতিসারক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। |
আইরিশ | অক্ষিগোলকের সম্মুখভাগ | তারারন্ধ্রকে সংকুচিত ও প্রসারিত হতে সাহায্য করে। |
ইয়োলো স্পট | রেটিনার উপরিভাগ | সর্বাপেক্ষা ভালো প্রতিবিম্ব গঠন হয়। |
কনজাংটিভা | কর্নিয়ার বাইরের আচ্ছাদন | কর্নিয়াকে রক্ষা করা। |
কর্ণিয়া | অক্ষিগোলকের সম্মুখ ভাগ | প্রতিসারক মাধ্যম এবং আলোকরশ্মি কেন্দ্রীভূত করা। |
কোণ কোশ | রেটিনা | উজ্জ্বল আলো ও বর্ণ শোষণ করা। |
কোরয়েড | অক্ষিগোলকের পশ্চাদভাগ | রেটিনা রক্ষা ও বিচ্ছুরিত আলোর প্রতিফলন রোধ। |
পিউপিল | আইরিসের মধ্যভাগ | চোখে আলোক রশ্মি প্রবেশ করায়। |
ব্লাইন্ড স্পট | রেটিনা এবং অপটিক স্নায়ুর সংযোগস্থল | প্রতিবিম্ব গঠন না করা। |
ভিট্রিয়াস হিউমার | লেন্স ও রেটিনা | প্রতিসারক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। |
রড কোশ | রেটিনা | মৃদু আলো শোষণ। |
রেটিনা | অক্ষিগোলকের পশ্চাদ ভাগ | বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠন করা। |
লেন্স | আইরিসের পশ্চাদভাগ | আলোক প্রতিসরণ ঘটানো এবং রশ্মিকে রেটিনার উপর কেন্দ্রীভূত করা। |
সিলিয়ারি বডি | আইরিশ ও কোরোয়েডের সংযোগস্থল | লেন্সের উপযোজনে সহায়তা করে। |
স্কেলেরা | অক্ষিগোলকের পশ্চাদভাগ | অক্ষিগোলকের পশ্চাদ ভাগের স্তর রাখা করা। |