মিশ্র কৃষি কাকে বলে? মিশ্র কৃষির সুবিধা ও অসুবিধা গুলি আলোচনা করো: যে কৃষি ব্যবস্থায় অনুকূল প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ একই কৃষি খামারের কৃষিজ ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি পশু পালন করা হয়, সেই অপেক্ষাকৃত ঝুঁকিবিহীন বাজার কেন্দ্রিক কৃষি ব্যবস্থাকে মিশ্র কৃষি বলে।
মিশ্র কৃষির সুবিধা
মিশ্র কৃষির সুবিধা গুলি হল-
১) মিশ্র কৃষি ব্যবস্থায় একইসঙ্গে কৃষিকাজ ও পশু পালন করায় কৃষকের আর্থিক ঝুঁকি কম থাকে। কোন কারনে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হলেও কৃষক পশু জাতীয় সামগ্রী বিক্রি করে তার আর্থিক ক্ষতি পূরণ করতে পারে।
২) কৃষকরা তাদের নিজের প্রয়োজনের জন্য খাদ্যশস্য, শাকসবজি ও দুগ্ধজাত সামগ্রী উৎপাদন করতে পারে।
৩) এই কৃষি ব্যবস্থায় জমির ব্যবহার অনেক বেশি সুষম ও সর্বাঙ্গীণ হয়ে ওঠার সুযোগ পায়।
৪) এই কৃষি ব্যবস্থায় শস্যাবর্তন পদ্ধতির ব্যাপক প্রয়োগ ঘটে বলে মাটির স্বাভাবিক উর্বরতা বজায় থাকে।
৫) মিশ্র কৃষিতে স্থানীয় চাহিদা পূরণের সাথে সাথে বাণিজ্যের প্রাধান্য থাকে বলে কৃষক বিভিন্ন ফসল থেকে বাজারের বর্ধিত মূল্য গ্রহণ করার সুযোগ পায়। ফলে অর্থনৈতিক দিক থেকে কৃষক অনেক বেশি লাভবান হয়।
৬) এই কৃষি ব্যবস্থায় বিভিন্ন ফসল উৎপাদন ও পশুপালন একসঙ্গে ঘটায় কৃষক অনেক বেশি দক্ষ ও অভিজ্ঞ হয়ে ওঠার সুযোগ পায়।
মিশ্র কৃষির অসুবিধা
কৃষির অসুবিধা গুলি হল-
১) মিশ্র কৃষির উপযোগী অনুকূল পরিবেশ পৃথিবীর সকল স্থানে পাওয়া যায় না।
২) উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা মিশ্র কৃষির সাফল্যের অন্যতম প্রধান শর্ত। অনেক সময় উন্নত পরিবহন ব্যবস্থার অভাবে মিশ্র কৃষি ব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে না।
৩) মিশ্র কৃষি ব্যবস্থার উৎপাদিত ফসল লাভজনক দামে বিক্রি করা সম্ভব হয় না। তাই বাজারে ফসলের দাম কমে গেলে কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৪) মিশ্র কৃষিতে অনেক ক্ষেত্রে কৃষি বিষয়ে সকল কৃষকের জ্ঞান ও দক্ষতা না থাকায় এই কৃষি ব্যবস্থা সফলতা লাভ করতে পারে না।
৫) মিশ্র কৃষি ব্যবস্থায় কোন একটি ফসল রোগে আক্রান্ত হলে তার দ্রুত অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
৬) মিশ্র কৃষির সাফল্যের জন্য যে পরিমাণ মূলধন ও কারিগরি জ্ঞানের প্রয়োজন হয় তা অনেক সময় কৃষকদের মধ্যে বিনিয়োগ করা সম্ভব হয় না।