মুকুন্দ দাস জীবনী | Mukunda Das Biography in Bengali

Rate this post

মুকুন্দ দাস জীবনী: gksolve.in আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে Mukunda Das Biography in Bengali. আপনারা যারা মুকুন্দ দাস সম্পর্কে জানতে আগ্রহী মুকুন্দ দাস জীবনী টি পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।

মুকুন্দ দাস কে ছিলেন? Who is Mukunda Das?

মুকুন্দ দাস (ফেব্রুয়ারি ২২, ১৮৮৭ – মে ১৮, ১৯৩৪) বাঙালি কবি যাকে চারণ কবি বলেও অভিহিত করা হয়। মুকুন্দ দাস স্বদেশী ও অসহযোগ আন্দোলনের সময় বহু স্বদেশী বিপ্লবাত্মক গান ও নাটক রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি ছিলেন স্বদেশী যাত্রার প্রবর্তক। প্রকৃতপক্ষে তিনি একজন চারণকবি ছিলেন।

মুকুন্দ দাস জীবনী – Mukunda Das Biography in Bengali

নামমুকুন্দ দাস (যজ্ঞেশ্বর)
জন্ম22nd ফেব্রুয়ারি 1878
পিতাগুরুদয়াল দে
মাতাশ্যামাসুন্দরী দেবী
জন্মস্থানঢাকা জেলার বিক্রমপুর পরগণার বানরী গ্রামে
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয়
পেশাকবি
মৃত্যু18th মে 1934 (বয়স 56)

মুকুন্দ দাসের জন্ম: Mukunda Das’s Birthday

মুকুন্দ দাস ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ২২শে ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।

মুকুন্দ দাসের পিতামাতা ও জন্মস্থান: Mukunda Das’s Parents And Birth Place

ঢাকা জেলার বিক্রমপুর পরগণার বানরী গ্রামে ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ২২শে ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার গুরুদয়াল দের ঔরসে শ্যামাসুন্দরী দেবীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম গুরুদয়াল দে এবং মাতার নাম শ্যামাসুন্দরী দেবী ও তার স্ত্রী সুভাষিণী দেবী। তার বাবার দেওয়া নাম ছিল যজ্ঞেশ্বর দে এবং ডাক নাম ছিল যজ্ঞা।

মুকুন্দ দাসের শিক্ষাজীবন: Mukunda Das’s Educational Life

গুরুদয়াল কাজ করতেন বরিশালে এক ডেপুটির আদালতে। কর্মসূত্রে তাকে বরিশালে থাকতে হতাে। পরে সপরিবারে এখানেই এসে বসবাস করেন। এখানেই বাল্যের স্কুলের পড়া আরম্ভ হয় মুকুন্দ দাসের। সংসারে স্বচ্ছলতার অভাব ছিল। তাই স্কুলের পড়া বেশিদূর এগোয়নি। ফলে কিশাের বয়স থেকেই পিতার মুদি দোকানে বসতে আরম্ভ করেন।

মুকুন্দ দাসের ছোটবেলা: Mukunda Das’s Childhood

ছেলেবেলা থেকেই ছিলেন স্বাধীনচেতা আর অত্যন্ত দুরন্ত। গানের গলা ছিল মিষ্ট। শুনে শুনেই গান তুলতে পারতেন। বরিশালের তৎকালীন নায়েব বীরেশ্বর গুপ্ত একটি কীর্তনের দল করেছিলেন। মুকুন্দ সেই কীর্তনদলে যােগ দেন ১৯ বছর বয়সে। পরে নিজেই একটি দল গড়েন। নানা পূজা পার্বণে কীর্তনের দল নিয়ে বরিশালের বিভিন্ন স্থানে যেতে হত। এইভাবে অনেক কীর্তনীয়া দলের সঙ্গে যােগাযােগ হয়। তিনি পছন্দমত গান অন্য কীর্তনীয়াদের কাছ থেকেটুকে রাখতেন। পরে এইসব উপাদান তার কীর্তনসঙ্গীত নামক সংকলন গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়।

মুকুন্দ দাসের প্রথম জীবন: Mukunda Das’s Early Life

মুকুন্দ দাস ১৯০২ খ্রিঃ বৈষ্ণবমন্ত্রে দীক্ষা নেন রামানন্দ বা হরিবােলানন্দ নামের এক সর্বত্যাগী সাধুর কাছে। দীক্ষা গ্রহণের পরতার নাম হয় মুকুন্দ দাস। পরবর্তীকালে এই নামেই তিনি দেশবিখ্যাত হন।

বরিশালের মুকুটহীন সম্রাট বলে আখ্যাত মনস্বী অশ্বিনীকুমার দত্তের সংস্পর্শে এসে মুকুন্দ দাস স্বদেশ মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হন। তারই প্রেরণায় মুকুন্দ দাস হয়ে ওঠেন বাংলার চারণকবি।

সম্প্রদায়গত কোনপ্রকার গোঁড়ামি তার মধ্যে ছিল না। বৈষ্ণব ও শাক্তর ভেদাভেদ যেমন তিনি মানতেন না তেমনি মন্দির মসজিদের পার্থক্যও কখনাে করেন নি। তার সাধন সঙ্গীত গুলিতে এই ভাবসমন্বয়ের প্রকাশ ঘটেছিল।

মুকুন্দ দাসের কর্ম জীবন: Mukunda Das’s Work Life

মুকুন্দ দাস নিজেই যাত্রাপালা ও গান রচনা করতেন। গানে সুর সংযােজনও নিজেই করতেন। মনােমােহন চক্রবর্তী, হেমচন্দ্র মুখােপাধ্যায় এবং অশ্বিনীকুমার দত্তের গানও করতেন তিনি। একসময় বরিশাল হিতৈষী পত্রিকায় লিখতে আরম্ভ করেন।

মুকুন্দ দাসের দলের যাত্রাগান এমনই জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল যে সারা বরিশাল তাকে গানের দল নিয়ে ঘুরতে হত। সেই সময়ে বিভিন্ন দেশবরেণ্য নেতা এবং স্বয়ং রবীন্দ্রনাথতার গান শুনে মুগ্ধ হন। তার মাতৃপূজা যাত্রাপালাটি যুবকদের স্বদেশচেতনায় উদ্বুদ্ধ করত।

স্বদেশী আন্দোলনে বিশেষ করে বিদেশী বর্জন আন্দোলনে মুকুন্দ দাস বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গনারী রেশমীচুড়ি আর পরাে না তার এই গানটি এক সময়ে বাংলার গ্রামে গ্রামে তীব্র উন্মাদনা জাগিয়েছিল।

অশ্বিনীকুমারের নিকট স্বদেশমন্ত্রে দীক্ষিত হবার পরে মুকুন্দ দাস গ্রামে গ্রামে দেশাত্মবােধক গান ও স্বদেশী যাত্রাভিনয় করে বেড়াতেন। ফলে তিনি বরিশালে ইংরাজ সরকারের কোপদৃষ্টিতে পড়েন। ১৯০৮ খ্রিঃ তাকে একবার গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জামিনে মুক্ত হন।

মাতৃপূজা গীত সংকলনের ‘ ছিল ধান গােলা ভরা, শ্বেতহঁদুরে করল সারা গানটির জন্য তার জরিমানা হয়। তিন বছর কারাদণ্ডও ভােগ করতে হয়।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনে মুকুন্দ দাস অংশ গ্রহণ করেছিলেন তার সংগীত ও যাত্রাপালা নিয়ে। তার গানের মাধ্যমে তিনি জনসাধারণকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।

মুকুন্দ দাসের পুরস্কার ও সম্মান: Mukunda Das’s Awards And Honors

এই সূত্রে তিনি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন এবং সুভাষচন্দ্রের ও সংস্পর্শে এসেছিলেন। বাংলার জনগণই তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে চারণকবি আখ্যা দিয়েছিল। গান করে তিনি সারাজীবনে ৭ শত মেডেল ও বহু পুরস্কার পেয়েছিলেন।

মুকুন্দ দাসের রচনা: Written by Mukunda Das

মুকুন্দ দাসের উল্লেখযােগ্য রচনা সাধন সঙ্গীত, পল্লীসেবা, ব্রহ্মচারিণী, পথ, সাথী, সমাজ, কর্মক্ষেত্র প্রভৃতি।

মুকুন্দ দাসের মৃত্যু: Mukunda Das’s Death

১৯৩৪ খ্রিঃ ১৮ ই এপ্রিল বাংলা মায়ের চারণ সন্তান মুকুন্দ দাস পরলােক গমন করেন।

Leave a Comment