নসট্রাদামুস জীবনী | Nostradamus Biography in Bengali

Rate this post

নসট্রাদামুস জীবনী: Gksolve.in আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে Nostradamus Biography in Bengali. আপনারা যারা নসট্রাদামুস সম্পর্কে জানতে আগ্রহী নসট্রাদামুস এর জীবনী টি পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।

নসট্রাদামুস কে ছিলেন? Who is Nostradamus?

নসট্রাদামুস বা মিশেল দ্য নোস্ত্রদাম (১৪ই ডিসেম্বর বা ২১শে ডিসেম্বর ১৫০৩ – ২রা জুলাই ১৫৬৬), ছিলেন একজন ফরাসি ভবিষ্যদ্বক্তা, জ্যোতিষী, লেখক এবং ঔষধ প্রস্তুতকারক ও চিকিৎসা সামগ্রী বিক্রেতা। তিনি তার লিখিত ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ প্রকাশ করে বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত হয়ে উঠেন। তিনি অতি পরিচিত, তার “Les Propheties” (দ্য প্রফাসিস) বইয়ের জন্য, যা ১৫৫৫ সালে প্রথম সংস্করণ করা হয়। এই বই প্রকাশের পরে যা তার মৃত্যুর পরে খুব কমই ছাপানো হয়েছে, নসট্রাদাম সংবাদপত্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং বিশ্বের অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনার ভবিষ্যদ্বাণীর জন্য তাকে বিখ্যাত করে তুলেন।

নসট্রাদামুস জীবনী – Nostradamus Biography in Bengali

নামনসট্রাদামুস
জন্ম14 ডিসেম্বর 1503
পিতাজুম (বা জাক) দে নসট্রাদাম
মাতারেনিয়া (বা রেনে) দে সা-রেমি
জন্মস্থানসেন্ট-রেমি-ডি-প্রোভেন্স, প্রোভেন্স, ফ্রান্সের রাজ্য
জাতীয়তাফরাসি
পেশাভবিষ্যদ্বক্তা, জ্যোতিষী, লেখক এবং ঔষধ প্রস্তুতকারক
মৃত্যু1 বা 2 জুলাই 1566 (বয়স 62)

নসট্রাদামুস এর জন্ম: Nostradamus’s Birthday

নসট্রাদামুস 14 ডিসেম্বর 1503 জন্মগ্রহণ করেন।

নসট্রাদামুস এর পিতামাতা ও জন্মস্থান: Nostradamus’s Parents And Birth Place

বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভবিষ্যতদ্রষ্টা রূপে বর্ণিত বিশিষ্ট চিন্তাবিদ নস্ত্রাদামুস ১৫০৩ খ্রিঃ ২৩ শে ডিসেম্বর ফ্রান্সের প্রভাসের সেন্ট মেরি অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। তিনি লাতিন, হিব্রু, গ্রীস প্রভৃতি ভাষায় ব্যুৎপত্তি লাভ করেছিলেন যৌবনারম্ভের আগেই।

নসট্রাদামুস এর কর্ম জীবন: Nostradamus’s Work Life

জ্যোতির্বিদ্যা এবং চিকিৎসা বিদ্যায় তার অসাধারণ দক্ষতা ছিল। রোগ নির্ণয়ের ক্ষমতাও ছিল বিস্ময়কর। তিনি প্লেগনিরাময়ের ওষুধ আবিষ্কার করেছিলেন বলে জানা যায়। অল্প বয়স থেকেই বিচিত্রভাবে আগামী দিনের বর্ণনা করতে পারতেন নস্ত্রাদামুস। পরবর্তিকালে এই রহস্যময় ভবিষ্যদ্বাণীর সূত্রেই তিনি হয়ে ওঠেন কিংবদন্তি পুরুষ। তার চাঞ্চল্যকর ভবিষ্যৎ – বাণীগুলো আরম্ভ হয় ১৫৫৭ খ্রিঃ থেকে যখন তাঁর বয়স ৪৪ বছর।

আগামী কয়েক শতকের বিশেষ বিশেষ ঘটনার কথা তিনি আগাম লিপিবদ্ধ করে গেছেন। প্রতিটি ভবিষ্যদ্বাণী চার লাইনের কবিতায় রচিত। লে পফেটিস ডে মিশেল ডে নস্ত্রাদামুস (Prophecy of Nostradamus) গ্রন্থের দশটি খন্ডে তার ভবিষ্যদ্বাণীগুলি বিধৃত। ১০৪ পংক্তিতে ২৬ টি কবিতা দিয়ে এক একটি খন্ড রচিত। জীবিতকালের মধ্যেই এই গ্রন্থের নয়টি খন্ড তিনি সম্পূর্ণ করতে পেরেছিলেন। দশম খন্ড সম্পূর্ণ করার আগেই পরলোক গমন করেন।

গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় তাঁর মৃত্যুর পরে ১৫৬৮ খ্রিঃ ফ্রান্সের লিয়ঁ শহরে। ফরাসী প্রাচীন সাহিত্যের বিদুষী পন্ডিত এরিকা চিথ্যামকৃত ইংরাজি অনুবাদ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে নস্ত্রাদামুস – এর নাম। সেই সঙ্গে শুরু হয় লৌকিক – অলৌকিকের প্রশ্নে বিশ্বাস – অবিশ্বাস নিয়ে বিতর্কের ঝড়। রহস্যময় পুরুস নস্ত্রাদামুস এর ভবিষ্যৎ দর্শনের পদ্ধতি ছিল বিচিত্র ও বিস্ময়কর।

গভীর রাত্রিতে তিনি নিজের ঘরে টেবিলের ওপরে ছোট একটা পেতলের টুলের ওপরে রাখতেন একপাত্র জল। টেবিলে বসে দু’পায়ের পাতা এবং আলখাল্লার হাতাদুটি জলে ভিজিয়ে নিতেন। পরে পাত্রের জলের দিকে কিছুক্ষণ নিবিষ্ট ভাবে তাকিয়ে থাকতেন। ধীরে ধীরে তার চোখের সামনে জলে ভেসে উঠত ভবিষ্যতের ঘটনাবলীর প্রতিচ্ছবি। – নস্ত্রাদামুসের নস্ত্রাদামুসের যে সব ভবিষ্যৎবাণী বিশ্বাসী অবিশ্বাসী নির্বিশেষে পৃথিবীব্যাপী বিস্ময় উৎপাদন করেছে সেগুলি হল ১৬৬৮ খ্রিঃ লন্ডনের প্লেগ ও অগ্নিকান্ড।

সফল ভবিষ্যদ্বাণীগুলির তালিকা এরকম – নেপোলিয়নের উত্থান ও পতন এবং হেলেনা দ্বীপে তার নির্বাসন, লুই পাস্তুরের রোগজীবাণু আবিষ্কার এবং জলাতঙ্ক রোগের নিরাময় কথা, ফরাসী বিপ্লবে সম্রাট লুই – এর নির্যাতন, হিরোসিমা ও নাগাসাকিতে আণবিক বোমা বিস্ফোরণ, অষ্টম এডওয়ার্ড – এর সিংহাসন ত্যাগ, মুসোলিনী এবং হিটলারের অভ্যুত্থান, ইংলন্ডের গৃহযুদ্ধ, ট্রাফালগার এবং ওয়াটার্লুর যুদ্ধ, কলঙ্কময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, কেনেডি হত্যা, ইতালির ফ্লু, জার্মানির বিভাজন ও পুনর্মিলন, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম প্রভৃতি।

তাঁর রহস্যময় চতুষ্পদীতে নস্ত্রাদামুস হিটলার সম্পর্কে বলেছিলেন, বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ইউরোপের একদেশে এমন একজন মানুষ ক্ষমতায় আসবে যার জন্য ধ্বংস হয়ে যাবে অর্ধেক পৃথিবী। তার দেশে গুণীজনদের পিঞ্জরে আবদ্ধ করা হবে। সেনাবাহিনী ন্যায় – নীতি বর্জন করে বন্যার স্রোতের মত নদী পার হয়ে ঝাপিয়ে পড়বে অন্য দেশে। এই বর্ণনা থেকেই চোখের ওপর ভেসে ওঠে নাৎসি জার্মানির চ্যান্সেলর বিশ্বত্রাস অ্যাডলফ হিটলারের ছবি।

তার আগ্রাসী ক্ষমতার দত্তে রক্তস্নাত হয়েছিল পৃথিবী। অ্যালবার্ট আইনস্টাইন, সিগমুন্ড ফ্রয়েড এবং ওটো হান প্রমুখ গুণীজনের নির্যাতন ও বন্দীত্বের বিষয় মানুষের ইতিহাসের কলঙ্ক রচনা করেছে। আগামী দিনের জন্য নস্ত্রাদামুস এর ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে এই রকম ১৯৬৬ খ্রিঃ থেকে ১৯৭১ খ্রিঃ জুলাই মাসের মধ্যে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে রক্তক্ষয়ী বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলা।

দুই মিত্র দেশ হয়ে উঠবে পরস্পরের শত্রু। বহু নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাবে। যারা বেঁচে থাকবে তাদের জীবন হবে দুর্বিসহ। আমেরিকায় ঘটবে ভয়াবহ ভূমিকম্প, খ্রিষ্টান সাম্রাজ্যে পোপের আধিপত্য শেষ হবে। পৃথিবীতে জেগে উঠবে তিন মহাশক্তিধর রাষ্ট্র। পাশ্চাতের ওপর প্রভাব বিস্তার করবে প্রাচ্যদেশ। ভারতও গণ্য হবে মহাশক্তিধর রাষ্ট্র হিসাবে।

নসট্রাদামুস এর মৃত্যু: Nostradamus’s Death

২রা জুলাই ১৫৬৬ নসট্রাদামুস এর জীবনাবসান হয়।

Leave a Comment