পশ্চিম ভারতে পেট্রোরসায়ন শিল্পের উন্নতির কারণ গুলি লেখ?

Rate this post

পশ্চিম ভারতে পেট্রোরসায়ন শিল্পের উন্নতির কারণ গুলি লেখ?:

পেট্রোরসায়ন শিল্প আধুনিক শিল্প গুলির মধ্যে অন্যতম। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও এই পেট্রোরসায়ন শিল্পের বিকাশ সাধন ঘটেছে। তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা কালে ১৯৬৬ সালে মহারাষ্ট্রের ট্রম্বে তে প্রথম প্রট্রোরসায়ন শিল্পের বিকাশ ঘটে।  ভারতের প্রধানত পশ্চিমাঞ্চলে মহারাষ্ট্র, গুজরাট  রাজ্যে ভারতের সর্বাধিক পরিমান পেট্রোরসায়ন শিল্প গড়ে উঠেছে । ভারতের পশ্চিমাংশে গড়ে ওঠা প্রধান প্রধান পেট্রোরসায়ন শিল্প কেন্দ্র গুলি হল – মহারাষ্ট্রের মুম্বাই, ট্রম্বে, থানে-বেলাপুর ও গুজরাটের কয়ালি, জামনগর, হাজিরা ও  ভাদোদড়া । পশ্চিম ভারতে পেট্রোরসায়ন শিল্পের উন্নতির কারণ নিম্নে আলোচনা করা হল – 

  • সহজলভ্য কাঁচামাল – গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের বোম্বে হাই, অ্যাঙ্কেলেশ্বর, আলিয়াবেত, কাম্বে, কালোল, ওয়াভেল ও সাম্বা তৈলখনি গুলি থেকে প্রচুর খনিজ তেল উত্তোলন হয়, এই খনিজ তেলের উপর ভিত্তি করে এখানে পেট্রোরসায়ন শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। 
  • তৈল শোধনাগার –  এই অঞ্চলে প্রাপ্ত কাঁচামালের উপর ভিত্তি করে কয়ালি, জামনগর, ট্রম্বে প্রভৃতি অঞ্চলে খনিজ তেল শোধনাগার স্থাপিত হয়েছে। আর এই খনিজ তেল শোধনাগার  থেকে নির্গত খনিজ তেলের  উপজাত দ্রব্যই হল পেট্রোরসায়ন শিল্পের প্রধান কাঁচামাল , যা এই অঞ্চলের শিল্পে ব্যবহৃত হয়। 
  • বন্দরের সুবিধা – মুম্বাই, কাণ্ডালা, জওহরলাল নেহেরু, মুদ্রা প্রভৃতি আধুনিক বৃহৎ বন্দরের মাধ্যমে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলি থেকে খনিজ তেল আমদানি এবং পেট্রোরসায়ন জাত দ্রব্যের রপ্তানির সুবিধা রয়েছে। 
  • সুলভ বিদ্যুৎ শক্তি  – পশ্চিমঘাট পার্বত্য অঞ্চলের সুলভ জলবিদ্যুৎ; তারাপুর, কাকড়াপার প্রভৃতি পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং স্থানীয় কয়েকটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এই অঞ্চলের পেট্রোরসায়ন শিল্পের প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। 
  • উন্নত পরিকাঠামো – পেট্রোরসায়ন শিল্পের সাথে অন্যান্য বহু শিল্প জড়িত থাকে বলে শিল্পের নানান প্রকার পরিকাঠামো এবং বিস্তৃত সমতল ভূমির প্রয়োজন হয়। মহারাষ্ট্র ও গুজরাট ভারতের অন্যতম প্রধান উন্নত রাজ্য হওয়ায় পরিকাঠামোগত দিক থেকে খুবই উন্নত। 
  • চাহিদা বা বাজার  – পেট্রোরসায়ন শিল্প থেকে বর্তমান কালে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও প্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপন্ন হয়, তাই পেট্রোরসায়ন জাত দ্রব্যের চাহিদা প্রচুর  এবং ক্রমাগত তা বেড়েই চলেছে। তাই এই শিল্পজাত দ্রব্যের অভ্যন্তরীন চাহিদার সাথে সাথে বৈদেশিক চাহিদাও রয়েছে।
  •  সুলভ ও দক্ষ শ্রমিক – ভারতের এই অঞ্চলের জনসংখ্যা অনেক বেশি, তাই শিল্পের প্রয়োজনীয় শ্রমিকের অভাব হয় না । তাছাড়া ভারতের এই অঞ্চলেই প্রথম পেট্রোরসায়ন শিল্পের বিকাশ ঘটায় এখানকার শ্রমিক গুলো বংশপরম্পরায় এই কাজের সাথে যুক্ত থাকায় শ্রমিক গুলো অনেক দক্ষ। 
  • মূলধনের জোগান – ভারতের এই দুটি রাজ্য অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেক উন্নত। তাছাড়া দেশের বড়ো বড়ো শিল্প পতি ( আম্বানী, মফতলাল) এই অঞ্চলে আছে বলে এই শিল্পের জন্য মূলধনের অভাব হয় না। 

উপরিউক্ত কারণ গুলির উপস্থিতি ভারতের পশ্চিমাংশে পেট্রোরসায়ন শিল্পের বিকাশে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। 

Leave a Comment