বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে কৃষকদের ভূমিকা | বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে কৃষকদের ভূমিকা কি ছিল?
বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে কৃষকদের ভূমিকা:
1905 খ্রীঃ লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে বাংলায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলনে বাংলার সর্বস্তরের মানুষ যোগদান করলেও কৃষকরা সক্রিয় অংশগ্রহণ করেননি। এই আন্দোলন সম্পর্কে বাংলার কৃষকদের বিশেষ কোনো আগ্রহ ছিল না। কৃষকদের দুরাবস্থার প্রতিকার, খাজনা বৃদ্ধি প্রতিরোধ, জমিদারি অত্যাচার বন্ধ করা প্রভৃতি বিষয়গুলিকে স্বদেশী নেতারা উপেক্ষা করায় কৃষকদের সঙ্গে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের কোনো আত্মিক যোগ গড়ে ওঠেনি। উপরন্ত এই সময় বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় হিন্দু ও মুসলিম কৃষকদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের অঙ্গ হিসাবে স্বদেশী আন্দোলন তথা বিদেশী দব্য বয়কট আন্দোলন শুরু হলে তা কৃষকদের কাছে অভিশাপ রুপে দেখা দেয়। কারণ স্বদেশী দব্য বিদেশি দব্যের থেকে মহার্ঘ হয়ে পরায় সেগুলি ব্যবহার করা কৃষকদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে। স্বদেশী দ্রব্য কেনার জন্য কৃষকদের জোরজবরদস্তি করা হলে তাদের মধ্যে খুব পুঞ্জিভূত হতে থাকে। তাই কৃষকরা মনেপ্রাণে এই আন্দোলন মেনে নিতে পারেননি। ড.সুমিত সরকারের মতে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর নেতৃত্বে পরিচালিত বঙ্গবন্ধু বিরোধী আন্দোলনে ‘সুনির্দিষ্ট কৃষিভিত্তিক কর্মসূচি’র অভাবের জন্য দরিদ্র কৃষকদের সামিল করা যায়নি। তবে বাংলার কিছু কিছু অংশে কৃষকরা স্বদেশী ও বয়কট আন্দোলনে সীমিতভাবে সামিল হয়েছিল। অনেক কৃষক পরিবার বিলাতি পণ্য বর্জন করেছিল। অনেক কৃষক পরিবারের রান্নাঘরে বিলাতি লবণ, চিনি প্রকৃতির ব্যবহার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।