গোমুখাসন করার নিয়ম ও পদ্ধতি-Rules and Methods Of Gomukhasana
গোমুখাসন (Gomukhasana) যোগা করার পদ্ধতি: প্রথমে মেরুদণ্ড সােজা করে দুই পা সামনের দিকে ছড়িয়ে বসুন। এবার বাম পায়ের হাঁটু ভেঙে ডান পায়ের নিচ দিয়ে নিয়ে এসে ডান নিতম্বের কাছে নিয়ে রাখুন। বাম পায়ের গােড়ালি ডান নিতম্বের সাথে লেগে থাকবে। তবে যদি না। লাগাতে পারেন জোর করে লাগাতে যাবেন না। আস্তে আস্তে অভ্যাস হলে লেগে যাবে।
এবার ডান পা হাঁটু ভেঙে বাম উরুর ওপর দিয়ে এনে এমনভাবে রাখুন যাতে বাম সাথে। ডান পায়ের গােড়ালি স্পর্শ করে। পায়ের পাতার পিঠ মাটিতে বিছানাে। থাকবে (1নং ছবি দেখুন)। এবার ডান হাত ডান কাঁধের ওপর নিয়ে এসে যতদূর পারেন পিঠের ওপর রাখুন। হাতের পাতা উপুড় অবস্থায় পিঠের ওপর থাকবে।
এবার বাম হাত কোমরের কাছ থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে এসে পিঠের ওপর রাখা ডান হাতটি ধরতে চেষ্টা করুন (2 নং ছবির মতাে)। ডান হাত দিয়ে বাম হাত আটকে ধরুন। এ আসনে যে দিকের পা ওপরে থাকবে সে দিকের হাত কাঁধের ওপরে থাকবে, হাত কানের সাথে লেগে থাকবে। অর্থাৎ বাম পা ওপরে থাকলে বাম হাত কাঁধের ওপর থাকবে। ডান পা ওপরে থাকলে ডান হাত কাঁধের ওপর থাকবে। মেরুদণ্ড ও শরীর সবসময় সােজা থাকবে। সামনে বা পেছনে, ডানে বা বামে যেন বেঁকে না যায়। দম স্বাভাবিক রেখে ডান পা ওপরে রাখা অবস্থায় 20 থেকে 30 সেকেন্ড অবস্থান করুন। আবার বাম পা ওপরে রাখা অবস্থায় 20 থেকে 30 সেকেন্ড অবস্থান করুন। এভাবে ডান -বামে মিলে এক প্রস্থ হবে।
এভাবে তিন থেকে পাঁচ প্রস্থ করতে পারেন। পরে অভ্যাস হলে একবারেই এক পাশে এক থেকে তিন মিনিট করতে পারেন। আর যদি 20 সেকেন্ড ও হাত ধরে রাখতে না পারেন অসুবিধে নেই। যতটুকু সহজভাবে পারেন করুন তাতেও ফল হবে। নিয়মিত চর্চা করলে সঠিক ভঙ্গিমায় আসনটি অনেকক্ষণ করতে পারবেন। এক হাঁটুর ওপর অন্য হাঁটু এমনভাবে থাকে-দেখতে গরুর মুখের মতো দেখায়, তাই এ আসনের নাম গোমুখাসন (Gomukhasana)।
গোমুখাসন করার উপকারিতা-Benefits Of Gomukhasana
1. এ আসনে মানসিক ও স্নায়বিক উত্তেজনা দূর হয়।
2. নিয়মিত এ আসনটি অভ্যাস করলে হাঁটুতে বাতব্যথা ও বাতজনিত রােগ হতে পারে না।
3. হাত ও কাধের সন্ধিস্থলের জন্যে বিশেষ উপকারী।
4. এ আসন নিয়মিত অনুশীলন করলে কোনাে স্ত্রীরােগ হতে পারে না এবং যৌন সংযম বজায় রাখা সহজ হয়।
5. যাদের ফ্রোজেন শােলডার (frozen shoulder) রােগ রয়েছে অর্থাৎ হাত ওপরে তুলতে পারেন না তাদের জন্যে এ আসন বিশেষ উপকারী।
6. নিয়মিত এ আসন করলে অর্শ, বাত, সায়াটিকা, মূত্রদাহ হতে পারে না।
7. যারা অনেকক্ষণ কাজ করতে করতে কাধের কাছে ব্যথা অনুভব করেন, চিনচিন ব্যথা করে-মনে হয় একটি শলাকা বা সুঁই ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে তারা নিয়মিত এ আসন করলে বিশেষভাবে উপকৃত হবেন।
8. রাতে যাদের ভালাে ঘুম হয় না তারা রাতে খাবারের পরে বজ্ৰাসন করে ঘুমানাের আগে এ আসন নিয়মিত করলে অনিদ্রা দূর হয়।