উপগ্রহ চিত্র কাকে বলে? উপগ্রহ চিত্রের বৈশিষ্ট্য ব্যবহার ও গুরুত্ব

Rate this post

উপগ্রহ চিত্র কাকে বলে? উপগ্রহ চিত্রের বৈশিষ্ট্য ব্যবহার ও গুরুত্ব: পৃথিবী প্রদক্ষিণকারী কৃত্রিম উপগ্রহে সংস্থাপিত সেন্সরের সাহায্যে গৃহীত ভূপৃষ্ঠের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক দৃশ্যপটের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে যে আলোক চিত্র প্রস্তুত করা হয়, তাকে উপগ্রহ চিত্র বলে। উপগ্রহ চিত্র তৈরীর সময় প্রতিফলিত সূর্য রশ্মি ব্যবহৃত হয়, যা তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ রূপে উপগ্রহের সংস্থাপিত সেন্সরে ধরা পড়ে।

উপগ্রহ চিত্রের বৈশিষ্ট্য

উপগ্রহ চিত্রের বৈশিষ্ট্য গুলি হল:

১)প্রকৃতি-উপগ্রহ চিত্র হল কৃত্রিম উপগ্রহে সংস্থাপিত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সেন্সরের সাহায্যে গৃহীত ভূপৃষ্ঠের অংশ বিশেষের ডিজিটাল পরিসংখ্যান, যা ভূপৃষ্ঠের বস্তুগুলিকে স্পর্শ না করে দূর সংবেদনের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।

২)পিক্সেল-উপগ্রহ চিত্রের ক্ষুদ্রতম উপাদান হলো পিক্সেল। এই পিক্সেল উপগ্রহ চিত্রে ভূপৃষ্ঠের নির্দিষ্ট অংশকে উপস্থাপন করে। পিক্সেল সংখ্যা বেশি হলে উপগ্রহ চিত্র পরিষ্কার ও উচ্চমানের হয়।

৩)সেন্সর ব্যান্ড-ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন বস্তু থেকে বিকিরিত তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গের নির্দিষ্ট অংশ উপগ্রহে সংস্থাপিত সেন্সরের যে ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশে লিপিবদ্ধ হয়, তাকে সেন্সর ব্যান্ড বলে। উপগ্রহ চিত্র গ্রহণ কালে প্রয়োজন মত এই সেন্সর ব্যান্ড ব্যবহৃত হয়।

৪)অ্যানোটেশন লাইন-উপগ্রহ চিত্রের ওপরে দুটি ও নিচে একটি অ্যানোটেশান লাইন থাকে। এই অ্যানোটেশন লাইনে উপগ্রহের নাম, উপগ্রহ চিত্রের ধরন, উপগ্রহ চিত্র সংগ্রহ ও প্রস্তুতের স্থান, তারিখ ও সময়, সেন্সর বিবরণ,ডেটা প্রস্তুতকারী সংস্থা ইত্যাদি তথ্য উল্লেখ থাকে।

৫)ছদ্ম রঙ-রাত্রে ভূপৃষ্ঠের বস্তুগুলি প্রকাশ করার সময় প্রকৃত রঙের পরিবর্তে ছদ্ম রং ব্যবহার করা হয়। যেমন-স্বাভাবিক উদ্ভিদ প্রকাশের ক্ষেত্রে লাল, পতিত জমি প্রকাশের ক্ষেত্রে সবুজ রঙ ব্যবহার করা হয়।

উপগ্রহ চিত্রের ব্যবহার ও গুরুত্ব

উপগ্রহ চিত্রের গুরুত্বগুলি হল নিম্নরূপ:

১)উপগ্রহ চিত্রের সাহায্যে একই সঙ্গে ভূপৃষ্ঠের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

২)উপগ্রহ চিত্রের সাহায্যে দূর সংবেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন উপাদানগুলির অবস্থা পর্যালোচনা করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়।

৩)উপগ্রহ চিত্রের সাহায্যে দূর সংবেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন বস্তুর আলাদা আলাদা আলোক রশ্মি প্রতিফলন থেকে সহজেই ভূপৃষ্ঠের সম্পদ সমীক্ষা করা যায়।

৪)উপগ্রহ চিত্রের সাহায্যে সহজেই কোন অঞ্চলের ভূমির ব্যবহার মানচিত্র এবং ভূ আবরণকারী মানচিত্র প্রস্তুত করা হয়।

৫)বর্তমানে সৈন্য চলাচল নিয়ন্ত্রণ, শত্রুপক্ষের ছাউনি ও গতিবিধি অনুসন্ধান, বিপদাপন্ন জাহাজ, বিমান ও সাঁজোয়া গাড়ি উদ্ধার ইত্যাদি সামরিক কাজে উপগ্রহ চিত্র ব্যবহার করা হয়।

Leave a Comment