কৃষি বনসৃজন কাকে বলে?: কৃষি বনসৃজন ধারণাটি ১৯৭০ এর দশকে ব্যবহার করা হয়। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে এই কৃষি বনসৃজন ব্যবস্থার ব্যাপক প্রচলন লক্ষ্য করা যায়। কৃষি বনসৃজন ব্যবস্থায় জমির স্থিতিশীল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জমির মোট উৎপাদন ক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটানোই হচ্ছে মূল লক্ষ্য।
সংজ্ঞা – যে পদ্ধতিতে একই জমিতে ফসল উৎপাদনের সাথে বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে মানুষের দৈনন্দিন চাহিদার পূরণ করাকেই কৃষি বনসৃজন বলে।
কৃষি বনসৃজন হল এক ধরণের ভূমি ব্যবহার ব্যবস্থা যেখানে কোনো কৃষিজমি বা পশু খামারে একই সঙ্গে কৃষি ফসল উৎপাদন বা পশুপালনের সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের বৃক্ষ রোপন করে বাস্তুতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক মুনাফা লাভ কে বোঝানো হয়ে থাকে।
কৃষি বনসৃজন এর বৈশিষ্ট্য
কৃষি বনসৃজন এর প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি হল:
১. কৃষিবনসৃজনে সাধারণত একই সাথে দুই বা তার বেশি উদ্ভিদ প্রজাতি রোপন করা হয়, এদের মধ্যে একটি অবশ্যই কাঠ উৎপাদনকারী বৃক্ষ হবে।
২. কৃষিবনসৃজন ব্যবস্থায় সব সময় উৎপাদিত সামগ্রী একের বেশি হবে।
৩. কৃষি বনসৃজন ব্যবস্থার আবর্তন বা চক্র সব সময় এক বছরের বেশি হবে।
কৃষি বনসৃজনের উদ্দেশ্য – কৃষি বনসৃজনের মধ্য দিয়ে কৃষকের ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য সাধিত হলেও সামাজিক কিছু উদ্দেশ্যও সাধিত হয়।
কৃষকের ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য
১. এর মধ্য দিয়ে কৃষক তার আয় বৃদ্ধি করেন।
২. কৃষক তার প্রয়োজনীয় জ্বালানি কাঠের জোগান নিশ্চিত করেন।
৩. ফলমূল সংগ্রহের উদ্দেশ্য নিয়ে আম, জাম, কাঁঠাল প্রভৃতি ফলের গাছ লাগানো হয়।
৪. জমিতে জৈব সারের জোগান অব্যাহত রাখাও এই বনসৃজনের উদ্দেশ্য।
৫. গৃহপালিত পশুর জন্য খাদ্যের জোগান বজায় থাকে।
সামাজিক ও পরিবেশগত উদ্দেশ্য
১. কৃষকরা নিজেদের প্রয়োজনেই অব্যবহৃত জমিতে গাছ লাগানোর ফলে এই সকল জমির কার্যকরিতা বৃদ্ধি পায়।
২. কৃষি বনসৃজনের ফলে গাছের পরিমান বৃদ্ধি পায়, ফলে দূষণের পরিমান কমে।
৩. এর মাধ্যমে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা পায় ও বাস্তুতন্ত্র সুরক্ষিত হয়।