বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ কাকে বলে? বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের গুরুত্ব

Rate this post

বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ কাকে বলে? বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের গুরুত্ব: পৃথিবীর যে কোনাে অঞ্চল যেখানে সজীব বস্তু পাওয়া যায় তাকে বায়ােস্ফিয়ার বলা হয়। অর্থাৎ পৃথিবীর সকল বাস্তুতন্ত্রকেই একত্রে বায়ােস্ফিয়ার বলে। অর্থাৎ পৃথিবীর পরিবেশে অজৈব এবং জৈব উপাদানের সমন্বয়ে যত বাস্তুতন্ত্র গঠিত হয় তাদের সমষ্টিকে বায়ােস্ফিয়ার (biosphere) বলা যায় । এজন্য বায়ােস্ফিয়ারকে ইকোস্ফিয়ার ও বলা হয়।

UNESCO দ্বারা মানুষ ও জীবমণ্ডল প্রোগ্রামের অধীনে ১৯৭১ সালে জীবমণ্ডল সংরক্ষন অঞ্চল বা বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। এই বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ চিহ্নিত করনের তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য হল –

১)  জীববৈচিত্র্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সংরক্ষন

২) অর্থনৈতিক বিকাশ সাধন

৩) গবেষণা, শিক্ষা, পর্যবেক্ষন ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার প্রসার ।

উপরিউক্ত তিনটি উদ্দেশ্য পূরনের জন্য একটি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ কে তিনটি প্রধান অঞ্চলে ভাগ করা হয়, যেমন –

ক) কেন্দ্র অঞ্চল 

খ) নিরপেক্ষ অঞ্চল   

গ) পরিবর্তনশীল অঞ্চল

এই তিনটি অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন কাজের অনুমতি দেওয়া হয়ে থাকে। তাই জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের সাথে সাথে  মানুষের বিভিন্ন চাহিদা পূরনে বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে। সারা পৃথিবীব্যাপী ১২৪ টি দেশে মোট ৭০১ টি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ  চিহ্নিত করা হয়েছে। 

বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের গুরুত্ব গুলি হল :

ক] একটি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের মধ্যে দুই থেকে তিনটি জাতীয় উদ্যান থাকতে পারে অর্থাৎ একটি বৃহৎ অঞ্চলে জীবপ্রজাতিকে তার প্রাকৃতিক বাসস্থানে সংরক্ষন করা হয়ে থাকে । জীব প্রজাতির সংরক্ষনে বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে। 

খ]  বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের পরিবর্তনশীল অঞ্চলে মানুষ বাসস্থান গড়ে তোলে, চাষবাস করে এবং পার্শ্ববর্তী বনভূমি থেকে বিভিন্ন বনজ সম্পদ সংগ্রহ করে। অর্থাৎ মানুষ ও প্রকৃতি মেলবন্ধন ঘটে। 

গ] নিরপেক্ষ অঞ্চলে পর্যটনের সুযোগ থাকে । পর্যটনের মাধ্যমে  মানুষ বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ ও প্রানীর সাথে পরিচিত হয়, মানুষ প্রাকৃতিক পরিবেশের গুরুত্ব অনুভব করে এবং এছাড়া মানুষ পর্যটনের মাধ্যমে বিনোদনের সুযোগ পায়। 

ঘ] এই নিরপেক্ষ অঞ্চলে গবেষণার সুযোগ থাকে  এবং বিভিন্ন রকম শিক্ষা মূলক ভ্রমন ও পরীক্ষা নিরিক্ষা করা যায় ।ফল স্বরূপ গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন প্রজাতির সম্পর্কে জানা যায়, বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রানী সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যায়। 

ঙ] নিরপেক্ষ ও বাহ্যিক অঞ্চল থেকে খনিজ সম্পদ আরোহনের সুযোগ থাকে, যা উক্ত অঞ্চলের অধিবাসীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।    

অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে একদিকে যেমন জীব প্রজাতিকে তার প্রাকৃতিক পরিবেশে সংরক্ষন করা সম্ভব হচ্ছে তেমনি অন্যদিকে সেই প্রাকৃতিক পরিবেশ সন্নিহিত অঞ্চলে বসবাস করে মানুষ সেই প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব অনুভব করতে সক্ষম হচ্ছে ।  

Leave a Comment