জনাধিক্য কাকে বলে?: জনাধিক্য কোনো দেশের অতিরিক্ত জনসংখ্যা কে নির্দেশ করে অর্থাৎ কোনো দেশের প্রাপ্ত সম্পদ যে পরিমান জনসংখ্যার জীবনধারন করতে সক্ষম, জনসংখ্যা যদি তার তুলনায় বেশি হয়, তখন তাকে জনাধিক্য বা জনাকীর্নতা বলে। কাম্য জনসংখ্যার অতিরিক্ত জনসংখ্যা জনাধিক্যতা কে নির্দেশ করে। অতি জনাকীর্ন দেশ গুলি হল :
ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্থান, ব্রাজিল প্রভৃতি উন্নয়নশীল দেশ গুলিতে জনাধিক্যতা দেখা যায়।
জনাধিক্যের প্রকারভেদ
ক) চরম জনাধিক্য – কোনো দেশের জনসংখ্যা এতো টা বৃদ্ধি পায় যে সম্পদের সর্বাধিক বিকাশ সত্ত্বেও যখন জনগণের জীবনযাত্রার মানের তেমন কোনো বিকাশ সম্ভব হয় না, তখন তাকে চরম জনাধিক্য বলে।
খ) আপেক্ষিক জনাধিক্য – আপেক্ষিক জনাধিক্য বলতে সেই অবস্থাকে বোঝানো হয়, যেখানে বর্তমান উৎপাদিত সম্পদ বর্ধিত জনসংখ্যার চাহিদা পূরনে অপ্রতুল হলে ভবিষ্যতে সম্পদের উৎপাদনের মাত্রা বৃদ্ধি করে বদ্ধিত জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়।
বৈশিষ্ট্য
১. মানুষ জমি অনুপাত কাম্য জনসংখ্যা অপেক্ষা বেশি।
২. শ্রম শক্তির উদ্বৃত্ত হওয়ার ফলে ছদ্ম বেকারত্বের সৃষ্টি হয়।
৩. কার্যকর জমির উপর চাপ বাড়ে। জমির অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে জমি অবক্ষয়ের সম্ভাবনা থেকেই যায়।
৪. জমির বহন ক্ষমতার তুলনায় জনসংখ্যা বেশি হলে বাসস্থান, পানীয় জল ও পয়প্রনালীর ওপর চাপ পরে, শিক্ষার সুযোগ কমে ফলে প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশের দূষণ অনীবার্য হয়ে ওঠে।
৫. জন প্রতি সম্পদ প্রাপ্তি হ্রাস পায়। ফলে মাথাপিছু আয় ও জীবনযাত্রার মান নিম্ন মুখী হয়।
৬. জনসংখ্যার অতিরিক্ত বৃদ্ধির দরুন মানুষের চাহিদা পূরন করা সম্ভব হয় না, ফলে দারিদ্রতার পরিমান বৃদ্ধি পায়।
৭. দেশের সার্বিক উন্নয়ন ব্যহত হয়।
জনাধিক্যের সমস্যা
জনাধিক্যের ফলে যা সকল সমস্যা লক্ষ্য করা যায় সেগুলি হল –
ক) ক্রম বর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের যোগান দেওয়া অনেক সময় সম্ভব হয় না বলে অপুষ্টি, অনাহার প্রভৃতি সমস্যা দেখা যায়।
খ) জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি সীমিত হয় কারণ মোট উৎপাদনের হার সেখানে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হারের থেকে কম সেখানে মাথাপিছু উৎপাদন ক্রমশ কমতে থাকে।
গ) দারিদ্র্যতা ও অপুষ্টির জন্য শিশু মৃত্যুর পরিমান বৃদ্ধি পায়।
ঘ) ক্রম-বর্ধমান জনসংখ্যা মানুষ ও প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করে।