পোল্ডার ভূমি কাকে বলে? পোল্ডার ভূমি কিভাবে তৈরি করা হয়?

Rate this post

পোল্ডার ভূমি কাকে বলে? পোল্ডার ভূমি কিভাবে তৈরি করা হয়?: ডাচ ভাষায় পোল্ডার শব্দের অর্থ হলো ‘সমুদ্র গর্ভ থেকে উদ্ধার করা নীচু জমি’। নেদারল্যান্ড বা হল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিমে খাল, বিল, হ্রদ, উপহ্রদ, বালিয়াড়ি নিয়ে গঠিত যে বিস্তীর্ণ নিচু অঞ্চলকে সমুদ্রগর্ভ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, তাকে পোল্ডার ভূমি বা পোল্ডার ল্যান্ড বলে।পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র নেদারল্যান্ড বা হল্যান্ড বৈজ্ঞানিক ভাবে সমুদ্রগর্ভ থেকে জমি উদ্ধার করে নিজস্ব ভূভাগের আয়তন বাড়িয়ে চলেছে। তাই বলা হয় “God created the World, But the Dutch created the Holland”. অর্থাৎ ঈশ্বর পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু ডাচরা সৃষ্টি করেছেন হল্যান্ড।

পোল্ডার ভূমি সৃষ্টির পর্যায়

কয়েকটি পর্যায়ে পোল্ডার ভূমি সৃষ্টি করা হয়। সেগুলি হল-

১)প্রাথমিক পর্যায়-পোল্ডার ভূমি সৃষ্টির প্রাথমিক পর্যায়ে কোন অগভীর জলাভূমি বা সাগরের কিছুটা অংশ মাটি বা কংক্রিটের তৈরি চক্র বাঁধের মাধ্যমে ঘিরে ফেলা হয়। এই চক্র বাঁধের মধ্যে জল নিকাশি চক্রখাল থাকে।

২)দ্বিতীয় পর্যায়-এই পর্যায়ে সাগর বা জলাভূমির ওই ঘেরা অংশটি পাম্পের সাহায্যে কাদা জল দিয়ে ভরাট করা হয়। জলাভূমির নিচে কাদা বা পলি থিতিয়ে জমে গেলে পাম্পের সাহায্যে ওই দলা ভূমির জল চক্র খালের মাধ্যমে সমুদ্রে ফেলা হয়। এই কাজে উইন্ড মিলের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

৩)তৃতীয় পর্যায়-এই পর্যায়ে ভূমিভাগ শুকিয়ে গেলে জমিকে লবণ মুক্ত করার জন্য ৫-৭ বছর ফেলে রাখা হয়।

৪)চতুর্থ পর্যায়-এই পর্যায়ে ৫-৭ বছরে প্রথমে জমিতে হে, ক্লোভার, বারসীম ইত্যাদি পশু খাদ্যের চাষ ও পশু পালন করা হয় এবং তারপরে বীট, ওট প্রভৃতি শস্য ও সূর্যমুখী, টিউলিপ প্রভৃতি ফুলের চাষ করা হয়।এইভাবে পোল্ডার ভূমি গঠনের ১২-১৫ বছর পরে জমি সম্পূর্ণভাবে কৃষির উপযুক্ত হয়ে ওঠে।

উদাহরণ-নেদারল্যান্ডে উত্তর-পশ্চিমে জুইডার জি উপসাগর থেকে এইভাবে বাঁধ নির্মাণ করে পোল্ডার ভূমি সৃষ্টি করা হয়েছে।

Leave a Comment