গিরিপথ কাকে বলে? ভারতের গিরিপথ সমূহ তালিকা: দুটি পর্বতের মধ্যবর্তী সংকীর্ন পথ কে গিরিপথ বলা হয়। ভারতের উত্তরে অবস্থিত হিমালয় পর্বতে এই রকম বেশ কয়েকটি গিরিপথ রয়েছে, যা যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ন মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ভারতের গুরুত্বপূর্ন গিরিপথ ও তাদের অবস্থান এবং সেগুলি কোন কোন অঞ্চলকে যুক্ত করেছে, সেই সম্পর্কে এখানে তুলে ধরা হল ।
ভারতের বেশি সংখ্যক গিরিপথ হিমালয়ে অবস্থিত এবং কেবমাত্র তিনটি রয়েছে পশ্চিমঘাট পার্বত্য অঞ্চল তথা দক্ষিণ ভারতে।
জম্বু কাশ্মীরে অবস্থিত হিমালয়ান গিরিপথ
আগিলহাস পাস – কারাকোরাম পর্বতের অন্তর্গত গডউইন অস্টিন পর্বতের উত্তরে অবস্থিত এই গিরিপথটি ভারতের লাডাক ও চিনের জিংজাং কে যুক্ত করেছে।
বানিহাল পাস – পিরপাঞ্জাল রেঞ্জের অন্তর্গত বানিহাল পাস দক্ষিণে জম্বু ও উত্তরে শ্রীনগর কে যুক্ত করেছে। এই পাস বরাবর জওহর ট্যানেল নির্মান করা হয়েছে।
চাং লা পাস – হিমালয় অন্যতম উঁচু এই গিরিপথটি লাদাক ও তিব্বত কে যুক্ত করেছে।
খারডুংলা পাস – লাদাক ও লেহ কে যুক্ত করেছে এই গিরিপথটি। ৫৩৫৯ মিটার উঁচু খারডুংলা পাস ভারতের উচ্চতম গিরিপথ।
জোজিলা পাস – শ্রীনগরের সাথে কার্গিল ও লেহ কে যুক্ত করেছে এই গিরিপথ। শ্রীনগর- জোজিলা রোড কে বর্তমানে National Highway – 1D নাম দেওয়া হয়েছে।
হিমাচল প্রদেশে অবস্থিত হিমালয়ান গিরিপথ
বারা লাছা লা পাস – হিমাচল প্রদেশের অন্তর্গত এই গিরিপথ হিমাচলের মান্ডি ও লাদাখের লেহ অঞ্চলকে যুক্ত করেছে। হিমাচল প্রদেশের গিরিপথ গুলির মধ্যে এটি উচ্চতম।
সিপকি লা পাস – হিমাচল প্রদেশে অবস্থিত সিপকি লা পাস হিমাচল প্রদেশ কে তিব্বতের সাথে যুক্ত করেছে। এই পাসটি চিনের সাথে বানিজ্যের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই পাস বরাবর শতদ্রু নদী তিব্বত থেকে ভারতে প্রবেশ করেছে।
রোহটাঙ্গ পাস – ভারতের ব্যস্ততম গিরিপথ গুলির মধ্যে অন্যতম হল রোহটাং পাস । এই গিরিপথ টি হিমাচল প্রদেশের কুল্লু উপত্যকা ও স্পিটি উপত্যকা কে যুক্ত করেছে। এই পাস বরাবর অবস্থিত অটল ট্যানেল ভারত তথা পৃথিবীর দীর্ঘতম ট্যানেল। এই ট্যানেল মানালি কে স্পিটি উপত্যকার সাথে যুক্ত করেছে। এই ট্যানেলের জন্য মানালি ও লেহ এর দূরত্ব ৪৫ কিমি কমে গেছে।
উত্তরাখন্ডে অবস্থিত হিমালয়ান গিরিপথ
লিপু লেখ – এই গিরিপথ টি উত্তরাখণ্ড কে তিব্বতের সাথে যুক্ত করেছে। মানস সরোবরে তীর্থযাত্রীরা এই গিরিপথ দিয়ে যান। এই পাস টি ভারত, চীন ও নেপাল সীমান্তের সংযোগ স্থলে অবস্থিত।
মানা পাস – ভারতের অন্যতম প্রধান তীর্থ স্থান বদ্রীনাথের উত্তরে অবস্থিত এই গিরিপথ টি উত্তরাখন্ড ও তিব্বত কে যুক্ত করেছে।
নীতি পাস – উত্তরাখণ্ড ও তিব্বত কে যুক্ত করেছে।
সিকিমে অবস্থিত হিমালয়ান গিরিপথ
নাথুলা পাস – ভারত ও চিনের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত এই গিরিপথটি চিনের সাথে বানিজ্যের জন্য ব্যবহৃত হয়।
জিলিপ লা পাস – সিকিম ও ভুটান সীমান্তে অবস্থিত এই গিরিপথ টি চুম্বি উপত্যকা বরাবর অবস্থিত। এটি সিকিম ও তিব্বতের রাজধানী লাসা অঞ্চল কে যুক্ত করেছে।
অরুনাচল প্রদেশে অবস্থিত হিমালয়ান গিরিপথ
বোম ডিলা পাস – অরুণাচল প্রদেশে অবস্থিত বোম ডিলা পাস ভুটানের পূর্ব সীমানা বরাবর অবস্থিত এবং এটি অরুনাচল প্রদেশকে তিব্বতের রাজধানী লাসার সাথে যুক্ত করেছে।
ডিহাং পাস – এই গিরিপথ ভারতের অরুনাচল প্রদেশ কে মায়ানমারের সাথে যুক্ত করেছে।
দক্ষিণ ভারতে অবস্থিত গিরিপথ
পালঘাট – উত্তরে নীলগিরি পর্বত ও দক্ষিনে আনাইমালাই পর্বতের মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত পালঘাট পাস টি কেরালা ও তামিলনাড়ু রাজ্যের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
থালঘাট – পশ্চিমঘাট পর্বতের উত্তরাংশে অবস্থিত থালঘাট মহারাষ্ট্রের মুম্বাই ও নাসিক অঞ্চল কে যুক্ত করেছে।
ভুরঘাট– মুম্বাই ও পুনে কে যুক্ত করেছে ভুরঘাট পাস।