জলপথকে উন্নয়নের জীবনরেখা বলা হয় কেন?

Rate this post

জলপথকে উন্নয়নের জীবনরেখা বলা হয় কেন?: জলপথ হল জল মাধ্যম ব্যবহার করে চলাচল উপযোগী একটি পথ। অস্পষ্টতা এড়ানোর জন্য শব্দগুলোর মধ্যে বিস্তৃত পার্থক্য থাকা ভালো এবং অন্যান্য ভাষাগুলোতে একটি শব্দের সমতুল্য শব্দ বা শব্দগুলোর সূক্ষ্ণ পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সময় ব্যবহৃত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্ব বহন করে। অভ্যন্তরীণ নৌযান দ্বারা ব্যবহৃত সামুদ্রিক শিপিং রুট এবং নৌপথের মধ্যে প্রথমত পার্থক্য বোঝা প্রয়োজন।

সমুদ্র পরিবহন রুটগুলি মহাসাগর এবং সমুদ্রগুলি অতিক্রম করে এবং কিছু হ্রদ, যেখানে নাব্যতা অনুমিত হয়, এবং শুধু সমুদ্রবন্দরগুলোর (চ্যানেলগুলোর) কাছে পৌঁছানোর জন্য গভীর সমুদ্রে জাহাজ চলাচলের জন্য নকশা সরবরাহ করা বা একটি যোজক ওপারে শর্ট কাট সরবরাহ ব্যতীত কোনও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রয়োজন হয় না কারণ এটি জাহাজের খালগুলির কাজ । সমুদ্রের ড্রেজিংকৃত চ্যানেলগুলিকে সাধারণত জলপথ হিসাবে বর্ণনা করা হয় না। এই প্রাথমিক পার্থক্যটির ব্যতিক্রম রয়েছে, মূলত আইনি উদ্দেশ্যে, আন্তর্জাতিক জলের অধীনে।

যেসব সমুদ্রবন্দরগুলি অভ্যন্তরীণ স্থানে অবস্থিত সেগুলিতে একটি জলপথের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয় যাকে “অভ্যন্তরীণ” হিসাবে অভিহিত হতে পারে তবে বাস্তবে সাধারণত “সামুদ্রিক জলপথ” হিসাবেই ওভিহিত করা হয় (উদাহরণঃ সাইন মেরিটাইম, লোয়ার মেরিটাইম, সিসিফিহস্ট্রসট্রে এলবে)। শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলযোগ্য নৌযান যেগুলো স্পষ্টতই সমুদ্র সৈকতের জাহাজের চেয়ে ছোট সেগুলোর জন্য নকশা করা নৌবাহযোগ্য নদী বা খালের ক্ষেত্রে “অভ্যন্তরীন জলপথ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়।

জলপথ মূলত সমুদ্র পথ কোন একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ এই জলপথের উপর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নির্ভর করে। যে সব কারণের জন্য জলপথ কে উন্নয়নের জীবন রেখা  বলা হয় সেগুলি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো। 

1) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসার – কেবলমাত্র উপকূলীয় সমুদ্র ছাড়া সমুদ্রের বাকি অংশে পরিবহনের কোনো বাধা-নিষেধ নেই। এছাড়া নদী, খাল পথ বাদ দিলে সাগর বা মহাসাগরের নির্দিষ্ট পথ নেই। ফলে জলপথ পরিবহন এর মাধ্যমে যে কোন দেশের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা যায়। বিশ্বের কোন দেশই সব ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ না হওয়ায় আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের প্রয়োজন হয়, আর এর জন্য জলপথ হল সর্ব শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। 

2) অর্থনৈতিক উন্নতি – জলপথে পরিবহন ব্যয় কম হওয়ায় অনুন্নত ও উন্নত দেশগুলির জলপথের উপর খুব বেশি মাত্রার নির্ভরশীল। তাই কোন অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিকাশে জলপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

3) শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশ – জলপথে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বলে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে কেবল বাণিজ্য সম্পর্ক গড়ে ওঠে না, শিক্ষা-সংস্কৃতিরও বিনিময় ঘটে। 

4) সুলভ পরিবহন – বিশ্বের যেসব দেশে জলপথে পরিবহনের সুবিধা আছে সেসব দেশের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর এক বিপুল অংশ জলপথ পরিবহন করা হয় কারণ জলপথে পরিবহন সব থেকে সুলভ।

5) ভারি পণ্য সামগ্রী পরিবহন – এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভারি পণ্য সামগ্রী পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম হল জলপথ।

6) অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্য – জলপথের সাহায্যে দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে যেমন প্রয়োজনীয় পণ্য দ্রব্য আদান-প্রদান করা সম্ভব হয় তেমনি এক দেশ থেকে অন্য দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে জলপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।

7) পর্যটন শিল্পের বিকাশ – প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে বহু দেশী-বিদেশী পর্যটক জল পথের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে এসে ভিড় করে। ফলে এই সব দেশের পর্যটন শিল্পের বিশেষভাবে উন্নতি লাভ করে। যেমন মায়ানমার, ফিলিপিনস প্রভৃতি দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে জলপথের গুরুত্ব অপরিসীম।

এসব কারণে ভূগোলবিদ গন জলপথকে উন্নয়নের জীবনরেখা বলে অভিহিত করেছেন। 

Leave a Comment