উইলহেম রন্টজেন জীবনী – Wilhelm Conrad Rontgen Biography in Bengali

Rate this post

উইলহেম রন্টজেন জীবনী: gksolve.in আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে Wilhelm Conrad Rontgen Biography in Bengali. আপনারা যারা উইলহেম রন্টজেন সম্পর্কে জানতে আগ্রহী উইলহেম রন্টজেন এর জীবনী টি পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।

উইলহেম রন্টজেন কে ছিলেন? Who is Wilhelm Conrad Rontgen?

উইলহেম রন্টজেন (মার্চ ২৭, ১৮৪৫ – ফেব্রুয়ারি ১০, ১৯২৩) একজন জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী যিনি পদার্থবিজ্ঞানে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি এক্স রশ্মির আবিষ্কারক যাকে তার নামানুসারে রঞ্জন রশ্মিও বলা হয়।

উইলহেম রন্টজেন জীবনী – Wilhelm Conrad Rontgen Biography in Bengali

নামউইলহেম রন্টজেন
জন্ম27 মার্চ 1845
পিতাফ্রেডরিখ কনরাড রন্টজেন
মাতাশার্লোটা কনটাঞ্জা ফ্রোইন
জন্মস্থানলেনেপ, প্রুশিয়া কিংডম, জার্মান কনফেডারেশন
জাতীয়তাজার্মান
পেশাপদার্থবিজ্ঞানী
মৃত্যু10 ফেব্রুয়ারি 1923 (বয়স 77)

উইলহেম রন্টজেন এর জন্ম: Wilhelm Conrad Rontgen’s Birthday

উইলহেম রন্টজেন ২৭ মার্চ ১৮৪৫ জন্মগ্রহণ করেন।

উইলহেম রন্টজেন এর কর্ম জীবন: Wilhelm Conrad Rontgen’s Work Life

উপযোগিতার সূত্রেই এক্স – রে বা এক্স – রশ্মি বর্তমান কালে সমগ্র বিশ্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে বিপুল পরিচিতি লাভ করেছে। এই অজানা অচেনা অদৃশ্য রশ্মিটির পরিচিতি উদ্ঘাটন করতে ব্যর্থ হয়ে আবিষ্কারক প্রুশিয়ার উরসবার্গ বিদ্যালয়ের পদার্থবিদ বিজ্ঞানী রন্টজেন রশ্মিটির নামকরণ ইংরাজি এক্স অক্ষর দিয়ে সূচিত করেছিলেন। পদার্থ বিজ্ঞানী রন্টজেনের আবিষ্কৃত X – ray বর্ণালীর সাহায্যে অজ্ঞাত মৌলের সন্ধান ও অস্তিত্ব উদ্ঘাটন সম্ভব হয়।

হাফনিয়ন নামে মৌলটির আবিষ্কার এই রশ্মির সাহায্যেই সম্ভব হয়েছে। হীরকের প্রসারণ ও তার গুণাগুণ নির্ণয়ে, যন্ত্র শিল্পের ক্ষেত্রে এই রশ্মির প্রয়োগ হয়ে থাকে। হাড়ের দোষ ত্রুটি নির্ণয়, ফুসফুস ও কিডনি প্রভৃতির রোগ নির্ণয় এর দ্বারা সম্ভব হচ্ছে। ক্যান্সার, টিউমার, পেটের আলসার, রেডিও থেরাপিতে সারানো সম্ভব হচ্ছে। জমানো খাবারের ওপর রশ্মি ফেলে খাবারকে জীবাণুমুক্ত রাখা হয়।

কৃষিবিজ্ঞানে এই রশ্মির সাহায্যে মিউটেশন (Mutation) ঘটিয়ে উচ্চ ফলনশীল ফসলের বীজ তৈরি করা হয়। ডিটেকটিভ বিভাগ সন্দেহজনক দ্রব্যের রেডিওগ্রাফ তুলে চোরাই চালান ধরতে সক্ষম হয়। ঝিনুকের মধ্যে মুক্তোর সন্ধান করা হয়। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে এক্স – রশ্মির সহায়তায়। সাধারণ অনেক রশ্মি থেকে এই রশ্মির প্রকৃতি আলাদা। মানুষের চামড়ার ভেতর দিয়ে সাধারণ আলোেক যেতে পারে না। অথচ এই রশ্মি অবাধে গমন করতে পারে। তবে হাড়ের ভেতর দিয়ে চলাচল করতে পারে না। ফলে মনুষ্যদেহের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন প্রত্যঙ্গের ছবি তুলবার জন্য চিকিৎসাক্ষেত্রে এই রশ্মি বিপুল সম্ভাবনাময় হয়ে উঠেছে। অথচ আশ্চর্য যে, এক্স – রশ্মি আবিষ্কৃত হয়েছিল আকস্মিকভাবে।

১৮৯৫ খ্রিঃ, অন্যান্য বিজ্ঞানীর মত রন্টজেনও ক্যাথোড রশ্মি নিয়ে গবেষণা করছিলেন সেই সময়। একদিন একটা কাচের বাল্বকে যথাসম্ভব বায়ুমুক্ত করে তার মধ্যে দিয়ে তড়িৎ মোক্ষণ পাঠাতে গিয়ে রন্টজেন এই বিপুল শক্তিসম্পন্ন অদৃশ্য শক্তির সন্ধান পান। তিনি লক্ষ করেন যে বায়ু নিষ্কাশিত কাচের নলের দুদিকে প্রবিষ্ট দুটো ইলেকট্রোডের সাহায্যে উচ্চ ভোল্টের বৈদ্যুতিক শক্তি পাঠাবার সময় নলের মধ্যে বিদ্যুৎ মোক্ষণ তো ঘটেই, তাছাড়া ওই অদৃশ্য আলোকপাতে অন্য জিনিসও ভাস্বর হয় ওঠে। অদৃশ্য রশ্মি বেরিয়াম প্ল্যাটিনো সায়ানাইডের ওপর পড়ে হলুদ – সবুজ রঙের প্রতিপ্রভা নির্গত হয়।

সরলরেখায় প্রবাহিত এই রশ্মি প্রবাহ বৈদ্যুতিক অথবা চৌম্বক ক্ষেত্রের দ্বারা প্রভাবিত হয় না। যার ঘনত্ব বেশি তার ভেতর দিয়ে রশ্মি সেরকম যেতে পারে না ; কম ঘনত্বের জিনিসই ভেদ করে যায়। তামা, দস্তা, অ্যালুমিনিয়মের পাতকে এই রশ্মি ভেদ করে যেতে না পারলেও শরীরের মাংস ভেদ করে গিয়ে হাড়ের কাঠামোকে স্পষ্ট করে তোলে। এই রশ্মির দ্বারা নানান পরীক্ষা – নিরীক্ষা করে এবং নিজের হাতের হাড়ের কাঠামোকে স্পষ্ট করে দেখতে পেয়ে রন্টজেন এই অদৃশ্য রশ্মির আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন এবং নাম দেন এক্স – রে। আলোক রশ্মির মত এক্স – রশ্মিও অদৃশ্য আলোক রশ্মির থেকে তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে অনেক কম 10 ° সে.মি. – 10º সে.মি .

তিনি প্রকৃতি ব্যাখ্যা করে বলেন, এক্স – রে এক প্রকার তড়িৎ চৌম্বক বিকীরণ। এটি রেডিও – তরঙ্গ, উত্তাপজনিত বিকীরণ অবলেহিত, দৃশ্যমান আলোক, অতি বেগুনি ও গামা রশ্মির সমগোত্রীয়, এই বিকীরণ তরঙ্গাকারে প্রবাহিত হয়। ১৮৯৬ খ্রিঃ ১ লা জানুয়ারী রন্টজেন একটি দশ পাতার পুস্তিকার সঙ্গে প্রকাশ করেন এক্স – রে – এর সাহায্যে তোলা কিছু ফোটো।

বিজ্ঞানী মহলে সঙ্গে সঙ্গেই আলোড়ন সৃষ্টি হল। বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা – নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে বিজ্ঞানীরাও প্রয়াসী হলেন। রণ্টগেনের পুস্তিকা প্রকাশের মাত্র কুড়িদিন পরেই এক্স – রে – এর প্রথম প্রয়োগ হয় এক ভদ্রলোকের ওপর। তার নাম এডিম্যাকার্থি। তার হাতের একটা হাড় ভেঙ্গে গিয়েছিল। চিকিৎসকরা এক্স – রশ্মির সাহায্যে ফোটো গ্রহণ করে তার ভাঙ্গা হাড় ঠিক করে দিলেন। অল্প সময়ের মধ্যেই রন্টজেন বিজ্ঞানী হিসেবে বিশ্বজোড়া খ্যাতি লাভ করলেন।

১৮৪৬ খ্রিঃ ২৭ শে মার্চ প্রুশিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন রন্টজেন। জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করার পর ১৮৭০ খ্রিঃ গবেষণা করতে যান উরসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে।। অল্পদিনের মধ্যেই গবেষক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন এবংওই বিশ্ববিদ্যালয়েই পদার্থবিদ্যার অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেন। অল্প বয়স থেকেই দুটি বিষয়ের প্রতি রন্টজেনের কৌতূহল ছিল প্রবল। সেগুলি হল, কাচনল তৈরি ও ফোটোগ্রাফী। গবেষণার এক পর্যায়ে হার্ৎস, টমসন, লেনার্ড প্রভৃতি বিজ্ঞানীদের মত তিনিও নিম্নচাপে বায়ুর মধ্যে তড়িৎ মোক্ষণের নানারকম পরীক্ষা নিরীক্ষা আরম্ভ করেন। সেই সময়েই আকস্মিকভাবে আবিষ্কার করেন এক্স – রে। এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য ১৮৯৬ খ্রিঃ রন্টজেনকে রামফোর্ড পুরস্কারে সম্মানিত করা হল।

১৯০১ খ্রিঃ নোবেল পুরস্কার প্রবর্তন হলে বিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য রন্টজেন নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এক্স – রে আবিষ্কারের পর রন্টজেন তড়িৎবিজ্ঞান নিয়েও গবেষণা করেছিলেন। গ্যাসের আপেক্ষিক তাপ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। শেষ বয়সে রন্টজেন উরসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় পরিত্যাগ করে মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছিলেন।

উইলহেম রন্টজেন এর মৃত্যু: Wilhelm Conrad Rontgen’s Death

১৯২৩ খ্রিঃ ১০ ই ফেব্রুয়ারী কনরাড রন্টজেন পরলোক গমন করেন।

Leave a Comment