বৃষ্টিপাত সৃষ্টির সংঘাত তত্ত্ব – Collision – coalescence Theory of Precipitation: বৃষ্টিপাত সৃষ্টি সম্পর্কীত সংঘাত তত্ত্বের (Collision – coalescence Theory) ক্রান্তীয় অঞ্চলে হিমাঙ্কের নিচে থাকা কিউমুলাস মেঘ থেকে কিভাবে বৃষ্টিপাত হয়, তার ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব।
বৃষ্টিপাত সৃষ্টি সম্পর্কীত সংঘাত তত্ত্বের আবিস্কর্তা হলেন অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী ই.জি. বোভেন । ১৯৪০ এর আগে এটা বিশ্বাস করা হত যে সব রকমের বৃষ্টিপাত সৃষ্টির মূলে ছিল বার্জেরন পদ্ধতি। কিন্তু বার্জেরন পদ্ধতি ক্রান্তীয় অঞ্চলে ২ কিমি উচ্চতা ও ৫ ̊ সেলসিয়াস উষ্ণতা বিশিষ্ট কিউমুলাস মেঘ থেকে কিভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় – তা ব্যাখ্যা করতে পারে না।
এটা প্রমানিত যে বরফ কেলাস উষ্ণ মেঘ থেকে বৃহৎ আকৃতির বৃষ্টি বিন্দু তৈরি করতে পারে না । এই রকম বৃষ্টিপাত সম্ভব কেবলমাত্র বিভিন্ন আকৃতির বৃষ্টিরকনার পারস্পারিক মিলনে।
জলকণা বহনকারী মেঘ থেকে তখনই বৃষ্টিপাত সম্ভব যখন জলকনা গুলির আকৃতি ২০ মাইক্রো মিটারের অধিক হয়। এই বৃহৎ আকৃতির water Droplets তৈরির জন্য প্রযোজন হয় অতি বৃহৎ (Giant) কনডেনসেশন নিউক্লেই (Condensation Nuclei)। বাতাস সম্পৃক্ত বিন্দুতে পৌছানোর আগেই এই জলাকর্ষক অনু গুলিতে ঘনীভবন শুরু হয়ে যায়।
যে জলবিন্দু গুলি এই বৃহৎ Condensation Nuclei কে আশ্রয় করে গড়ে ওঠে তারা আকৃতিগত দিক থেকে অনেক বড়ো হয়। তাই অধপতনের গতি এই জলবিন্দু গুলি ক্ষেত্রে অনেক দ্রুত হয়।
বড়ো কনা গুলি যখন মেঘের মধ্যে দিয়ে নামতে থাকে, তখন ছোটো ও ধীর গতির জলবিন্দু গুলির সাথে সংঘর্ষ হয় ও তাদের সংযুক্ত করে। এভাবে জলবিন্দু গুলি আরো বড়ো হতে থাকে ও আরো দ্রুত নামতে থাকে ফলে সংঘর্ষ ও বৃদ্ধির পরিমানও বাড়তে থাকে। একসময় তারা এতো বড়ো হয় যে বাষ্পীভূত না হয়েই বৃষ্টি রূপে নিচে পতিত হয়।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে এটি পরিষ্কার যে, যে পরিবেশে বড়ো বড়ো জলকনার উপস্থিতি অনেক সেখানে সংঘর্ষ – সংযুক্ত পদ্ধতি খুবই গুরুত্বপূর্ন।