ভাঙ্গর ও খাদার সমভূমির মধ্যে পার্থক্য: হিমালয়ের বরফ গলা জলে সৃষ্ট গঙ্গা ও তার বিভিন্ন শাখা ও উপনদীর হাজার হাজার বছর ধরে পলি সঞ্চয়ের ফলে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণে উপদ্বীপীয় মালভূমির উত্তর অংশ বিস্তৃত ভারতের বৃহত্তম গাঙ্গেয় সমভূমির সৃষ্টি হয়েছে। এই গাঙ্গেয় সমভূমি কে প্রাচীনতা ও উর্বরতার ওপর নির্ভর করে 2টি অংশে ভাগ করা হয়, যথা – ভাঙ্গর ও খাদার সমভূমি। এখানে ভাঙ্গর ও খাদারের মধ্যে পার্থক্য গুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
সংজ্ঞা
- গাঙ্গেয় সমভূমি র প্রাচীন পলিরাশি দ্বারা গঠিত অঞ্চল কে ভাঙ্গর।
- নতুন পলি রাশি সঞ্চিত হয়ে গঠিত সমভূমি গুলি খাদার নামে পরিচিত।
উর্বরতা
- ভাঙ্গর সমভূমি অঞ্চলের উর্বরতা অপেক্ষাকৃত ভাবে কম হয়।
- নবীন পলি রাশি দ্বারা গঠিত খাদার অঞ্চলের উর্বরতা অনেক বেশি হয়।
উচ্চতা
- ভাঙ্গর অঞ্চল গুলি অপেক্ষাকৃত উচ্চ ভূমি।
- খাদার অঞ্চল গুলি মূলত নিম্ন ভূমি।
বন্যা
- উচ্চতা তুলনামূলক ভাবে বেশি হওয়ায় ভাঙ্গর সমভূমি অঞ্চলের বন্যার প্রবণতা কম।
- খাদার অঞ্চল গুলি প্রতি বছর প্লাবিত হয় বলে নতুন নতুন পলির স্তর সৃষ্টি হয়।
গ্রথন বা বুনন
- ভাঙ্গর সমভূমি মূলত স্থূল আকৃতির নুড়ি, পাথর ও বালি দ্বারা গঠিত।
- খাদার সমভূমি অঞ্চল গুলি সূক্ষ্ম পলি ও কাদা কনার সমন্বয়ে গঠিত।
বিস্তৃতি
- গাঙ্গেয় সমভূমি র বেশির ভাগ অংশ মূলত ভাঙ্গর পলি মাটি দ্বারা গঠিত।
- নদী তীরবর্তী প্লাবন সমভূমির সামান্য পরিমাণ অংশ খাদার পলি মাটি দ্বারা গঠিত।
মাটির বর্ণ বা রঙ
- ভাঙ্গর অঞ্চলের মাটির রঙ গাঢ় হয়।
- ক্রমাগত গঠিত হতে থাকায় খাদার অঞ্চলের মাটি হালকা রঙের হয়ে থাকে।
ভাঙ্গার ও খাদারের পার্থক্যগুলি হল:
বিষয় | ভাঙ্গার | খাদার |
পরিচিতি | উচ্চ গঙ্গা সমভূমির প্রাচীন পলিগঠিত অঞ্চল ভাঙ্গার নামে পরিচিত। | উচ্চ গঙ্গা সমভূমির নবীন পলি দিয়ে গঠিত ভূমিভাগ খাদার নামে পরিচিত। |
অবস্থান | এই ধরনের ভূমি নদী থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত। | এই ধরনের ভূমি নদীর কাছাকাছি অবস্থিত। |
উর্বরতা | প্রাচীন পলিগঠিত বলে এই মাটির উর্বরতা কম। | নবীন পলিগঠিত বলে এই মাটির উর্বরতা বেশি। |
প্লাবন | ভাঙ্গার অঞ্চল উঁচু বলে এখানে প্রতি বছর প্লাবন হয় না। | খাদার অঞ্চল নীচু বলে প্রায় প্রতিবছরই প্লাবিত হয়। |
প্রকৃতি | প্রাচীন পলিগঠিত ভাঙ্গরের মাটি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। | খাদার অঞ্চলে প্রতিবছর নতুন মাটি সঞ্চিত হয়। |