মহীসোপান কাকে বলে? মহীসোপান সৃষ্টির কারণ: পৃথিবীর মহাদেশসমূহের চারদিকে স্থলভাগের কিছু অংশ ক্রমশ সমুদ্রের পানির মধ্যে বিস্তৃত থাকে। এরূপ ক্রমনিম্ন স্বল্প গভীর নিমজ্জিত অংশকে মহীসোপান বলে।
মহীসোপান অংশের পানির গভীরতা সাধারণত ২০০ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এটি এক ডিগ্রি কোণে সমুদ্র তলদেশে নিমজ্জিত থাকে।
মহীসোপান অঞ্চলটি সমুদ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল মহাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল নিমজ্জিত হওয়ার ফলে অথবা সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতার তারতম্য হওয়ার কারণে মহীসোপানের সৃষ্টি হয়। আবার অনেক সময় সমুদ্র তরঙ্গ ও ক্ষয়ক্রিয়া মহীসোপান গঠনে সহায়তা করে।
মহাদেশের শেষ ভাগ গুলি ধীরে ধীরে ঢালু হয়ে নিচে নেমে মহীসোপান গঠিত হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে মহীসোপানের গভীরতা, গঠন ও বিস্তৃতি একই রকমের হয় না। মহিসোপন সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ধারণা অবতরণ করেন। যথা
1. সমুদ্র তরঙ্গের ক্ষয় কার্য ও নদীর অবক্ষেপণ কাজের প্রভাব : সমুদ্র তরঙ্গ ও ও সমুদ্রস্রোতের ক্ষয় কার্যের প্রভাবে মহাদেশ গুলির প্রান্তভাগ ক্ষয়প্রাপ্ত হয় মহাদেশীয় মঞ্চ গঠন করে। কালক্রমে মহাদেশীয় মঞ্চের উপরিভাগে কালক্রমে মহাদেশীয় মঞ্চের উপরিভাগে সমুদ্র তরঙ্গ ও বিভিন্ন নদীবাহিত পলি সঞ্চিত হয়ে মহীসোপান গঠন করে।
2. ভূগর্ভস্থ পরিচলন স্রোত এর প্রভাব: ভূগর্ভ থেকে উত্থিত ঊর্ধ্বমুখী ম্যাগমার পরিচলন স্রোতের প্রভাবে মহাদেশ সমূহের প্রান্তভাগ সমুদ্র উপকূল বরাবর অবনমিত হলে মহীসোপানের সৃষ্টি হয়।
3. হিমবাহের ক্ষয় কার্যের প্রভাব: অনেক সময় সমুদ্রের জলতলের অবনমন এর ফলে উন্মুক্ত মহাদেশীয় প্রান্তভাগে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে মহীসোপান গঠিত হয়।
4. মহাদেশীয় প্রান্তভাগে সমান্তরাল চ্যুতির গঠন: মহাদেশীয় প্রান্তভাগ বরাবর সমান্তরাল চ্যুতি সৃষ্টির ফলে মহাদেশীয় প্রান্তভাগ অবনমিত হয়ে মহীসোপান গঠন করে।
5. মহাদেশীয় প্রান্তভাগ এর উত্থান: অনেক সময় মহাদেশীয় প্রান্তভাগ উত্থিত হয়ে সমুদ্র অভিমুখে হেলে অবস্থান করলে, মহীসোপান গঠিত হয়।
6. তরঙ্গ কর্তিত মঞ্চের সমুদ্র জলে নিমজ্জিত: সমুদ্র তরঙ্গের ক্ষয় কার্যের প্রভাবে সৃষ্ট তরঙ্গ কর্তিত মঞ্চ সমুদ্র জলে নিমগ্ন হলে মহীসোপান গঠিত হয়।