মার্ক টোয়েন জীবনী: gksolve.in আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে Mark Twain Biography in Bengali. আপনারা যারা স্যামুয়েল ল্যাংহর্ন ক্লিমেন্স [“মার্ক টোয়েইন” (Mark Twain)] সম্পর্কে জানতে আগ্রহী মার্ক টোয়েন এর জীবনী টি পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।
মার্ক টোয়েন কে ছিলেন? Who is Mark Twain?
স্যামুয়েল ল্যাংহর্ন ক্লিমেন্স (৩০ নভেম্বর ১৮৩৫ – ২১ এপ্রিল ১৯১০) ছিলেন একজন মার্কিন রম্য লেখক, সাহিত্যিক ও প্রভাষক। তিনি অবশ্য “মার্ক টোয়েইন” (Mark Twain) ছদ্মনামেই বেশি পরিচিত। মার্ক টোয়েন কথাটির অর্থ হল দুই ফ্যাদম (fathom) অর্থাৎ বারো ফুট গভীর। বিচিত্র অভিজ্ঞতা ও হাস্যরসাত্মক ব্যঞ্জনায় পূর্ণ জনপ্রিয় লেখাগুলোর মধ্যে স্যামুয়েল ল্যাহর্ন ক্লিমেনস এর ছদ্মনামকে যথাযথ ভাবে মর্যাদা দান করেছে। বিখ্যাত মার্কিন ঔপন্যাসিক মার্ক টোয়েন- এই নাম আজ সারা বিশ্বে সুবিদিত।
মার্ক টোয়েন জীবনী – Mark Twain Biography in Bengali
নাম | স্যামুয়েল ল্যাংহর্ন ক্লিমেন্স [“মার্ক টোয়েইন” (Mark Twain)] |
জন্ম | 30th নভেম্বর 1835 |
পিতা | ভার্জিনিয়ান জন মার্শাল ক্লেমেন্স |
মাতা | – |
জন্মস্থান | ফ্লোরিডা, মিসৌরী |
জাতীয়তা | আমেরিকান |
পেশা | লেখক, অধ্যাপক |
মৃত্যু | 21st এপ্রিল 1910 (বয়স 74) |
মার্ক টোয়েন এর জন্ম: Mark Twain’s Birthday
স্যামুয়েল ল্যাংহর্ন ক্লিমেন্স [“মার্ক টোয়েইন” (Mark Twain)] ১৮৩৫ সালের ৩০ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।
মার্ক টোয়েন এর পিতামাতা ও জন্মস্থান: Mark Twain’s Parents And Birth Place
১৮৩৫ খ্রিঃ ৩০ শে নভেম্বর ফ্লোরিডা শহরে মার্ক টোয়েন জন্ম গ্রহণ করেন। মাত্র চার বছর বয়সের সময় তাঁর বাবা জন মার্সাল ক্লিমেনস পরিবার নিয়ে মিসৌরিব হ্যানিবল শহরে মিসিসিপি নদীর ধারে এসে বসবাস করতে থাকেন।
টোয়েনের ভাষায় এই ছোট্ট শহরটি ছিল একটি ‘ঘুমস্ত শাক্ত গ্রাম’। এই শহর তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। মার্কের মা ছিলেন পরিহাস প্রিয় মহিলা। কিন্তু অত্যন্ত অন্যমনস্ক স্বভাবের। মায়ের কাছ থেকে এই দুটি দোষ গুণই মার্ক পেয়েছিলেন।
মার্ক টোয়েন এর শিক্ষাজীবন: Mark Twain’s Educational Life
মার্কের বাবা ছিলেন পেশায় আইনজীবী। তিনি ছেলেকে হ্যানিবলের একটি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন। সেখানে কিছুদিন পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছিলেন নার্ক। পরে পাঠ নিয়ে ছিলেন ক্রশ নামের একজন বৃদ্ধের কোচিং -এ।
মার্ক টোয়েন এর ছোটবেলা: Mark Twain’s Childhood
মাত্র এগারো বছব বয়সে ১৮৪৭ খ্রিঃ মার্কের বাবার মৃত্যু হয়। স্বাভাবিকভাবেই সংসারের দায়দায়িত্বের বোঝা চাপলো তাঁর কাঁধে। তাঁকে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ১৩ বছর বয়সেই নামতে হল কঠোর জীবন সংগ্রামে।
খবরের কাগজের হকার, মুদির দোকানের কেরানি, কামারশালার কর্মী, ওষুধের দোকানের কেরানি ও শেষে মিসিসিপি নদীর বাষ্পচালিত নৌকো চালকের পেশার মধ্যে চলতে লাগল তাঁর বিচিত্র অভিজ্ঞতাপূর্ণ সংগ্রামময় জীবন।
মার্ক টোয়েন এর কর্ম জীবন: Mark Twain’s Work Life
১৮৬২ খ্রিঃ তিনি ভার্জিনিয়া শহরের টেরিটোরিয়াল এন্টারপ্রাইজ পত্রিকায় সাংবাদিকের কাজ নিলেন। লেখায় হাতে খড়ি আগেই হয়েছিল। এবারে পত্রিকার জন্য নিয়মিত লেখার জোগান দিতে গিয়ে ছদ্মনাম নিলেন মার্ক টোয়েন। এইসময়ে তার বয়স আঠাশ।
এই কাগজে কাজ করার সময়েই মার্ক ক্রনিক্যাল নামে অন্য একটি কাগজের সম্পাদকের সঙ্গে ডুয়েলের চ্যালেঞ্জের ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এই ডুয়েল হয়নি। কিন্তু ডুয়েল লড়তে চাওয়ার অপরাধে শহরের গভর্নর তার নামে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী করেন। গ্রেপ্তার এড়াবার জন্য মার্ক সীমান্ত পার হয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে যান। সেখানে একটি কাগজে সাংবাদিকতার চাকরি নেন।
কিন্তু সহসাই আবার বেকার হয়ে পড়লেন। আর্থিক অনটন মোকাবিলার জন্য বন্ধুদের পরামর্শে এবারে কিছুদিন বিভিন্ন এলাকায় বক্তৃতা দিয়ে বেড়ালেন ৷ এতে তার ভালই রোজগার হতে লাগল ৷
মার্ক টোয়েন এর বিবাহ জীবন ও পরিবার: Mark Twain’s Marriage Life And Family
লেকচার ট্যুরে একবার ইউরোপ থেকে ফেরার পথে জাহাজে এক সহযাত্রীর বোনের সঙ্গে আলাপ হয়। নিউইয়র্কে ফিরে ১৮৭০ খ্রিঃ অলিভিয়া ল্যাংডিন নামের এই মেয়েটিকে মার্ক বিয়ে করেন।
১৮৭২ খ্রিঃ থেকে মার্ক তার পরিবার নিয়ে অ্যাব্রোড শহরে পাকাপাকি ভাবে বাস করতে থাকেন। এখানে তিনি প্রতিবেশী হিসেবে পেয়েছিলেন আঙ্কল টমস কেবিন গ্রন্থের লেখিকা হ্যারিয়েট বিচার স্টো-কে। তাঁর সাহচর্যেই প্রধানতঃ মার্ক পুরোপুরিভাবে লেখায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি প্রতিদিন টানা ১০ ঘন্টা লেখার মধ্যে ডুবে থাকতেন। এভাবে কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়েই লেখা হতে লাগল মার্কের প্রতিটি বই। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
মার্ক টোয়েন এর রচনা: Written by Mark Twain
১৯০৭ খ্রিঃ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় মার্ককে ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়ে সম্মানিত করে। কৈশোর ও যৌবনের জীবন-সংগ্রাম এবং স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জ, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল এবং মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণ মার্ক টোয়েনের Roughing It, The Innocent Abroad, Tramph Abroad, The Adventure of Tom Sawyer, The Adventure of Hucklebury Finn প্রভৃতি গ্রন্থে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। আর প্রকাশ করেছে বিবিধ সংকীর্ণতা ও কূপমন্ডুকতার বিবরণ।
মার্কের The Tragedy of Puddnhead Wilson, King Leap old’s Soliloquay, The Prince and Pauper, A Connecticut Yankee in King Arthur’s Court প্রভৃতি গ্রন্থ পূর্ণ হয়ে উঠেছে জাতি বিদ্বেষ ও বর্ণবিদ্বেষের নির্মমতায় এবং সাবেকী সামন্ততান্ত্রিক সভ্যতার সঙ্গে নতুন মার্কিনী মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির বিরোধিতায়। গোড়ার দিকে লেখায় যা ছিল হাল্কা পরিহাস প্রিয়তা, তাই পরবর্তিকালে পরিণত হয়েছিল তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গে।
জীবনের শেষ পর্বের লেখায় ফুটে উঠেছিল তীব্র ঈশ্বর বিরোধিতা। তিনি নিজেই নির্দেশ রেখে গিয়েছিলেন যাতে ঈশ্বর বিরোধিতা রূপে গণ্য হতে পারে এমন লেখাগুলো তার মৃত্যুর পর প্রকাশ করা হয়। সেই কারণে মার্কের একমাত্র সন্তান ক্লারা ক্লিমেন্স তার বাবার শেষ বয়সের রচনাগুলো ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের আগে ছাপার অনুমতি দেননি।
মার্ক টোয়েন এর মৃত্যু: Mark Twain’s Death
মার্ক টোয়েন ১৮৯৬ খ্রিঃ ১৮ ই জুন ভারতবর্ষে এসেছিলেন। এই দেশের সৌন্দর্য, মানুষ, জীবনযাত্রা সবকিছু তাকে গভীরভাবে অভিভূত করেছিল। বালকের মুগ্ধতা নিয়ে মার্ক টোয়েন সারা ভারতবর্ষ ঘুরে বেড়িয়েছেন। তাঁর ভারত সম্পর্কে অভিজ্ঞতার বিবরণ রয়েছে Following the Equator (১৮৯৭ খ্রিঃ) পুস্তকে। ১৯১০ খ্রিঃ পঁচাত্তর বছর বয়সে এই লেখকের জীবনাবসান হয়।