কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় জীবনী: gksolve.in আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে Count Lev Nikolayevich Tolstoy Biography in Bengali. আপনারা যারা কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় এর জীবনী টি পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।
কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় কে ছিলেন? Who is Count Lev Nikolayevich Tolstoy?
তলস্তয় বা কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ তলস্তয় বা টলস্টয় বা টলষ্টয় বা ল্যেভ তলস্তোয় (Count Lev Nikolayevich Tolstoy) (9th সেপ্টেম্বর 1828 – 20th নভেম্বর 1910) ছিলেন রাশিয়ার সবচেয়ে প্রতিভাধর লেখক। কিন্তু তার প্রভাব আজ দেশের বাইরে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের শত্রু মোহনদাস গান্ধীও তাঁর শান্তিপূর্ণ অসহযোগের প্রেরণা পেয়েছিলেন তলস্তয়ের কাছ থেকেই।
কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় জীবনী – Count Lev Nikolayevich Tolstoy Biography in Bengali
নাম | কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় |
জন্ম | 9th সেপ্টেম্বর 1828 |
পিতা | কাউন্ট নিকোলাই ইলিচ টলস্টয় |
মাতা | কাউন্টেস মারিয়া তলস্তায়া |
জন্মস্থান | ইয়াসনায়া পলিয়ানা, তুলা গভর্নরেট, রাশিয়ান সাম্রাজ্য |
জাতীয়তা | রাশিয়ান |
পেশা | ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক |
মৃত্যু | 20th নভেম্বর 1910 (বয়স 82) |
কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় এর জন্ম: Count Lev Nikolayevich Tolstoy’s Birthday
কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় ১৮২৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।
কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় এর পিতামাতা ও জন্মস্থান: Count Lev Nikolayevich Tolstoy’s Parents And Birth Place
কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় রাশিয়ার সবচেয়ে প্রতিভাধর লেখক হলেন টলষ্টয়। কিন্তু তার প্রভাব আজ দেশের বাইরে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের দেশের মহাত্মা গান্ধীও তার শান্তিপূর্ণ অসহযােগের প্রেরণা পেয়েছিলেন টলষ্টয়ের কাছ থেকেই। রাশিয়ার সবচেয়ে অভিজাত এক জমিদার পরিবারে টলষ্টয়ের জন্ম হয়েছিল ১৮২৮ খ্রিঃ ৯ ই সেপ্টেম্বর।
তুলা প্রদেশের ইয়াসনারা পলিয়ানায় তাদের জমিদারী ছিল। সােনার চামচ মুখে নিয়েই তিনি একরকম জন্মেছিলেন, বেড়ে উঠেছিলেন সুখ – স্বাচ্ছন্দ্য আর আদর প্রশ্রয়ের মধ্যে।
কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় এর ছোটবেলা: Count Lev Nikolayevich Tolstoy’s Childhood
মাত্র নয় বছর বয়সেই টলষ্টয় তার বাবা ও মাকে হারান। ফলে তাকে ও তার ভাইবােনদের মানুষ হতে হয় পরিবারের অন্য আত্মীয় স্বজনের কাছে। তাতিয়ানা নামে তার এক খুড়িমা ছিলেন। স্বচ্ছল এবং বড় পরিবারের মানুষ হয়েও তিনি খুবই সরল জীবন যাপন করতেন। তার সরলতা ও ধর্মপ্রাণতা টলষ্টয়ের জীবনে সব চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছিল। এই প্রভাবই যৌবনের ভােগ সুখে মাতােয়ারা টলষ্টয়কে বারবার মনের নিভৃতে নিজেকে অন্তরের মুখখামুখি দাঁড় করিয়ে দিত।
কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় এর প্রথম জীবন: Count Lev Nikolayevich Tolstoy’s Early Life
জমিদার টলষ্টয় আত্মজিজ্ঞাসু মানব প্রেমিক টলষ্টয় হয়ে পৃথিবীর শ্রদ্ধা লাভ করেছিলেন। তথাকথিত জমিদার পরিবারের সদস্য হিসেবে যৌবনের উচ্ছলতা টলষ্টয়কে ভােগ সুখের মধ্যে মাতিয়ে রেখেছিল। রাজধানী পিটার্সবার্গে নানারকম সামাজিক মেলামেশা, তাস – দাবা, মদ্যপান আর ফুর্তি নিয়েই তিনি মজে থাকতেন। কিন্তু এই আমােদ – প্রমােদের মধ্যেও মাঝে মাঝেই যেন কেমন থমকে যেতেন তিনি। কেমন যেন মনে হতাে— এসব তিনি কি করছেন, জীবনের অপচয় ছাড়া এতাে আর কিছু নয়।
উচ্ছল প্রমােদের জীবন থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠত তার মন। কিন্তু আশ্চর্য যে এই ভাবনা – চিন্তা স্থায়ী হতাে না। কোন পরিকল্পনা সঙ্কল্পে রূপ নেবার আগেই ফের আনন্দ – ফুর্তির জোয়ারে গা ভাসিয়ে দিতেন। কিন্তু মনের ভেতরে সূক্ষ্মভাবে জেগে থাকত একটা অতৃপ্তির অসাচ্ছন্দ।
কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় এর কর্ম জীবন: Count Lev Nikolayevich Tolstoy’s Work Life
এই টানাপােড়েনের মধ্যেই জীবন এগিয়ে চলছিল। টলষ্টয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশােনা শেষ হল ১৮৫১ সালে। সেই সময়ে পারিবারিক জমিদারি দেখা শােনার জন্য তার উপস্থিতি জরুরি হয়ে পড়ল। টলষ্টয় কঠিন এক সমস্যার সম্মুখীন হলেন। পড়াশােনা শেষ হয়েছে। এখন হয় গ্রামে জমিদারিতে ফিরে যেতে হবে, নয়তাে অন্য ভাইকে সেই দায়িত্ব দিয়ে সরকারী চাকরিতে যােগ দিতে হবে। কি করবেন সেই সিদ্ধান্ত স্থির করবার আগেই এক অদ্ভুত কান্ড করে বসলেন টলষ্টয়।
তার এক ভাই, তার নাম নিকোলাস, সেনা বিভাগের অফিসার ছিল। তার সঙ্গে তিনি চলে গেলেন ককেশাস অঞ্চলে। সেখানে বিদ্রোহী তাতার উপজাতিদের সঙ্গে তখন জারের সেনাবাহিনীর প্রচন্ড লড়াই চলেছিল। টলষ্টয় স্বেচ্ছাসেবক হয়ে সরকারী সেনাবাহিনীর সহযােগিতার কাজে লেগে গেলেন। প্রায় বছরখানেক সেনাবাহিনীর সঙ্গে থেকে যুদ্ধক্ষেএ সম্বন্ধে বিচিত্র অভিজ্ঞতা লাভ হল। এই অভিজ্ঞতাই তাকে কলম তুলে নেবার প্রেরণা জোগাল।
কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় এর রচনা: Written by Count Lev Nikolayevich Tolstoy
পরের বছর তিনি “এরেইগ” নামে একটি বই লিখলেন। অল্প বয়সের লেখা হলেও বর্ণনার মাধুর্য পর্যবেক্ষণের গভীরতা এবং লেখকের বক্তব্যের অনাড়ম্বর তীক্ষ্ণতা বইটিতে স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছিল। বইটি বিদগ্ধ মহলে সমাদৃত হল। উৎসাহিত হয়ে টলষ্টয় এবারে একটি পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস রচনায় হাত দিলেন। “দ্য কসাকস” নামের এই উপন্যাসটি প্রকাশিত হল ১৮৬৩ খ্রিঃ।
এটি আত্মজীবনী মূলক লেখা না হলেও মূলতঃ সৈনিক জীবনের অভিজ্ঞতা উপলব্ধি ও আন্তর জিজ্ঞাসা এমন গভীর অনুভূতির সঙ্গে বিবৃত হয়েছে যে দেশের শিক্ষিত মহল বুঝতে পারল যে নতুন এক শক্তিশালী লেখকের আবির্ভাব হয়েছে।
বস্তুতঃ যুদ্ধের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, টলষ্টয়ের অন্তর্জগতে এক বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছিল। জীবন সম্পর্কে এক নতুন মূল্যবােধের সন্ধান পেলেন তিনি। এতকাল যে জীবন যাপন করেছেন তা যে প্রতিভা ও জীবনের সার্থকতার কঠিনতম অন্তরায় এই উপলব্ধি তাকে এক অজানা অতৃপ্তিতে পীড়ন করতে লাগল।
জীবন কেন ? তার সার্থকতা কোথায় ? থেকে থেকে এই জিজ্ঞাসাইমনকে নাড়া দিতে লাগল। বয়স যখন চব্বিশ হল, টলষ্টয় তার জিজ্ঞাসার উত্তর খুঁজে পেলেন। তিনি উপলব্ধি করলেন, জীবন আনন্দময়। আর এই আনন্দ রয়েছে হিংসায় নয়, রক্তপাতে নয়, রয়েছে ভালবাসায়। ভালবাসারই অপর নাম ধর্ম। এই ধর্মসাধনেই জীবনের সার্থকতা নিহিত।
স্বাভাবিক ভাবেই জীবনের লক্ষ স্থির হয়ে গেল তার। কিন্তু লক্ষ পুরনের জন্য কর্মক্ষেত্রে যে প্রস্তুতির আবশ্যক তা তার ছিল না। তাই লক্ষে সচেতনতা অবিচল রেখে চলল তার অপেক্ষার পালা।
সৈনিক দলের কাজে ইস্তফা দিয়ে টলষ্টয় কিছু কাল পিটার্স বার্গে বসবাস করলেন। পরে ১৮৫১ খ্রিঃ ইউরােপ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়লেন। মানুষের জীবনবােধ ও জীবনচর্যা সম্পর্কে অভিজ্ঞতার সঞ্চয় বৃদ্ধির সহায়ক হয়েছিল তার এই ভ্রমণ। ১৮৫৮ খ্রিঃ তিনি রাশিয়ায় ফিরে এলেন। দেশের নিরক্ষর দরিদ্র মানুষের জীবন সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লাভের অভিপ্রায় নিয়ে তিনি পৈতৃক জমিদারী দেখা শােনার কাজ শুরু করলেন। সেই সঙ্গে শুরু হল নিরলস সাহিত্যসাধনা।
টলষ্টয় এখন শতশত দরিদ্র প্রজার দভ মুন্ডের কর্তা। কিন্তু প্রজাদের অবস্থা দেখে নিজেই লজ্জিত হলেন। একদম পাশাপাশি দুটি জীবনধারা, একটিতে চরম ভােগ, অপরটিতে চরম বঞ্চনা আর হতাশা। জীবনের এই অসম প্রবাহ চলতে পারে না। অথচ বঞ্চিত জনের বঞ্চনা সম্পর্কে নেই উপলব্ধি। শিক্ষার অভাবেই এই চেতনা হীনতা। টলষ্টয় নিজের চেষ্টায় স্কুল স্থাপন করে ছেলে মেয়েদের শিক্ষা দিতে শুরু করলেন। শিক্ষা দেবার নতুন প্রণালীও তিনি উদ্ভাবন করলেন। আর এদিকে নিজে ত্যাগ করলেন ঐশ্বর্য আর বিলাসিতার জীবন। দরিদ্র কৃষকদের সঙ্গে নিজেও হয়ে গেলেন তাদেরই একজন।
কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় এর বিবাহ জীবন ও পরিবার: Count Lev Nikolayevich Tolstoy’s Marriage Life And Family
ইতিপূর্বে ১৮৬২ খ্রিঃটলষ্টয় বিয়ে করেছিলেন এক পরিচিত পরিবারের মেয়ে বেহরকে। তাদের বিবাহিত জীবনও সুখের হয়েছিল। বিবাহের পরে পরেই তিনি লিখতে শুরু করেছিলেন বিখ্যাত ‘ওয়ার অ্যান্ড পীস’ উপন্যাসটি। এই উপন্যাসেই টলষ্টয় প্রতিভার পূর্ণ বিকাশ ঘটেছিল। সাহিত্য সমালােচকদের মতে উপন্যাস সাহিত্যের ইতিহাসে ‘ওয়ার অ্যান্ড পীস’ পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস।
এদিকে তার জীবন চর্যায়ও ঘটে চলেছিল পরিবর্তন।দিনে দিনে তিনি কৃষকদের সঙ্গে মিশে তাদের মতই সাধারণ স্তরের জীবনযাত্রা শুরু করেছিলেন। এই সূত্রে স্ত্রীর সঙ্গেও শুরু হয়েছিল বাদানুবাদ। কিন্তু টলষ্টয় জীবন – সত্যের সন্ধান পেয়েছেন, কোন প্রতিকূলতাই তাকে লক্ষভ্রষ্ট করতে পারল না।
বর্তমান ভােগ সর্বস্ব সভ্যতার অন্তঃসার শূন্যতা ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ছিল। নিজের উপলব্ধি সাধারণকে বােঝাবার জন্য ছােট ছােট গল্প লিখতে লাগলেন টলষ্টয়। তার এই গল্পগুলাে জগতের সাহিত্যে অতুলনীয়। টলষ্টয় তার বিখ্যাত দ্বিতীয় উপন্যাস লেখা শুরু করলেন ১৮৭৩ খ্রিঃ। এই সময়ে তার ব্যক্তিগত জীবনেও একের পর এক বিপর্যয় ঘটতে লাগল। তার দুটি সন্তান মারা গেল। ছােটবেলার যে খুড়িমা ছিলেন তার পরম স্নেহময়ী অভিভাবিকা তাতিয়ানা, টলস্টয়ের জীবনের প্রভাব ছিল সবচেয়ে বেশি তিনিও মারা গেলেন। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে স্ত্রীও অসুস্থ হয়ে পড়লেন।
এর মধ্যেই আনা কারেনিনা প্রকাশিত হল এবং অসাধারণ উপন্যাস রূপে স্বীকৃতি লাভ করল। এই উপন্যাসে নর নারীর মানসিক সম্পর্কও বৈচিত্র্য নিয়ে টলষ্টয়ের যেসুগভীর জ্ঞানের পরিচয় প্রকাশিত হল কেবল শেক্সপীয়র ছাড়া আর কেউ সেই জ্ঞানের পরিচয় দিতে পারেননি।
যতই বয়স বাড়তে থাকে ততই তার ধারণা হতে থাকে যে সর্ব – ত্যাগের আদর্শ তিনি প্রচার করছেন সাহিত্যে, নিজের জীবনে তিনি তাকে পূর্ণমাত্রায় রূপায়িত করতে পারছেন না। এই অন্তর্দ্বন্দ্বে ক্ষত বিক্ষত হতে হতেই তিনি একে একে রচনা করলেন দ্য পাওয়ার অব ডার্কনেস এবং ক্রুয়েটজার সােনাটা। পরে পরেই রচনা করলেন দ্য রেজারেকশান নামের সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাসটি। এই বইতে তিনি মানব জাতির ভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেছেন।
টলষ্টয় নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি থেকে যেসব উপন্যাস রচনা করেছেন তার মধ্যে ওয়ার অ্যান্ড পীস, আনা কারেনি না এবং দ্য রিজারেকশান- এই তিনটি আজ জগতের ক্লাসিকরূপে পরিগণিত। চরম মানসিক অতৃপ্তিতে ভুগছিলেন টলষ্টয়। ঘরের বন্ধন, প্রেম – ভালবাসা সবই বাধা বলে মনে হচ্ছিল নিজের সঙ্কল্প পূরণের পথে।
কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় এর মৃত্যু: Count Lev Nikolayevich Tolstoy’s Death
কৃষকদের বেশভূষায় কৃষকদের মত জীবন যাত্রায় আরও বেশি করে একাত্ম হতে পারছেন না। সাধারণ মানুষের প্রতিদিনের দুঃখশােকের অংশীদার হতে পারছেন না। ঈশ্বরপ্রেম মানব প্রেমের পূর্ণতায় সার্থক করে তুলতে পারছেন না এই ছিল দ্বন্দ্ব। এই নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গেও দীর্ঘস্থায়ী প্রেমের পরিসমাপ্তি ঘটল। শেষ পর্যন্ত বিরাশি বছর বয়সে একদিন শীতের রাতে সামান্য দরিদ্র লােকের পােশাকে টলষ্টয় ঘরের আশ্রয় ত্যাগ করে পথে বেরিয়ে পড়লেন। এই পথই হল তার শেষ আশ্রয়স্থল। যেই ট্রেনে চড়েছিলেন, সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তার এগার দিন পরে চিরতরে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন ১৯১০ খ্রিঃ ৭ নভেম্বর।
বিশ্বমানবতার স্বার্থেই মানসিক দ্বন্দ্বের শিকার হয়েছিলেন টলষ্টয়। পত্নীর ভালবাসাহীন রূঢ় ব্যবহার তার বার্ধক্যের দিনগুলােকে বিষময় করে তুলেছিল। তবুও তিনি নিজের লক্ষে ছিলেন স্থির। এই মহামনীষীর বেদনার্ত জীবনের পরিসমাপ্তি শুধু রাশিয়ার নয়, সমগ্র মানবজাতির বেদনাপূর্ণ স্মৃতি হয়ে রয়েছে।