বৈপরীত্য উষ্ণতা বলতে কী বোঝো?: সাধারণ ভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা হ্রাস পেতে থাকে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রতি 1000 মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা 6.4°C সেন্টিগ্রেড হারে হ্রাস পায়। একে উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার বলে। কিন্তু অনেক সময় উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা হ্রাস না পেয়ে বৃদ্ধি পায়। উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধির এই ঘটনাকে বৈপরীত্য উষ্ণতা বলে।
শীতল পার্বত্য অঞ্চলে রাত্রিবেলায় আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে পার্বত্য ঢালের উপরের অংশের বায়ু দ্রুত তাপ বিকিরণ করে শীতল ও ভারী হয়ে পড়ে এবং পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে ওই শীতল ও ভারী বায়ু পর্বতের ঢাল বরাবর উপত্যকায় নেমে আসে। এই রূপ রাত্রিকালীন নিম্নমুখী শীতল বায়ুপ্রবাহকে ক্যাটাবেটিক বায়ু বলে। এই বায়ু উপত্যকার উষ্ণ বায়ুকে ঠেলে উপরের দিকে তুলে দেয় এবং উপত্যকার উষ্ণ বায়ুর স্থান দখল করে। ফলে উপত্যকার বায়ু শীতল এবং ওপরের অংশের বায়ু উষ্ণ হয়। এইভাবে বৈপরীত্য উষ্ণতা সৃষ্টি হয়।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, শীতল পার্বত্য অঞ্চলে দিনের বেলায় সূর্য কিরণের প্রভাবে পার্বত্য উপত্যকা উত্তপ্ত হওয়ার ফলে উপত্যকার বায়ু উষ্ণ ও হালকা হয়ে পরিচলন পদ্ধতিতে পর্বতের ঢাল বরাবর উপরের দিকে উঠতে থাকে। এইরূপ দিবাকালীন ঊর্ধ্বমুখী উষ্ণ বায়ু প্রবাহকে অ্যানাবেটিক বায়ু বলে।