ইকো সিটি বা বাস্তু শহর বলতে কী বোঝ?: শহর, নগর বা নগরী বলতে সাধারণত এমন একটি ঘনবসতিপূর্ণ বৃহৎ পৌর এলাকাকে বোঝায়, যেটি পারিপার্শ্বিক অঞ্চলের একটি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে ও সেখানকার অধিবাসীদের জন্য বিশেষায়িত সেবা প্রদান করে থাকে। কোনও পৌরবসতির জনসংখ্যার আকার বা এর এলাকার আয়তন ন্যূনতম কতটুকু হলে সেটিকে শহর বলা যায়, এ ব্যাপারে কোনও বিশ্বব্যাপী ঐকমত্যভিত্তিক সংজ্ঞা নেই।
ইকো সিটি বা বাস্তু শহর হলো এমন একটি শহর যা প্রধানত পরিবেশের মধ্যে বসবাসের নীতিকে অনুসরন করে গড়ে তোলা হয়। ইকো শহর গুলোর চূড়ান্ত লক্ষ্য হল শক্তি উৎপাদনে পূনর্নবীকরন সম্পদ ব্যবহারের কার্বন নির্গমন একেবারে বন্ধ করা এবং পরিবেশ কে শহরে অন্তর্ভুক্ত করা। ইকো সিটির অন্যান্য প্রধান উদ্দেশ্য গুলি হল – অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটানো, দারিদ্রতা হ্রাস, শহর গুলি ভবিষ্যৎ উচ্চ জনঘনত্বের উপযোগী করে তোলা, উন্মুক্ত স্থান, উচ্চ দক্ষতা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ।
রিচার্ড রেজিস্টার প্রথম ১৯৭৫ সালে বার্কলে, ক্যালিফোর্নিয়ায় ইকো সিটি ধারণা টি প্রদান করেন। ইকোসিটি সম্বন্ধীয় সম্মেলন প্রথম আয়োজিত হয় বার্কলি, ক্যালিফোর্নিয়ায় ১৯৯০ সালে।
ইকোসিটির বৈশিষ্ট্য সমূহ
একটি আদর্শ ইকো সিটির নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য গুলি বিদ্যমান থাকে-
১. নিজস্ব অর্থনীতির দ্বারা পরিচালিত হয়। প্রয়োজনীয় সম্পদ গুলি স্থানীয় ভাবে পাওয়া যায়।
২. সম্পূর্ন ভাবে কার্বন নিরপেক্ষ শহর এবং পরিবেশ বান্ধব শক্তি নির্ভর।
৩. যানবাহনের জন্য বিছিন্ন লেন সহ একটি সুপরিকল্পিত নগর বিন্যাস ও গনপরিবহন ব্যবস্থা থাকবে।
৪. শহর এলাকায় পরিবেশের ক্ষতি সাধন কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ।
৫. সকল ধর্ম, জাতি, অর্থনৈতিক শ্রেণীর মানুসের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের বাড়ির ব্যবস্থা।
৬. সম্পদের সংরক্ষণ তথা জল ও শক্তি সম্পদের পরিপূর্ন ও যথাযথ ব্যবহার।
৭. পরিবেশ ও জলদূষণের পরিমান হবে খুবই নগন্য।
৮. ইকো শহরের বাড়ির ছাদে সবুজ উদ্ভিদের উপস্থিতি ।
৯. সরল সাধারন জীবন যাপন কে গুরুত্ব দান।
১০. পরিবেশ শিক্ষা ও পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতার প্রসার ঘটানো ।
ইকো সিটি ওঠা টেকসই সিটির উদাহরণ – অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ও অ্যাডিলেড, কানাডার অ্যালবার্টা ও কাল্গারি, জার্মানির ফ্রেইবার্গ, আবু ধাবির মাসদার সিটি, স্পেনের বিলবাও প্রভৃতি শহর।