মানবদেহের বিভিন্ন রোগ ও রোগাক্রান্ত অঙ্গ: রোগ/ব্যাধি/অসুস্থতা হল কোন জীবের দেহের (বা মনের) কোনো অস্বাভাবিকতা, অক্ষমতা বা স্বাস্থ্যহানি। রোগের বীপরীত বা সুস্বাস্থ্য মানে শুধু নির্দিষ্ট কোন রোগের অভাবই নয়, বরং নীরোগ অটুট ভাল স্বাস্থ্যের সঙ্গে উৎকৃষ্ট জীবনযাপনের অন্য সব উপাদান (যেমন আনন্দময় কর্মসংস্থান, মনঃসংযোগ ইত্যাদি যেগুলিকে কোয়ালিটি অফ লাইফ বা জীবন উৎকর্ষের মাত্রা দ্বারা পরিমাপের চেষ্টা হয়েছে) নিয়েই সুস্বাস্থ্য।
যে ব্যক্তি বা জীব রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে সে হল রোগী বা অসুস্থ। চিকিৎসা শাস্ত্রে নানা রোগের, বাহ্যিক উপসর্গ বা সিম্প্টম এবং রোগ নির্ধারণের লক্ষণ বা সাইন ইত্যাদি দ্বারা রোগ নির্ণয় বা ডায়াগনোসিস, রোগের উৎপত্তির কারণ বা ইটিওলজি, রোগের দ্বারা সংঘটিত দেহবিকার বা প্যাথলজি, রোগনিরাময় বা ট্রিটমেন্ট, ও সুস্থ মানুষের রোগ হওয়া থেকে পরিত্রাণের উপায় বা প্রোফাইল্যাক্সিস, রোগ প্রতিরোধ ইত্যাদি চর্চা হয়ে থাকে। যখন কোন বিশেষ রোগের উপসর্গ কেবল মৃদু, পুরোমাত্রায় হয়নি বা সব উপসর্গের প্রকোপ পূর্ণাঙ্গ মাত্রায় প্রকাশিত হয়নি তখন এই অবস্থাকে বলে সাবক্লিনিকাল রোগ বা ডিজিজ। কোন রোগের কারণ হতে পারে শরীরের বাইরে থেকে আসা সংক্রামক কীটাণু/বীজাণু/জীবাণু অথবা শরীরের ভিতরের কোন কিছুর অভাব (যেমনঃ ভিটামিনের অভাব, ইমিউনিটির অভাব বা ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি) অথবা অসংগতি (যেমনঃ অতিপ্রতিক্রিয়া (অ্যালার্জি) বা অস্বাভাবিকতা যেমন অটোইমিউন রোগ (যাতে আমাদের নিজেদের ইমিউনিটি বা অনাক্রম্যতা আমাদেরই শরীরের কোন অংশকে আক্রমণ করে) ইত্যাদি।
রোগ বা অসুস্থতা ব্যাপ্ত অর্থে যে কোন শারীরিক অসুবিধা, বেদনা, দুঃখ বা দুস্থতা বোঝাতে পারে। এই ব্যাপ্ত অর্থের মধ্যে কখোনো কখোনো চোট, আঘাত, পঙ্গুত্ব, বিকলাঙ্গতা, নানা সিনড্রোম, সংক্রমণ, রোগ ব্যতিরেকে কেবল মৃদু উপসর্গ (যেমন সাব ক্লিনিকাল ডিজিজ), অস্বাভাবিক ব্যবহার, অঙ্গসংস্থানিক গাঠনিক পরিবর্তন বা শারীরবৃত্তীয় অস্বাভাবিকতা ইত্যাদিকেও কোনরকম রোগ বলে গণ্য করা যেতে পারে। শারিরীক ছাড়াও মনন, অনুভূতি, ব্যক্তিত্ব ও জীবনযাপনের অনেক কিছুর অসংগতিকেও এর আওতায় ফেলা যেতে পারে। রোগজনিত মৃত্যুকে প্রাকৃতিক কারণ ঘটিত মৃত্যু বলা হয়।
বিভিন্ন রোগ ও আক্রান্ত অঙ্গ
নং | রোগের নাম | আক্রান্ত অঙ্গ |
---|---|---|
১ | অ্যাজমা | ফুসফুস |
২ | আর্থারাইটিস | হাড়ের সংযোগস্থল |
৩ | আলসার | পাকস্থলী |
৪ | একজিমা | ত্বক |
৫ | ওটাইটিস | কান |
৬ | কংজাভাইটিস | চোখ |
৭ | কার্ডাইটিস | হৃদপিন্ড |
৮ | কুষ্ঠ | ত্বক |
৯ | কোভিড-১৯ | ফুসফুস |
১০ | ক্যাটারাক্ট | চোখ |
১১ | গয়টার বা গলগন্ড | গলা |
১২ | গ্যাস্ট্রিক | পাকস্থলী |
১৩ | গ্লুকোমা | চোখ |
১৪ | গ্লোসিটিস | জিভ |
১৫ | জন্ডিস | যকৃত |
১৬ | টনসিলাইটিস | গলা |
১৭ | টাইফয়েড | অন্ত্র |
১৮ | টিউবারকিউলোসিস বা যক্ষ্মা | ফুসফুস |
১৯ | ট্রাকোমা | চোখ |
২০ | ডায়াবেটিস | অগ্নাশয়, রক্ত |
২১ | ডিপথেরিয়া | গলা |
২২ | নিউমোনিয়া | ফুসফুস |
২৩ | পাইরিয়া | দাঁত ও মাড়ি |
২৪ | পোলিও | পা |
২৫ | প্যারালাইসিস | স্নায়ুতন্ত্র |
২৬ | প্লিউরাইসি | ফুসফুস |
২৭ | ব্রঙ্কাইটিস | ফুসফুস |
২৮ | মায়োপিয়া | চোখ |
২৯ | মেনিনজাইটিস | মস্তিষ্ক |
৩০ | ম্যালেরিয়া | প্লীহা |
৩১ | রিউম্যাটিজম | অস্থি সন্ধি |
৩২ | রিকেট | অস্থি বা হাড় |
৩৩ | লিউকোমিয়া | রক্ত |
৩৪ | সাইনুসাইটিস | মুখের হাড় |
৩৫ | স্কার্ভি | দাঁত |
৩৬ | হিমোফিলিয়া | রক্ত |
৩৭ | হেপাটাইটিস | যকৃত |