নিবিড় কৃষির বৈশিষ্ট্য: পৃথিবীর যে সব দেশে কৃষিজমির তুলনায় লোকসংখ্যার পরিমান বেশি সেই সমস্ত দেশে অধিক শ্রম ও মূলধন বিনিয়োগ করে সর্বাধিক ফসল উৎপাদনের যে কৌশল অবলম্বন করা হয়, তাকে নিবিড় কৃষি বলে। এই কৃষিতে মূলত জীবনধারনের জন্য খাদ্যশস্য উৎপাদন করা হয়।
নিবিড় কৃষির বৈশিষ্ট্য গুলি হল
- জলবায়ু – এই নিবিড় কৃষি দক্ষিন ও দক্ষিন – পূর্ব এশিয়ার উষ্ণ ও আর্দ্র ক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলে দেশ গুলিতে দেখা যায়।
- ক্ষুদ্রায়তন কৃষিজোত – জমির ওপর জনসংখ্যার প্রবল চাপ থাকায় কৃষিজোত গুলি বংশানুক্রমিক ভাবে ভাগ হতে হতে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর কৃষিজোতে পরিনত হয়েছে।
- শ্রম নির্ভরতা – জমি তৈরি, চারাগাছ রক্ষনাবেক্ষন, সার প্রয়োগ, ফসল কাঁটা প্রভৃতি কাজে প্রধানত পশুশক্তি ও মানুষের দৈহিক শক্তির ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
- বহুফসলী কৃষি ব্যবস্থা – সারা বছর ধরে সার ও জলসেচ ব্যবস্থার বিকাশের মাধ্যমে একই জমিতে বছরে দুই থেকে তিনবার ফসল ফলানো হয়ে থাকে।
- আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার – জৈব সার, রাসায়নিক সার, উচ্চফলনশীল বীজ ও জলসেচ ব্যবস্থার বিকাশ ঘটিয়ে এখানে অত্যন্ত নিবিড় পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করা হয় বলে প্রচুর পরিমানে ফসল উৎপাদিত হয়।
- উৎপন্ন ফসল – খাদ্যশস্যের চাহিদা প্রচুর থাকায় এই নিবিড় কৃষি ব্যবস্থায় খাদ্যশস্য হিসাবে প্রচুর পরিমানে ধান চাষ করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ ধান হচ্ছে নিবিড় কৃষির অন্যতম প্রধান ফসল ।
- উৎপাদনের পরিমান – এই কৃষিতে হেক্টর প্রতি উৎপাদনের পরিমান অনেক বেশি কিন্তু অধিক জনসংখ্যার কারণে মাথাপিছু উৎপাদনের পরিমান অনেক কম।
- জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক চরিত্র – অত্যাধিক জনসংখ্যার জন্য খাদ্যশস্যের চাহিদা প্রচুর, তাই কৃষক রা সাধারনত খাদ্যশস্য উৎপাদনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
- উদ্বৃত্ত ফসল – অধিক জনসংখ্যার কারণে যে পরিমান ফসল উৎপাদিত হয় তার বেশির ভাগটাই খাদ্যের চাহিদা মেটাতে ব্যবহার করা হয় বলে উদ্বৃত্ত ফসল থাকে না বললেই চলে । ফলে এই কৃষি বানিজ্যিক ভিত্তিক নয়।