দক্ষিণ ভারতের পশ্চিম বাহিনী নদীগুলির মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি কেন? | নর্মদা ও তাপ্তি নদীর মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি কেন?
নর্মদা ও তাপ্তি নদীর মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি কেন?
সাতপুরা ও বিন্ধ্য পর্বতের দক্ষিণাংশের নদীগোষ্ঠীকে একত্রে দক্ষিণ ভারতের নদী বলা হয়। এই দক্ষিণ ভারতের নদী গুলির মধ্যে মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী প্রভৃতি পূর্ব বাহিনী নদীর মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টি হলেও নর্মদা, তাপ্তি, সবরমতী, মাহি প্রভৃতি পশ্চিম বাহিনী নদীগুলির মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি। এর কারণগুলি হল-
১)স্বল্পদৈর্ঘ্য: দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ পশ্চিম বাহিনী নদীর দৈর্ঘ্য অপেক্ষাকৃত কম। তাই নদীগুলিতে নদীবাহিত পলির পরিমাণও কম, যা বদ্বীপ গঠনের জন্য পর্যাপ্ত নয়।
২)খরস্রোত: দক্ষিণ ভারতের পশ্চিম বাহিনী নদীগুলি বিশেষত নর্মদা ও তাপ্তি সংকীর্ণ গ্রস্ত উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে মোহনার কাছেও নদীগুলি বেশ খরস্রোতা। তাই এখানকার নদীগুলির মোহনায় পলি সঞ্চিত হয়ে বদ্বীপ গঠনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয় না।
৩)স্বল্প ক্ষয়কার্য : দক্ষিণ ভারতের পশ্চিম বাহিনী নদীগুলি কঠিন আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলা গঠিত অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে এগুলির ক্ষয়কার্য কম হয়। ফলে নদীতে পলির পরিমাণ কম থাকে। তাই বদ্বীপ সৃষ্টি হতে পারে না।
৪)উপনদীর সংখ্যা: দক্ষিণ ভারতের পশ্চিম বাহিনী নদীগুলির উপনদীর সংখ্যা কম বলেও এখানকার প্রধান নদীগুলিতে নদীবাহিত পলি ও বালির পরিমাণ কম। তাই বদ্বীপ গঠনের জন্য পলির অভাব দেখা যায়।
৫)গভীর উপকূল: দক্ষিণ ভারতের পশ্চিম বাহিনী নদীগুলি মোহনার কাছে অত্যন্ত খাড়াই ঢালে এসে সমুদ্রে মিলিত হয়েছে। এছাড়া এই নদী গুলির মোহনার কাছে সমুদ্র উপকূলের গভীরতাও খুব বেশি। এই খাড়া ঢালযুক্ত ও গভীর উপকূলে পলি সঞ্চিত হতে পারে না বলে বদ্বীপ সৃষ্টি হতে পারেনি।
৬)অন্যান্য কারণ: উপরিলিখিত বিষয়গুলি ছাড়াও নদীগুলির মোহনা অংশে জোয়ারের তীব্রতা, নদী গুলির গতিপথে জলপ্রপাতের অবস্থান ইত্যাদি বিষয়গুলিও দক্ষিণ ভারতের পশ্চিম বাহিনী নদীগুলির মোহনায় বদ্বীপ গঠনের পক্ষে অন্তরায়।